September 10, 2025

নাইট ক্লাব কাম বার ইস্যুতে সরকার চুপ কেন? অর্থমন্ত্রী ও দপ্তরের সচিবের ভূমিকা নিয়ে জনমনে বড় প্রশ্ন?

 নাইট ক্লাব কাম বার ইস্যুতে সরকার চুপ কেন? অর্থমন্ত্রী ও দপ্তরের সচিবের ভূমিকা নিয়ে জনমনে বড় প্রশ্ন?

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের সুস্থ সংস্কৃতির পীঠস্থান রবীন্দ্র ভবন এবং শিশু উদ্যান চত্বর এলাকায় নাইট ক্লাব ও বারের অনুমোদন ঘিরে গোটা রাজ্য জুড়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও রহস্যজনকভাবে নীরব রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের এই রহস্যজনক নীরবতা ঘিরেও রাজ্যের বিভিন্ন মহলে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে দ্বিতীয় বিজেপি জোট সরকারের মনোভাব এবং রুচি নিয়েও। বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য অর্থ দপ্তরের মন্ত্রী এবং অর্থ দপ্তরের সচিবের বিরুদ্ধে। রাজ্যবাসী জানতে চাইছে, কিভাবে রাজ্যের অর্থ দপ্তর এবং দপ্তরের সচিব শহরের সুস্থ সংস্কৃতির পীঠস্থান রবীন্দ্র ভবন, শিশু উদ্যান এবং সুকান্ত একাডেমি প্রাঙ্গণে নাইট ক্লাব ও বারের অনুমোদন দিলো? এক্ষেত্রে সবথেকে বড় প্রশ্ন উঠেছে অর্থ দপ্তরের মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে।
আরও রহস্যজনক ঘটনা হলো, রবীন্দ্র ভবন চত্বরে নাইট ক্লাব এবং বারের অনুমোদন নিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী মহল থেকে শুরু করে সমাজের নানা অংশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভএবং রাজ্য সরকারের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সর্বত্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠলেও, রাজ্য সরকার কিংবা অর্থ দপ্তর রহস্যজনকভাবে নীরব!রাজ্য সরকার অথবা অর্থ দপ্তরের থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো এবিষয়ে স্পষ্টীকরণ বা বিবৃতি দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, কেন হলো, সরকার নীরব ভূমিকা পালন করে চললেও, নাইট ক্লাব ও বার পরিচালন সংস্থাটি সাংবাদিক সম্মেলন করে সাফাই গাইছে। অথচ রাজ্য সরকার চুপ! খবর নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের গত জানুয়ারী মাসে রবীন্দ্র ভবন চত্বরে নাইট ক্লাব ও বার খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অর্থ দপ্তর থেকে।
প্রশ্ন উঠেছে, যে বিল্ডিং এবং জমি বিক্রি করে চিটফান্ডে প্রতারিত আমানতকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা। সেটা না করে রাজ্য সরকার নিজেরাই সেই বিল্ডিং ও জমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ। সেই বিল্ডিংয়ে স্থান দেওয়া হয়েছে নগর উন্নয়ন, স্মার্টসিটি, জলবোর্ড সহ কয়েকটি সরকারী অফিস। আর এই বিল্ডিংয়েই রাজ্যের অর্থ দপ্তর নাইট ক্লাব ও বার খোলার অনুমোদন দিয়েছে একটি বেসরকারী সংস্থাকে। এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন ঘিরে অনেকেই সমলোচনা করে বলছেন, রাজ্য সরকার তো তাহলে মহাকরণ, গোর্খাবস্তি অফিস কমপ্লেক্সে বেসরকারী সংস্থাকে ভাড়া দিয়ে নাইট ক্লাব ও বার খুলতে পারে। এতে রাজ্য সরকারের আরও অনেক রাজস্ব আয় হবে!
অনেকেই বলছেন, রাজ্যে নাইট ক্লাব ও বার হোক, তাতে কোনো আপত্তি নেই। দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই একাধিক নাইট ক্লাব রয়েছে। তাই বলে রাজধানী আগরতলার প্রাণ কেন্দ্রে যেখানে আধা কিলোমিটারের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মহারাণী তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়, মহিলা কলেজ, ভবিষ্যতে মহিলা ইউনিভার্সিটি হবে, গার্লস হস্টেল, একাধিক ধর্মীয় উপাসনালয়, ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র ভবন, সুকান্ত একাডেমি, শিশু উদ্যান, বিবেক উদ্যান ইত্যাদি রয়েছে, আর সেখানেই একটি নাইট ক্লাব কাম বার খোলার অনুমতি দিলো কি করে রাজ্য সরকার? এই প্রশ্ন এখন সকলের মনে।
এদিকে, অবিলম্বে নাইট ক্লাব ও বার বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার নাইট ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তিনটি বামপন্থী ছাত্র যুব মহিলা সংগঠন। সংগঠনগুলি হলো এআইএমএসএস, এআইডিওয়াইও এবং এআইডিএসও। সংগঠনগুলির পক্ষে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, রাজ্যে এমনিতেই যে হারে মদ মাদকদ্রব্যের প্রসার চলছে তাতে ছাত্র যুবসমাজ আজ অধঃপতিত হচ্ছে। গ্রাম পাহাড় সর্বত্র মদ-গাঁজা-কৌটার মতো নেশা সামগ্রীতে ছড়িয়ে পড়েছে।এই মশার কবল থেকে ছোটছোট ছেলেমেয়েরা এমনকি মহিলারাও রেহাই পাচ্ছে না।সরকার একদিকে নেশামুক্ত রাজ্য গড়ে তোলার ঢাকঢোল পেটাচ্ছে।পরদিকে ঢালাও হারে মদের লাইসেন্স,দোকান খোলার অনুমতি দিচ্ছে।
রাজ্যে শিক্ষকের অভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হচ্ছে, মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ জীবন রবার হয়ে যাচ্ছে, কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ নেই। এইরকম অসহনীয় প্রস্থিতি দূর করতে সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নাইট ক্লাব খুলে ওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ বলে অভিযোগ তুলে। পাশাপাশি রাজ্যে সুষ্ঠু বেশ বজায় রাখতে দলমত নির্বিশেষে সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে এগিয়ে আসার ও আহ্বান জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *