দিল্লীতে ৯ই ধরনায় বসছেন প্রদ্যোত কিশোর!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত আদায়ে ৯ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লীর যন্তর মন্তরে ধরনায় বসছে, তিপ্রা মথা। অবৈধ অনুপ্রবেশ, ভূমির অধিকার, আর্থ সামাজিক অধিকার সহ অন্যান্য দাবিতে এ দিন দুপুর দুইটায় যন্তর মন্তরে ধরনা হবে। এদিনের ধরনা আন্দোলনে ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়ে বসবেন মথার ছাত্র যুব সহ নেতৃত্বরা। মথার অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম সহ রাজ্যের অন্যান্য বিরোধী দলকে শামিলেরও আহ্বান করা হয়েছে। আজ এমনটাই বললেন তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।
তিনি বলেন, প্রায় দু বছর হচ্ছে।এখন পর্যন্ত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত পূরণে পদক্ষেপ হলো না। যদিও এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে অনেক বৈঠক হয়ে গিয়েছে। তবে নিট ফল শূন্য। স্বাধীনতার এতো বছর পরও ত্রিপুরার মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমাদের নয়া দিল্লীতে এসে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এর থেকে লজ্জার কি হতে পারে। অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানের মতো ন্যূনতম অধিকারগুলি পর্যন্ত আমাদের কাছে পর্যাপ্ত নেই। এর জন্যেই ভারত সরকারের সাথে আমাদের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে। তবে এখন কেন শর্ত পূরণ নীরব? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে জানাতে হবে। প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের দাবি, ত্রিপুরার ১৫ লক্ষ উপজাতি জনসমাজের শিক্ষার অধিকার, বাসস্থানের অধিকার, জমির পাট্টার অধিকার আদায়ে আমাদের নয়াদিল্লীতে পায়ে হেঁটে আসতে হচ্ছে। সারা দেশবাসীর মানুষ দেখে অবাক। কীভাবে রাজ্য যুব সমাজ তাদের অধিকার আদায় ত্রিপুরা থেকে পায়ে হেঁটে দেশের রাজধানী নয়াদিল্লীতে আসছেন। সারা দেশের মানুষই এখন প্রশ্ন করছে কেন আমাদের এভাবে ঠকানো হলো? এখন ডেভিড মুড়াসিং সহ কয়েকজন যুব সমাজ পায়ে হেঁটে নয়াদিল্লীতে এসেছেন। আগামী দিনে আমাদের অধিকার আদায় ত্রিপুরা থেকে হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে প্রয়োজনে নয়াদিল্লীতে আসবেন। প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের অভিযোগ, রাজধানী আগরতলার ছোট্ট একটি রাজনৈতিক দল ত্রিপুরাতে নতুন করে আমাদের উস্কানি দিচ্ছে। এই রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য হলো দাঙ্গা লাগানো। পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে বিভেদ তৈরি করা। এ লক্ষ্যেই দেখা যাচ্ছে এখন প্রত্যেকদিন আমাদের লক্ষ্য করে উস্কানি দিতে একটা ব্যস্ত। তিনি বলেন, বাস্তব হলো এই রাজনৈতিক দলের সাথে ৯৯.৯৯ শতাংশ বাঙালি মানুষের সমর্থন নেই এবং পছন্দ করেন না। প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ সাম্প্রতিক বিশ্রামগঞ্জের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, এই ক্ষুদ্র দলটির পেছনে কারা রয়েছেন? কাদের ইন্ধনে এরা আমাদের উস্কানি দিচ্ছেন? সব প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আমরা পথে নামলে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে। অথচ এই ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দলটি আমাদের আবেগ নিয়ে দাঙ্গা লাগানো চেষ্টা করলেও মামলা হচ্ছে না। এটা কি ধরনের সাবকা সাথ সাবকা বিকাশে নমুনা আমাদের জানাতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন মথা সুপ্রিমো। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজধানীতে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দলটির বিরুদ্ধে অবিলম্বে রাজ্যব্যাপী আমরা পথে নামবো। প্রস্তুত থাকুন। কাউকে ছাড়া হবে না। প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ আজ তার ব্যক্তিগত সামাজিক মাধ্যমে বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করবেন না। আমি জানি, আপনি আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসেন। জিতেনবাবু আপনি নিজেও নয়াদিল্লীতে আমাদের সাথে ধর্নায় বসতে চান। দলের গাইড লাইনের জন্য সামনে আসতে পারছেন না। তবে এখন যেভাবে আমাদের ঘুরিয়ে সমর্থন করছেন এভাবেই আমাদের সাথে থাকবেন। আশা করবো আগামী দিনে আমাদের সাথে রাজপথে নামবেন। তিনি দলের নেতা কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এতো ভীতু কেন।পথে নামুন।ঘরে বসে থাকলে আপনাদের ক্ষতি হবে।৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সারা রাজ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত আদায়ে মশাল মিছিলে জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে শামিলের তিনি আহ্বান জানান।