হামাসের হাতে নিহত নেপালি ছাত্র বিপিন জোশির দেহ অবশেষে ফিরল ইজরায়েলে — দু’বছর পর সমাপ্ত হল এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার অধ্যায়।

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরায়েলের কাসানোভা পার্টি থেকে অপহৃত হয়েছিলেন ২২ বছর বয়সি বিপিন। সেই ভয়াবহ হামলার সময়ই সহপাঠীদের প্রাণ বাঁচাতে বিপুল সাহসিকতার পরিচয় দেন তিনি। হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় তাঁর খোঁজে পরিবার ও বন্ধুরা আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিল এতদিন। কিন্তু অবশেষে সোমবার রাতে হামাস বাহিনী তাঁর দেহ ইজরায়েলের হাতে ফিরিয়ে দেয়, আর সেই আশার আলো নিভে যায় চিরতরে।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পণবন্দিদের মধ্যে ২৬ জন ইতিমধ্যেই মৃত বলে নিশ্চিত হয়েছে। প্রথম দফায় হামাস চারজনের দেহ ফেরত দিয়েছে, যার মধ্যে ছিলেন একমাত্র হিন্দু ও অ-ইজরায়েলি বিপিন জোশি।
কে ছিলেন বিপিন জোশি?
নেপালের বাসিন্দা বিপিন কৃষিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। ছাত্র বিনিময় কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণ প্রকল্পে অংশ নিতে তিনি ইজরায়েলের কিব্বুৎজ অ্যালুমিমে গিয়েছিলেন — গাজা সীমান্তের একেবারে কাছে। হামলার মাত্র এক মাস আগেই সেখানে পৌঁছেছিলেন তিনি ও আরও ১৭ জন নেপালি ছাত্র। ওই রাতে হামাসের হামলায় তাঁদের মধ্যে ১০ জন প্রাণ হারান। বিপিন নিজে আহত হয়েও হামাসদের দিকে কয়েকটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সহপাঠীদের জীবন রক্ষা করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাঁকেই তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা।
দীর্ঘ দু’বছর ধরে ভাইয়ের মুক্তির আশায় নেপালে বসে লড়াই চালিয়ে গেছেন বিপিনের বোন পুষ্পা জোশি। পশ্চিম নেপালের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রতিদিন প্রায় আট ঘণ্টার বাসযাত্রা করে তিনি কাঠমান্ডু যেতেন, ভাইয়ের খবর জানার আশায়। গত অগস্ট মাসে গোটা পরিবার ইজরায়েল যায় প্রেসিডেন্ট আইজাক হেরগোজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এবং তেল আভিভে বন্দিদের পরিবারের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে।
কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হল। অবশেষে বিপিনের দেহ ফিরে এল তাঁর সাহসিকতার সাক্ষী হয়ে — এক তরুণের গল্প, যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করে বাঁচিয়েছিলেন অনেকের প্রাণ।