চমকে ভরা নির্বাচন!!
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার এখন মধ্যগগণে চলছে।আগামী ৬ নভেম্বর প্রথম দফার ভোট।দ্বিতীয় দফার ভোট আগামী ১১ নভেম্বর।১৪ নভেম্বর ভোট গণনা। বিহার নির্বাচনের ফলের উপর অনেক যদি কিন্তু নির্ভর করছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে বিহার নির্বাচনের ফলাফলের উপর। বিহারে বর্তমানে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। যার মধ্যমণি জেডি (ইউ) নেতা নীতীশ কুমার। এবারের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে একটা প্রশ্ন এবার বড় হিসাবে দেখা দিয়েছে তা হলো নীতীশ কুমার কী পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না – যদি এনডিএ ক্ষমতায় ফিরে! বিজেপি নেতারা এই ইস্যুতে কিন্তু কুলুপ এঁটেছে। এবারের বিহার বিধানসভা নির্বাচন আরেকটি কারণেও গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো তৃতীয় শক্তি হিসাবে একটি দল উঠে এসেছে। এবং সেটি হলো প্রশান্ত কিশোরের দল জনসুরাজ। ইতোমধ্যেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার জোরকদমে চলছে। বিজেপি তার পুরো টিম নিয়ে মাঠে ঝাঁপিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা প্রমুখ বিহারে প্রচার করছেন। বিজেপি এবং জেডি (ইউ)’র মুখে নয়া কোনও কথা নেই। উল্টোদিকে আরজেডি এবার লোভনীয় প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়েছে। ইন্ডিয়া শিবিরে এবার একটা বিষয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আরজেডি তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে প্রচার করলেও কংগ্রেস এখনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তেজস্বীর নাম মুখে আনছে না। এরই মধ্যে রাহুল গান্ধীর প্রচারে না থাকাটা নিয়ে বিজেপি সরব। যদিও রাহুল গান্ধী বুধবার থেকে তার প্রচার শুরু করেছে।
অন্যদিকে, পিকের দল জনসুরাজ এবার কি ভোেট কাটুয়া পার্টি হতে যাচ্ছে বিহারে? বলা হচ্ছে পিকে অন্তত ৬-১৫% ভোট পেতে পারে এবারের নির্বাচনে। পিকের অবশ্য দাবি, হয় তিনি ১৫০টির বেশি আসন পাবেন অন্যথায় ২০-২৫টিতে আটকে যেতে পারেন। প্রশ্ন হলো, পিকে কাদের বাড়া ভাতে ছাই দিতে যাচ্ছেন। এতদিন বিহারের নির্বাচন ছিল দ্বিমুখী। এবারই প্রথম ময়দানে তৃতীয় শক্তি জনসুরাজ। এতদিন ছিল হয় লালু নয়তো নীতীশ। গত পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বিহারে এই চিত্র ছিল। তাই এবার জনসুরাজ আশাবাদী তাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে।
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, জনসুরাজ নিয়ে বিজেপির কোনও মন্তব্য নেই। উল্টোদিকে জনসুরাজ বিজেপি, জেডি (ইউ) এবং লালুকে সমানভাবে আক্রমণ করছেন। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে এখন থেকেই জনসুরাজকে চটাতে চাইছে না বিজেপি। এমন পরিস্থিতিও হতে পারে যে জনসুরাজের সাহায্য প্রয়োজন হতে পারে বিজেপির। অনেকেই বলছেন, জনসুরাজই এবারের কিংমেকার। যদিও বিহারে এখনও অনেক খেলা অপেক্ষা করছে। এসআইআর পরবর্তী অধ্যায় এবার বিহারে প্রথম ভোট হচ্ছে। রাজ্য থেকে যে ৬০-৭০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গেছে তার প্রভাব কি ভোটে পড়বে? তার জবাব দেবে কিন্তু সময়। গত ২০২০ সালের নির্বাচনে এনডি এবং মহাজোট উভয়েই ৩৬% করে ভোট পেয়েছিলো। কিন্তু বেশি আসন পায় এনডিএ। সেবারের ভোটের মহাজোটের বাড়া ভোটে ছাই দিয়েছিলো ওয়েইসির এআইমিমি। মুসলিম ভোটকে কেটে মহাজোটের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ওয়াইসি। ফলে মহাজোটের গদিতে ফেরা হয়নি সেবার। এবার শাসকের পক্ষের কাঁটা নাকি মহাজোটের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় পিকের দল তাই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে পিকে না শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করে ফেলে- তা দেখার অপেক্ষা আপামর বিহারবাসী, বলা যায় গোটা দেশবাসী।