September 23, 2025

প্রধানমন্ত্রীর সফরে চূড়ান্ত অব্যবস্থা,আমন্ত্রণ করে নিয়ে যেন খোঁয়াড়ে আবদ্ধ সাংবাদিকরা! ক্ষোভ!!

 প্রধানমন্ত্রীর সফরে চূড়ান্ত অব্যবস্থা,আমন্ত্রণ করে নিয়ে যেন খোঁয়াড়ে আবদ্ধ সাংবাদিকরা! ক্ষোভ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-তিনি নীরবে
এলেন, মাতৃমন্দিরে ও শিব মন্দিরে পুজো ও পুষ্পাঞ্জলি দিলেন, আবার নীরবেই মাতৃমন্দির ত্যাগ করলেন। সোমবার নবরাত্রি শুভারম্ভের ৩টা ১৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মাতাবাড়ির প্রধান ফটকে কনভয় থেকে অবতরণ করে প্রবেশপথে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের সৌজন্যতা গ্রহণ করেন এবং ৩ টা ৫২ মিনিটে মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির ত্যাগ করার সময় বিধায়কদের সৌজন্যতা গ্রহণ করে বিদায় নেন। ৩৮ মিনিট মাতা বাড়িতে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত ডিজিটাল গ্যালারির ১৫ টি ডিজিটাল বিট পরিদর্শন করেন।রাজ্য সরকারের সচিব আই এস কিরণ গিত্যে এবং মাতাবাড়ির পরিচালন কমিটির সদস্য সম্পাদক তথা রাজ্য সরকারের টিসিএস অফিসার ভাস্কর দাসগুপ্ত প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিটি ডিজিটাল বিটের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেছেন। বিশ্লেষণ শুনে অনেকটাই তৃপ্ত হতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রীকে। মাতাবাড়ির পুরোহিত তথা ট্রাস্টের সদস্য চন্দন চক্রবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান ও মন্ত্র পাঠ করান। পুরোহিত চক্রবর্তীকে অন্য দুজন পুরোহিত সহায়তা করেছেন। মাতা ত্রিপুরেশ্বরীর মন্দিরে পুজো ও উন্নয়ন প্রকল্পের ফলক উন্মোচনকে কেন্দ্র করে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির ফলে নাজেহাল হতে হয়েছে রাজ্যের সাংবাদিকদের, সরকারী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, মন্ত্রী-বিধায়করা এবং
দলীয় নেতৃত্বদের পর্যন্ত। জনা কয়েক সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়া কাউকেই মাতাবাড়ির মন্দিরে উঠতেই দেননি নিরাপত্তা রক্ষীরা। জনসাধারণের চাপে একসময় বিধায়ক জিতেন মজুমদার ও অভিষেক দেবরায়কে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কয়েকশ জনতাকে নিয়ে মাতাবাড়ির পেছনে চলে যেতে দেখা গেছে। আবার নিরাপত্তা রক্ষীদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি নিয়ে মাতা ত্রিপুরেশ্বরীর মন্দির পরিচালন ট্রাস্টের সদস্য বিধায়ক অভিষেক দেবরায়কে চিৎকার চেঁচামেচি করতেও দেখা গেছে। নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনির জেরে সোমবার বেলা বারোটার পর থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সাধারণ মানুষ পুজো দিতে পারেননি মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে।আর সাংবাদিকদের নিমন্ত্রণ করে আনা হলেও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর একটি ছবিও তুলতে পারেননি কোনো সাংবাদিক। সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর ধারেকাছে যাওয়া দূরের কথা, মূল মন্দির চত্বরেই উঠতে দেওয়া হয়নি। মাতাবাড়ির মন্দিরের প্রধান ফটকের সামনে সড়কের উল্টোদিকে গবাদি পশুর খোঁয়াড়সদৃশ একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছিল।যাতে ছিল না কোনো বসার জায়গা কিংবা আলো বাতাসের ব্যবস্থা।রাজ্য সরকারের স্বীকৃত সাংবাদিকদের জন্য ওইটুকুই আয়োজন ছিল।পুলিশ সুপারের ইস্যু করা বৈধ পাস থাকা সত্ত্বেও বহু সাংবাদিককে ব্রহ্মাবাড়ি অতিক্রম করতেই দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে এভাবে সাংবাদিকদের নামে পাস ইস্যু করার মানেটা কী? আর সাংবাদিকরা যদি প্রধানমন্ত্রীর ছবি কিংবা ভিডি ফুটেজ না-ই তুলতে পারেন বা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য না সংগ্রহ করতে পারেন, তাহলে সাংবাদিকদের এভাবে আমন্ত্রণ করে ডেকে নেওয়ার কী প্রয়োজন? খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার রক্ষীরা গতকাল রাতে পুরো মিডিয়া সেন্টারটিই সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তাদের হস্তক্ষেপে মিডিয়া সেন্টারের অর্ধেক পুরোপুরি গুটিয়ে, বাকি অংশে বসার চেয়ার, টেবিল, ফ্যান, পানীয় জলের বোতল ইত্যাদি পুরোপুরি সরিয়ে ফেলে অনেকটা খোঁয়াড়ের আকারের মিডিয়া সেন্টার তৈরি করা হয় নামকা ওয়াস্তে। যার কোনো প্রয়োজনই ছিলো না বলে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের অভিমত। ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিআইপিদের সংবাদ কভার করা নিয়ে রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের কর্তাদের ও রাজ্য পুলিশের কর্তাদের চিন্তাভাবনা করা উচিত বলেও ক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের অভিমত।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় মাতাবাড়ি ছেড়ে পালটানা পৌঁছানোর আগেই প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের সড়কপথের দুইদিকের ব্যারিকেডের বাঁশ খুলে নেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।শুধু তাই নয়,বাঁশ খুলে নেওয়া নিয়ে দুই পক্ষের মারামারিতে আহত জনা কয়েক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলেও সংবাদ। নিরাপত্তার অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ও অনেকটা বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্য দিয়েই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিগত ছয় বছরের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী সোমবার এসেছেন ধুতি পরে, যা অনেকের নজরে এসেছে। সব মিলিয়ে আজকে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রাজ্যবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *