August 3, 2025

মা, বোন সহ ৪ জনকে খুন করল নাবালক!!

 মা, বোন সহ ৪ জনকে খুন করল নাবালক!!

নাবালক ছেলে মর্মান্তিকভাবে খুন করেছে চারজনকে। ঘটনা ঘটেছে কমলপুর থানার অন্তর্গত দুরাই শিববাড়ি পঞ্চায়েতের দুই নম্বর ওয়ার্ডে। অভিযুক্ত নবম শ্রেণীর ছাত্র । ঘটনা ঘটেছে পাঁচ নভেম্বর বিকাল তিনটার পর বাস চালক হারাধন দেবনাথের বাড়িতে। নিহতরা হলেন সম্ভাব্য খুনির মা শমিতা দেবনাথ (৩৫), ছোট বোন সুপর্ণা (১০), দাদু বাদল দেবনাথ (৭০) ও প্রতিবেশী রেখা দেব (৪৫)। ঘটনা সম্পর্কে গ্রামের জনৈক বাসিন্দা রবিবার সকালে এই প্রতিনিধিকে জানান, পাঁচ নভেম্বর বিকালে তিনি নিজের জমিতে কাজ করছিলেন তখন কিছু দূরে অবস্থিত হারাধন দেবনাথের বাড়ি থেকে কিছু শব্দ ভেসে আসে। একটি বাচ্চা মেয়ের কান্নাও শোনেন, গানও ভেসে আসে । কিন্তু তিনি কোনও গুরুত্ব দেননি। বাড়ি চলে যান। তবে সন্ধ্যার পর গুঞ্জন শুরু হয়। কারণ কেউ কেউ ঘরের উঠানে কেউ পড়ে আছে দেখতে পান। একজন মোবাইলে খবর দেন হারাধন দেবনাথকে। শ্রীদেবনাথ কমলপুর থানায় খবর দেন। কমলপুর থানা থেকে রাত দশটা নাগাদ পুলিশ যায়। গিয়ে স্তম্ভিত সবাই ! বাড়িতে কেউ নেই। ঘরের স্বল্প দূরে পড়ে আছে জনৈকা রেখা দেবের মৃতদেহ। ঘরে রক্তের ছাপ। একটি রক্তমাখা কুড়ুল। বাড়ির পিছনের গর্তে তিনটি মৃতদেহ। গৃহস্বামীর স্ত্রী, মেয়ে ও কাকা। গৃহস্বামীর নাবালক ছেলে ঘরে নেই। রবিবার ভোরে মৃতদেহগুলি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়। সন্দেহ করা হচ্ছে, নাবালক সন্তানই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়েছে। এসপি রমেশ যাদব জানিয়েছেন, রবিবার সকালে হালাহালী বাজার থেকে নাবালক ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকার লোকজন জানান, রেখা দেব অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী। অবিবাহিতা এই মহিলা কাজ থেকে ফেরার পর জল খাওয়ার জন্য হারাধনবাবুর বাড়িতে যান। গ্রামের কেউ কেউ নিষেধ করেছিলেন যেতে। কারণ ওই বাড়িতে কিছু অঘটন ঘটেছে বলে মনে হয়। এরপরও তিনি যান। গিয়ে খুন হন। গ্রামের একাধিক লোক জানান, হারাধনবাবুর এই নাবালক ছেলে পাবজি খেলতো। টাকা নিয়ে দরবার ছিল বাবার সাথে। সম্প্রতি বাবার চল্লিশ হাজার টাকা নষ্ট করেছিল। সে নেশাও করতো বলে কেউ কেউ জানান। নাবালকের অপর এক দাদু স্বল্প দূরে থাকেন। তিনি নিরঞ্জন দেবনাথ। তিনি জানান, বিকালে গোলমাল হচ্ছে মনে হয় তার। তিনি হারাধনের বাড়ির কাছে যান। দেখেন নাবালক ছেলেটি টেপে গান চালিয়ে নাচছে। দাদুকে সে জানায়, কোনও গোলমাল হয়নি। মা বোনকে মেরেছিল। তাই সে কান্নাকাটি করেছিল। দাদু ফিরে আসেন। এসপি রমেশ যাদব জানান, নাবালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ড মহকুমায় আলোড়ন তুলেছে। চারটি হত্যাকাণ্ড অস্বাভাবিক ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। মহকুমায় এই ধরনের ঘটনা প্রথম বলে জানা গেছে। তাও হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে একটি মাত্র নাম উঠে এসেছে। গ্রেপ্তার হয়েছে পরিবারের নাবালক সদস্য। আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন এক নাবালকের পক্ষে ঠাণ্ডা মাথায় এতগুলি খুন করা কি সম্ভব? কমলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দুরাই শিববাড়ি পঞ্চায়েতে স্মরণাতীতকালের মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেনি। তাই এই চার খুনের ঘটনায় মানুষ স্তম্ভিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *