September 6, 2025

শিক্ষাদান মহৎ পেশা: মুখ্যমন্ত্রী!!

 শিক্ষাদান মহৎ পেশা: মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন জেলা এবং মহকুমাস্তরে শুক্রবার নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হলো ৬৪তম জাতীয় শিক্ষক দিবস। এই দিনে মূল অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এ দিন বলেন, একমাত্র শিক্ষকরাই পারে নীতিগত শিক্ষা, শিষ্টাচার ও ন্যায়বোধের শিক্ষায় একজনকে শিক্ষিত করে প্রকৃত মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে। পুঁথিগত বিদ্যার বাইরেও যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষিত করে তোলেন, তারাই প্রকৃত শিক্ষক। এ দিনের অনুষ্ঠান থেকে এ বছরের পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডা. অতুল দেববর্মাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তাদের মধ্যে ডিসি পাড়া হেমন্ত স্মৃতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা প্রণতী দেববর্মাকে মহারাণী তুলসীবতী পুরস্কার, বিশিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ সমীর চক্রবর্তীকে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পুরস্কার প্রদান করা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয় ও বিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরও মোট ছয়ত্রিশ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ‘শিক্ষক সম্মাননা’ ২০২৫ প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা পুরস্কার প্রাপকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাদান হলো মহৎ পেশা।


এই পেশার সাথে অন্য কোনও পেশার তুলনাই হয় না। কারণ শিক্ষকরাই গড়ে তোলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। যা নির্ণয় করে একটি সমগ্র জাতির ভবিষ্যৎ। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তাই তিনি সমর্পণের ভাবনা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, যারাই এই পেশার সাথে যুক্ত রয়েছেন, আমার মনে হয় তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবসময়ই তাদের সেরাটা উজার করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। রাজ্যন্তরীয় এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক সমাজই হলো ছাত্রছাত্রীদের জীবনে চলার পথে পথপ্রদর্শক, জীবন গড়ার মূল কারিগর।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের কর্মজীবন নিয়ে অধ্যায়ন করলেই শিক্ষকতার মতো মহান পেশা সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদেরকে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে মানসিক ও আবেগঘন মুহূর্তের সাথে যুক্ত হয়ে শিক্ষিত করে তোলার প্রয়াস নিতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। আরও বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকারা হলেন ছাত্রছাত্রীদের রোড মডেল। আর শিক্ষক সমাজ হচ্ছে একটি বৃক্ষের শিকড়ের মতো। যার কাজ তাদের সমস্ত নির্যাস দিয়ে এই সমাজকে গড়ে তোলা। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়নের বাস্তব চিত্রও তুলে ধরেন। আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যে সরকারী ও বেসরকারীস্তরে অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আগামী দিনে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার বিষয়টিও ভেবে দেখা হচ্ছে। এর কাজও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যে এমবিবিএস, বিডিএস, বিএসসি নার্সিং, এএনএম, জিএনএম সহ ইঞ্জিনীয়ারিং-এ পড়ার বিপুল সুযোগ তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক জোর দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, শিক্ষা প্রদানের বাইরেও ছাত্রছাত্রীদের জীবন গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা রয়েছে। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা, উদ্ভাবনী, কারিগরি বিদ্যার কদর বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি। তাই শিক্ষকদেরও শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে আপডেট রাখতে হবে। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এনসি শর্মাও উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। এ দিন ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করার পাশাপাশি তাঁর দর্শন এবং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল হকিকৎ নিয়ে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এদিকে, পাঁচ সেপ্টেম্বর হজরত মহম্মদের জন্মদিন ও শিক্ষক দিবস।


দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজ্যের সামাজিক সংস্থা বিধান শিশু উদ্যান মেধা অন্বেষা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে দুটি বিদ্যালয়ে। রাজধানীর বাণীবিদ্যাপীঠ দ্বাদশ শ্রেণি বালিকা বিদ্যালয়ের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিধান শিশু উদ্যান মেধা অন্বেষার রাজ্য কনভেনার তথা শিক্ষক মনোজ রায়। ‘এক পের মা কি নাম’ প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী সৃজিতার সঙ্গে বৃক্ষরোপণে তার মাও উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর অপর বিদ্যালয় আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দিরে বৃক্ষরোপণে তার। মাও উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর অপর বিদালয় আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দিরে বৃক্ষরোপণে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিধান শিশু উদ্যান মেধা অন্বেষার সদর জেলা কমিটির কনভেনার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল শর্বরী পাল দেব রায়। বিধান শিশু উদ্যান মেধা অন্বেষা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, যেমন হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই সম্পর্ককে জোড়দার করতে চেয়েছে তেমনি বৃক্ষরোপণে সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান রেখেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *