সাংবাদিকতা শুধুই পেশা নয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও : মুখ্যমন্ত্রী!!
সাংবাদিকতা শুধুই পেশা নয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও : মুখ্যমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি বজায় রাখাই সাংবাদিকদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। কারণ তারা সমাজের দর্পণ হিসাবে কাজ করেন। ন্যাশনাল প্রেস ডে উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে রবিবার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, সাংবাদিকতা শুধুই পেশা নয়, একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও। সুকান্ত একাডেমি প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান থেকে এদিন তিনি বরাবরের মতোই ফেক নিউজ পরিবেশন নিয়ে সামান্য ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকাল যেভাবে দ্রুততার সাথে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ছে, তা সত্যিই ভেবে দেখার মতো। এক্ষেত্রে তীক্ষ্ণ নজরদারি না রাখলে পূর্ণতা আসবে না সাংবাদিকতায়। যদিও এগুলিকে মানুষ বিশ্বাস করে না বলেই এদিন অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন জাতীয় প্রেস দিবস উদ্যাপনের মূল ভাবনা ছিলো ‘সেফগার্ডিং প্রেস ক্রেডিবিলিটি এমিডট রাইজিং মিসইনফরমেশন’। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত এই অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের দুই প্রবীণ সাংবাদিক তথা ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার অমরপুর প্রতিনিধি প্রাণময় সাহা এবং কৈলাসহরের অনুপম ভট্টাচার্যকে শাল, স্মারক ও আর্থিক সম্মাননা দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, সাংবাদিকদের জন্য এই দিনটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনে তিনি রাজ্যের দুই সাংবাদিক হত্যা মামলা নিয়েও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান। ন্যায় বিচার প্রদানের চেষ্টায় সরকার যথেষ্টই তৎপর বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাসে অন্তত একবার হলেও সাংবাদিকদের নিয়ে কোনও কর্মশালা কিংবা আলোচনা সভা করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর যথাযথভাবে সহায়তা করবে বলেও তিনি জানান। এটা ফেক নিউজ সম্পর্কে হতে পারে কিংবা অন্যান্য বিষয় নিয়েও আয়োজন করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আমি সমস্ত ডিএম এবং এসপি-দের সাথে ভার্চুয়ালি বৈঠক করি। সেখানেই সংবাদপত্রের বিভিন্ন কাটিং সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে ভুল ও সত্যতা নিয়ে যাচাই করে দেখি। যদি দেখা যায়
যে সেসব খবরে ভুল তথ্য থাকে তবে তাদেরকে প্রতিবাদপত্র দিতে বলি। সরকার ঠিকভাবে চলছে কিনা কিংবা ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমের উপরই বর্তায়। মানুষের জন্য সেই কাজ করতে হয় সংবাদ মাধ্যমকে। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিন্যাসকে সুসংহত রাখার দায়িত্বও সাংবাদিকদেরই। তিনি বলেন, মিথ্যে খবর, অর্ধসত্য প্রচার, নির্বাচনের সময় বিভাজনমূলক কৌশল, অনলাইন হেইট স্পিচ-এসবের প্রবণতা আজকাল সাংবাদিকদের কাছে সত্যিকার অর্থে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, নৈতিকতা, শিষ্টাচার, আইনশৃঙ্খলা- এসব মাথায় রেখেই সংবাদ পরিবেশন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। আরও বলেন, বর্তমান সরকার-মিডিয়া- বান্ধব সরকার। প্রবীণ ও বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের নিয়ে সম্প্রতি মিডিয়া উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন, অ্যাক্রিডিটেশন, সাংবাদিক কল্যাণ সম্পর্কিত সাব-কমিটিও গঠন করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা উচ্চ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি অরিন্দম লোধ, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রণব সরকার, বরিষ্ঠ সাংবাদিক মানস পাল, শানিত দেবরায় সহ আরও অনেকেই।