উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ ভূমিধসে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সুড়ঙ্গে বন্দি ১৯ কর্মী!!
নতুন সমীকরণ!!

হিন্দি চিনি ভাই ভাই’, কয়েক দশক পর ফের একবার এই স্লোগান ‘নিয়ে গোটা দেশব্যাপী চর্চা শুরু হয়েছে।গত মাসখানেক ধরে এই চর্চা চলতে থাকলেও, শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চিনের তিয়ান জিন বিমানবন্দরে পা রাখতেই এই চর্চা আরও গতি পেয়েছে।শুধু তাই নয়,এই চর্চাকে আরও উসকে দিয়েছে তিয়ানজিন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে যেভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, তা দেখে ষাট বছর আগের স্লোগান ফের একবার আলোচনায় উঠে এসেছে।তবে এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, দীর্ঘ সাত বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চিনে পা দিতেই আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা হলো।
এখানেই শেষ নয়, এই মূহূর্তে চিনের তিয়নজিন শহরে বিশ্ব রাজনীতির মোড় ঘোরানোর মতো একের পর এক চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে চলেছে বলে খবরে প্রকাশ।সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে রবিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তিয়ানজিনে পৌঁছেছেন। খবরে প্রকাশ, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সাথে এক প্রস্থ আলোচনার পর, পুতিনের সাথেও প্রধানমন্ত্রী মোদির আলোচনা হয়েছে। এসসিও সম্মেলন চলবে সোমবার পর্যন্ত। এই সম্মেলন থেকে যে ছবিটা সামনে এসেছে, তা শুধু আমেরিকার একাধিপত্যকে চ্যালেঞ্জই করছে না, বরং একটি নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে বিশ্ব রাজনীতির নতুন খেলা শুরু হয়ে গেছে। আর এই খেলা আমেরিকা এবং ট্রাম্পের ঘুম কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে ‘ভারত-রাশিয়া-চিন’ একজোট হওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলো মিটিয়ে তিন দেশ একসাথে পথ চলবে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই দাবি করছেন, এই জোট এখন বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হতে চলেছে। আমেরিকার একাধিপত্য, বাণিজ্যনীতি ও রাজনৈতিক চাপকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বিভিন্ন দেশের ওপর একতরফা শুল্ক আরোপের কৌশল এখন হুমকির মুখে। রাশিয়া-ভারত- চিনের এই নতুন জোট ট্রাম্পের একলা চলো নীতির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। যদি এই তিনটি দেশ একসাথে কাজ করে, তবে বৈশ্বিক মঞ্চে ট্রাম্পের প্রভাব কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
যদিও সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) মূলত একটি আঞ্চলিক সংস্থা। যার লক্ষ্য হলো নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করা। কিন্তু এবার চিনের তিয়ানজিন শহরে আয়োজিত এই সম্মেলনে সব ছাপিয়ে মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছেন ভারত- রাশিয়া ও চিনের তিন শীর্ষনেতা। প্রত্যেকের নজর এই মুহূর্তে এই তিন রাষ্ট্রনেতার উপর। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এই তিন দেশ একসাথে জোট বাঁধলে পাল্টে যাবে অনেক কিছুই।
খবরে প্রকাশ,চিনে গিয়ে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেছেন, চিন এবং ভারতের বন্ধুত্বে কল্যাণ হবে সমগ্র পৃথিবীর। দুই দেশের ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে আছে এই সম্পর্কের সঙ্গে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে এমনটাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খবরে প্রকাশ, মোদিকে স্বাগত জানিয়ে জিনপিংও পারস্পরিক সমন্বয়ের বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, চিন এবং ভারত সবচেয়ে সভ্য দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমরা বিশ্বের দু’টি সবচেয়ে জনবহুল দেশ। আমাদের বন্ধুত্ব, প্রতিবেশী হিসাবে একে অপরের পাশে থাকা জরুরি। ড্রাগন এবং হাতির একজোট হওয়া দরকার। কূটনৈতিক এবং দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের অভিমত, এবার এসসিও সম্মেলন নানা দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আগে থেকেই মজবুত। বলা যায় ভারত এবং রাশিয়া একে অপরের বিশ্বস্ত বন্ধু।এই বন্ধুত্ব কয়েক দশকের।এখন চিনের সাথে ভারতের এই নতুন সমীকরণ ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।