ঘর ভাঙছে বিজেপির,পাহাড়ে একটিই রাজনৈতিক দল থাকবে ‘তিপ্রা মথা’: প্রদ্যোত!!
গণতন্ত্রবিরোধী প্রচেষ্টা!!
দুনিয়ার অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন।এর আগেও বহুবার পুতিন ভারতে এসেছেন। কিন্তু এবারের ভারত সফরে পুতিন এক বিতর্কেরও জন্ম দিয়ে গেছেন। পুতিনের বিমান যেদিন পালামের মাটি ছুঁয়ে ছিল সেসময় প্রটোকল ভেঙে প্রধানমন্ত্রী মোদি গিয়েছিলেন তাকে স্বাগত জানাতে। কিন্তু পুতিনির সাথে এবারের সফরে ভারতের লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি..এই বিতর্ক এবার পেছনে ছেড়ে গিয়েছেন পুতিন। সাধারণত কোনো দেশে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা এলে বিভিন্ন প্রতিনিধিমূলক বৈঠক হয়। দেখা করেন রাষ্ট্রপতি বিরোধী দলনেতা তাদের সাথেও। কিন্তু মোদী সরকার এবার এই প্রটোকল ভেঙে দিয়েছেন। রাহুল গান্ধীর সাথে এবার রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎ হয়নি। বলা ভাল, সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু প্রচার হচ্ছে উল্টো। প্রচার হচ্ছে যে, পুতিনের ব্যস্ততার জন্য তার সময় হয়নি। ২০০০ সালে পুতিন যখন এ দেশে এসেছিলেন সেসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী। সেসময় বিরোধী দলনেতা ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। কেন্দ্রে ক্ষমতার পালাবদলের পর পুতিন ফের ভারতে আসেন। সেসময় প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। বিরোধী দলনেতা সুষমা স্বরাজ। সুষমা স্বরাজের সাথে পুতিনের বৈঠক হয়। কিন্তু এবারই প্রথম লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সাথে পুতিনের সাক্ষাতের সুযোগদেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারই তা করতে দেয়নি। শুধু তাই নয়, রাহুল গান্ধী সংসদের বাইরে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর বিজেপি তথা সরকারের প্রচার যন্ত্রের তরফে পুতিনের ভারত সফরের সময়ই উল্টো রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করা হয়। কিন্তু মোদিজির প্রচারযন্ত্রে ট্রাম্প পাকিস্তানের সেনা প্রধান মুনির হককে রাহুল গান্ধীকে এক পংক্তিতে রাখা হয়। রাহুল গান্ধী তো অন্যায় বা অন্যান্য কিছু দাবি করেন নি। তিনি বলেছেন, সরকার হয়তো অনিশ্চয়তায় ভুগছে, তাই আমার সাথে পুতিনকে দেখা করতে বা বৈঠকে বসতে দেওয়া হয়নি।কোনো বিদেশী রাষ্ট্র প্রধান দেশে এলে বিরোধী দলনেতার সাথেও সাক্ষাৎকার হয়। এটা দীর্ঘদিনের রীতি। বিশেষ করে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে তো এটা একটা শিষ্ঠাচার, সংস্কৃতিও বটে। বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা একটা শিক্ষা নিয়ে ফেরেন যে, ভারতের গণতন্ত্র কতটা শক্তিশালী, এখানে শাসক, বিরোধী সবার কথা শোনার সুযোগ দেওয়া হয়। কিছু সিস্টেম বর্তমানে ২০১৪ সালের পর থেকে ‘নিউ ইন্ডিয়া’ রাজ চলছে। এই ‘নিউ ইন্ডিয়া’তে ‘এ’ সংস্কৃতি চলে না।
শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি ভবনে পুতিনের সম্মানে যে ভোজ দেওয়া হয় তাতেও আমন্ত্রিত ছিলেন না দেশের প্রধান বিরোধী দলের কোন নেতা। লোকসভার বিরোধী দলনেতা কিংবা রাজ্য সভার বিরোধী দলনেতা প্রমুখ। কিন্তু কায়দা করে কেন্দ্রীয় সরকার কংগ্রেসের বর্তমানে ‘বিদ্রোহী’ নেতা শশী থারুরকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ভোজ সভায়। এবং শশী থারুর সেই ভোজসভায় হাজিরও ছিলেন।
কংগ্রেস দলের কোন নেতা যান নি, লোকসভার বিরোধী দলের নেতা আমন্ত্রণ পাননি। কিন্তু আমন্ত্রণ পেয়ে যায় কংগ্রেস সংসদ শশীথারুর। বলা হচ্ছে শশী থারুর পার্লামেন্টের বিদেশ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। যদি শশী থারুরের এহেন কাজে কংগ্রেস বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এর আগেই শশী থারুর একাধিকবার পার্টি লাইন বিরোধী কাজ করেছেন। এবং বিজেপি তথা সরকার তারে বারবার উৎসাহিত করেছে এ নিয়ে। মুখে গণতন্ত্রের বড় বড় বুলি আওড়ান বিজেপি নেতারা। সরকারের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী থেকে অন্যান্য মন্ত্রীরাও মুখে মুখে গণতন্ত্র, সংবিধানের পাঠ পড়ান দেশবাসীকে। কিন্তু কাজের বেলায় উল্টো। রাহুল গান্ধীকে পুতিনের সাথে দেখা করতে না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে গণতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছে তা ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে। কে বলতে পারে, আজকের শাসকের সাথেও ভবিষ্যতেও এ ধরনের ব্যবহার হতে পারে।