November 9, 2025

শেষলগ্নে জাতপাতের অঙ্ক কষতেই ব্যস্ত সব শিবির!!

 শেষলগ্নে জাতপাতের অঙ্ক কষতেই ব্যস্ত সব শিবির!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের শাসক জোট এনডিএ কতটা উন্নয়ন করেছে, আদৌ বেড়েছে কর্মসংস্থান, এসব নিয়েই নির্বাচনী প্রচারে শসাক-বিরোধী চাপানউতোর তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই জাতপাতের অঙ্ক কষতেই যেন ব্যস্ত সব শিবির।
বিহারের নির্বাচনে এই জাতপাতের অঙ্ক একেবারে চেনা ছবি। আর এই অঙ্ক বেশ কঠিন। বিহারের মাটিতে জাতের ভিত্তিতে ভোট টানার কঠিন প্রতিযোগিতা চলে। বিহারে এবার হয়তো কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে এনডিএ-কে। কারণ নীতীশ কুমারের শারীরিক সমস্যা, ঠিক আগের ফর্মে নেই তিনি। আবার এই নির্বাচনে প্রথমবার প্রার্থী দিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের জনসুরাজ পার্টি।অনেকের মতেই, পিকের দল এবার হয়তো বেশ কিছুটা ভোট কাটবে। তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে মহাগঠবন্ধনও এবার জোরদার প্রচার চালিয়েছে।
আবার একইভাবে ‘জীবিকা দিদি’ প্রকল্প নীতীশ সরকারের একটা মাস্টার্স স্ট্রোক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রাজ্যে বেকারত্ব, রুটিরুজির খোঁজে রাজ্যের মানুষকে পরিযায়ী শ্রমিক হতে বাধ্য হওয়ার মতো বিষয় নির্বাচনের বড় ইস্যু। কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়াকে বিহারে ‘পলায়ন’ বলা হয়। রাজ্যের নানা প্রান্তের মানুষের মুখে মুখে এই সমস্যার কথা বারবার শুনেছি। নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের বিরোধিতা করে দু’মাস ধরে অনশন আন্দোলনে শামিল হন বিহারের পড়ুয়ারা। কিন্তু এসব ইস্যুকে দূরে ঠেলে জাতপাতের অঙ্ক কষতেই যেন বেশি
ব্যস্ত নেতারা।রাজ্যে হিন্দু ভোটের মূলত পাঁচটি ভাগ, উচ্চবর্ণ বা জেনারেল, যাদব ও অন্যান্য ওবিসি, ইবিসি, দলিত এবং জনজাতি। হিন্দু ভোটের মধ্যে আবার ইবিসি বা অতি অনগ্রসর ভাগ সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩৬ শতাংশ। ওবিসি ভোট প্রায় ২৭.১২ শতাংশ। উচ্চবর্ণের ভোট ১৫.৫২ শতাংশ। দলিত ১৯ শতাংশ এবং জনজাতি ১.৬৮ শতাংশ। মুসলিম ভোটের হার প্রায় ১৭.৭ শতাংশ। বিহারের ভোটে যে এই জাতপাতের অঙ্কই আসল তা মেনে নেবেন সব দলের নেতা। তবে এসবের মধ্যেই নীতীশ কুমার কিন্তু নিজের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য একের পর এক প্রকল্প ঘোষণার কারণে রাজ্যের মহিলা ভোটের বড় অংশ গিয়েছে নীতীশের ঝুলিতে। তবে টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে তার দল জেডিইউয়ের ভোটের হার কমেছে। বিজেপির আশা, উচ্চবর্ণের ভোটের পাশাপাশি কুশওয়াহা, পাসোয়ান, মুশহর, চন্দ্রবংশীর মতো অনগ্রসর শ্রেণীর মিলিত ভোট এনডিএর ঝুলিতে এলে শতাংশের হিসেবে ভোট বাড়বে। একইভাবে মুসলিম-যাদব ভোটের ওপর ভরসা রাখছে আরজেডি। জাতপাতের অঙ্ক কষছে কংগ্রেসও, বিহারের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন রাজেশ রাম, তিনি দলিতদের মধ্যে রবিদাস বা জাঠভ সম্প্রদায়ের নেতা। তাকে কুটুম্বা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত বিহারের জনতা উন্নয়ন নাকি জাতপাতের অঙ্কে ভোট দেন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *