October 9, 2025

জাতীয় সড়ক বাইপাসের উদ্যোগ,উদয়পুরে সুখসাগর জলাধারে গড়ে উঠবে আধুনিক উপনগরী!!

 জাতীয় সড়ক বাইপাসের উদ্যোগ,উদয়পুরে সুখসাগর জলাধারে গড়ে উঠবে আধুনিক উপনগরী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ঐতিহ্যবাহী শহর উদয়পুর-কে ঘিরে শুরু হতে চলেছে রাজ্যের একটি বৃহৎ নগরোন্নয়ন প্রকল্প। রাজ্য সরকার উদয়পুরে একটি ‘স্যাটেলাইট টাউন’ বা উপনগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই উপনগরী তৈরি হবে সুখসাগর জলাধারের বিস্তীর্ণ পতিত জলাভূমি এলাকায়, জমির মালিক ও সরকারের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে (ল্যাণ্ড পুলিং মডেল)।
অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় জানিয়েছেন, সুখসাগরের বিস্তীর্ণ জমি দীর্ঘবছর ধরে অনাবাদী অবস্থায় পড়ে আছে। সেটা নামে সাগর হলেও বাস্তবে অনেকাংশেই পতিত জলাভূমি। উদয়পুর শহরের সম্প্রসারণের জন্য বিকল্প জমি বলতে এই জলাভূমিটিই অন্যতম। তাই সেই অঞ্চলকে উন্নয়নযোগ্য রূপে গড়ে তুলে সেখানে একটি আধুনিক উপনগরী স্থাপন করা হবে, বলেন মন্ত্রী।তিনি আরও জানান, প্রায় ৫০০ কানি জমির উপর তৈরি হবে এই ‘উদয়পুর স্যাটেলাইট টাউন’। যা রাজ্যের অন্যতম পরিকল্পিত আধুনিক উপনগরীতে পরিণত হবে। প্রকল্পের মধ্যে থাকবে আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক অঞ্চল, পার্ক, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উন্নত সড়ক যোগাযোগ ও পর্যটন পরিকাঠামো।
জাতীয় সড়ক বাইপাস প্রকল্পও যুক্ত হবে উপনগরীর সঙ্গে। এই স্যাটেলাইট টাউনের মধ্য দিয়েই যাবে ৮ নম্বর জাতীয় সড়কের নতুন বাইপাস রুট। উদয়পুর শহরের ভেতর দিয়ে জাতীয় সড়ক থাকার ফলে যানজট ও বাজার এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এই সমস্যার সমাধানেই নতুন বাইপাসের পরিকল্পনা।
প্রস্তাবিত বাইপাসটি গোকুলপুরের আগে জাতীয় সড়ক থেকে শুরু হয়ে মাতাবাড়ি ও চন্দ্রপুরের মধ্যবর্তী অংশে পুনরায় যুক্ত হবে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই এই রুটের উপর সমীক্ষা (সার্ভে) শুরু হবে। এই বাইপাস নির্মিত হলে দক্ষিণ জেলার জন্য একাধিক সুফল মিলবে।
প্রথমত দীপাবলির সময় মাতাবাড়ি পর্যটন উৎসব উপলক্ষে যান চলাচল বন্ধ থাকায় দক্ষিণ জেলা প্রায় ৪-৫ দিন বিচ্ছিন্ন থাকে। বাইপাস নির্মিত হলে এই সমস্যা দূর হবে। দ্বিতীয়ত উদয়পুর হয়ে আগরতলা ও সাব্রুমের মধ্যে দ্রুত ও নির্বিঘ্ন সংযোগ স্থাপন হবে।
তৃতীয়ত স্যাটেলাইট টাউনের মধ্য
দিয়ে বাইপাস যাওয়ায় নতুন উপনগরী হবে একটি যোগাযোগ ও বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু এবং অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সুখসাগরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। জলাভূমি সংরক্ষণের পাশাপাশি বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও সবুজ অঞ্চল (গ্রীন বেল্ট) তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো,
উদয়পুর রাজ্যের পুরাতন রাজধানী ও
দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং অবিভক্ত দক্ষিণ জেলার অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উদয়পুর হবে অবিভক্ত দক্ষিণ ত্রিপুরার আরবান গ্রোথ, মাতাবাড়ি ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির, প্রস্তাবিত ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির রেপ্লিকা, গোমতী নদী তীর, ত্রিপুরার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও নতুন সড়ক পরিকাঠামোর সংযোগে মন্দির ও সরোবর নগরী উদয়পুর এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে। সরকারী সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রাথমিক নকশা ও জমি নিরুপণ কাজ চলছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *