সাংবাদিকতা শুধুই পেশা নয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও : মুখ্যমন্ত্রী!!
ইউকো ব্যাঙ্কের পর এবার গ্রামীণ ব্যাঙ্ক,আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিলো প্রতারকরা থানায় মামলা, চাঞ্চল্য!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- আগরতলা পুর নিগমের চেক জালিয়াতি করে ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে ষোল কোটি টাকার উপর নিয়ে গেছে প্রতারকরা। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার নতুন করে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কে প্রতারণার ঘটনা সামনে এলো। আড়াই কোটি টাকার উপর প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। ঋণের নামে সাধারণ নাগরিকদের আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের টাকা এইভাবে নিয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা। ইউকো ব্যাঙ্কে চেক জালিয়াতির ঘটনায় এখনও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নতুন করে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কে প্রতারণা ধরা পড়েছে। মোট দুই কোটি তিপ্পান্ন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রতারণার মামলা সামনে এসেছে। যে কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের এক ম্যানেজারকে। এছাড়া উনিশজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা জমা পড়েছে এনসিসি থানায়। এনসিসি থানার পুলিশ প্রতারণার জাল নথি তৈরি করা ও ব্যবহার করার অভিযোগ এনে মামলাটি নথিভুক্ত করেছে। মামলার নম্বর ৭০/২০২৫। ২০২৩সালের কুড়ি ডিসেম্বর থেকে গত বছরের পনেরো এপ্রিল পর্যন্ত প্রতারণা করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও গ্রামীণ ব্যাঙ্কের পক্ষে মামলা করতে আরও দেড় বছর নেওয়া হলো। মামলাটি করেছেন ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার সুজিত রায়। থানার ওসি প্রজিৎ মালাকার জানান, মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ চলছে। এরপরই গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হবে। তবে মামলা হতেই কয়েকজন অভিযুক্ত গ্রামীণ ব্যাঙ্কে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অভয়নগর মুল শাখা থেকেই প্রতারণার ঘটনাটি ঘটেছে। সরকারী কর্মচারী হিসাবে বেতন বাড়িয়ে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিল উনিশজন। তারা সবাই মিলে পিডিএল ঋণ নিয়েছে। মোট দুই কোটি আটষট্টি লক্ষ নবুই হাজার টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঋণ দেওয়া হয় দুই কোটি তিপ্পান্ন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। ঋণ নেওয়ার জন্য জাল প্যান কার্ড, পে স্লিপ জমা করা হয়। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের এক মহিলা শাখা ম্যানেজার এইসব প্রতারণার ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। এই ম্যানেজার জাল কাগজ দেখতে পেয়েও ঋণ দিতে গিয়ে উচ্চপদস্থদের অনুমতি নেননি। নিজে থেকেই কমিশন খেয়ে ঋণ দিয়ে দেন। গত বছর ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কে অডিট হলে জাল পে স্লিপা ধরা পড়ে। আভ্যন্তরীণ তদন্তে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা দেখতে পান উনিশজনকে বেআইনিভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এদের বেশিরভাগ সরকারী চাকরি করেন না। আবার কয়েকজন চাকরি করেন। অথচ তারা যে টাকা বেতন পান সেটা দেখানো হয়নি। জাল সেলারি শংসাপত্র জমা করে ঋণ নেওয়া হয়। অভ্যন্তরীণ তদন্তে নেমে অভিযুক্ত মহিলা ম্যানেজারকে প্রথমে সাসপেন্ড কর হয়। পরে তাকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। রহস্যজনকভাবে গ্রামীণ ব্যাঙ্কে জালিয়াতি ধরা পড়ার পরও, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মামলা করতে দেড় বছর সময় নেয়। এতদিন পর্যন্ত নাকি টাকা উদ্ধার করার চেষ্টা হয়েছে। অভিযোগ, এই সময়ে গ্রামীণ ব্যাঙ্কে একাধিক কর্মচারীকে বাঁচানোর চেষ্টা হয়েছে। রাজ্যের মানুষের কষ্টার্জিত টাক হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে শেষ পর্যন্ত এনসিসি থানায় মামলা নথিভুক্ত হয় মামলায় অভিযুক্ত উনিশজনের তালিকায় রাখা হয়নি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কোনে কর্মচারীকে। অভিযুক্তরা হল এডি নগরের বাপন সাহা, উন্না সরকার দা র শ্রীনগরের রণজিৎ মজুমদার, যোগেন্দ্রনগরের সুমন সাহা, রাঙ্গুটিয়ার লিটন সরক টাকারজলার বিষ্ণু দেববর্মা, ধলেশ্বরের সৌমেন বনিক, টাকারজলার উষারঞ্জন দেববর্মা, কলেজটিলার লিটন সিন্হা, ইন্দ্রনগরের সোনাই ধর, সোনামুড়ার প্রদী দাস, বিবিএম কলেজ চত্বরের বাসিন্দা বিদ্যালক্ষ্মী দেববর্মা, ইন্দ্রনগরের বিকি দত্ত, যোগেন্দ্রনগরের রাখি শীল, কালীবাজারের টিটন আচার্য, রামনগরের উল্কা দে এবং ধলেশ্বরের বাসিন্দা সত্যজিৎ বর্মণ। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের নোটিশ দিয়ে এনসিসি থানায় ডাকা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশের নো পেয়ে গ্রামীণ ব্যাঙ্কে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেকে জানেন না তাদের নামে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। বড় প্রতারণার জাল জড়িত এই চক্রে। তাদের ধীরে ধীরে গ্রেপ্তার করার প্রয়াস শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে, আগরতলা পুর নিগমের ষোল কোটি টাকা চেক জালিয়াতি করে ইউকো ব্যাঙ্কের মাধ্যমে রাজ্যের বাইরে চলে গেছে। এই প্রতারণার ঘটনায় রাজ্য অ ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। মামলাটি তদন্ত করছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এখন নতুন করে গ্রামীণ ব্যাঙ্কে প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। এই ঘটনা ও ক্রাইম ব্রাঞ্চে তদন্ত যাবে কিনা এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে নানা ধরনের গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ এখন জিরানীয়ায় ফেন্সিডিল মামলা এবং পুর নিগমের কোটি টাকা জালিয়াতির মামলা তদন্ত করছে। এই পরিস্থিতিতে গ্রামীণ ব্যাঙ্কে আড়াই কোটি টাকা প্রতারণার মামলা সামনে এসেছে। একের পর এক বড় ধরনের আড়াই কোটি টাকা প্রতারণার মামলা হচ্ছে আগরতলায়। এইসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি উঠছে।