August 2, 2025

বোটানিকল গার্ডেন্স থেকে উধাও প্রাচীন শ্বেত চন্দন গাছ

 বোটানিকল গার্ডেন্স থেকে উধাও প্রাচীন শ্বেত চন্দন গাছ

পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় শতাব্দী প্রাচীন বোটানিক্যাল গার্ডেন্স থেকে দুষ্প্রাপ্য শ্বেত চন্দন গাছ চুরির অভিযোগ উঠল। কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রকের পরিচালনাধীন এই বিশাল মাঠ থেকে কি করে শ্বেত চন্দনের মতো একটি দামি গাছ চুরি গেল তাই নিয়ে ওই গার্ডেন্সের মর্নিং ওয়াকার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে হাওড়া সিটি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় সরকারের বন মন্ত্রকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেননি
বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। ঘটনার সূত্রপাত আমফান ঝড়ের পরেই প্রাতঃভ্রমণকারীদের অভিযোগ শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের ১ নম্বর নার্সারির মধ্যে ১০০ বছরের পুরানো একটি দুষ্প্রাপ্য সাদা চন্দন গাছ ছিল। আমফান ঘূর্ণিঝড়ের
সময় ওই চন্দন গাছটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গাছের ওপরের অংশের ডাল ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই গাছটি ক্রমাগত শুকিয়ে যেতে থাকে। আর এরপর কয়েক দিন ধরেই ওই গাছটিকে আর দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। গার্ডেনের
প্রাতঃভ্রমণকারী ও কলকাতা উচ্চ আদালতের আইনজীবী স্মরজিৎ রায়
চৌধুরীর অভিযোগ, বোটানিক্যাল গার্ডেন্স কর্তৃপক্ষের মদতেই কোটি টাকা মূল্যের চন্দন গাছটিকে কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় গাছটি কাটার পর তার শিকড়
সমেত তুলে নেওয়া হয়েছে এবং ওই
জায়গায় সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া
হয়। তাদের অভিযোগ যদি আইনি
পদ্ধতি মেনে গাছটিকে বিক্রির প্রক্রিয়া করা হয় তাহলে সেই সংক্রান্ত কোনও টেন্ডার কেন ডাকা হল না । পাশাপাশি তাদের আরও অভিযোগ এর আগে একটি দামি এবং দুষ্প্রাপ্য মেহগনি গাছ একই কায়দায় কেটে
বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই নিয়ে হাওড়া আদালতে এখনও মামলা চলছে। তাই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে গার্ডেন্স কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রক, বোটানিকাল সার্ভে অফ
ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর এবং হাওড়া সিটি পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয় এ ব্যাপারে তারা শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে
সিবিআই তদন্তের দাবি করবেন। কেন্দ্রীয় বন আইন ১৯২৭ অনুসারে, শ্বেত চন্দন গাছ কাটা
তাকে বিক্রি করা অথবা তাকে পাচার করা আইনত দণ্ডনীয়। একইভাবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের আইনেও বলা হয়েছে,; শ্বেত চন্দন একটি বিলুপ্তপ্রায় গাছ। তাই এই গাছের সংরক্ষণের জন্যই গাছকে কাটা বা গাছকে বিক্রি করা
যায় না। এদিকে চন্দন গাছ চুরি নিয়ে হইচই শুরু হতেই গার্ডেন কর্তৃপক্ষ গেটে একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেয়। তাতে বলা হয়েছে কেউ ফুল, গাছের ক্ষতি বা বাগানের ক্ষতি করলে মোটা অংকের টাকা জরিমানা দিতে হবে।
শুধু তাই নয় ভিডিওগ্রাফি করলে এক হাজার টাকা জরিমানা। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ কার নির্দেশ এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে সেখানে কোনও
আধিকারীকের কোনও সই নেই। সাধারণ প্রাতঃভ্রমণকারীরা এটিকে ভালো উদ্যোগ বলে মনে করলেও অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি তাপস দাস মনে করছেন তারা যাতে কোনও কিছু ছবি তুলতে না পারেন সেই
কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাগানের মধ্যে গাছ চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য এসব করা হচ্ছে।

—-সন্দীপ বসু

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *