August 18, 2025

উড়ালপুল: বিশেষজ্ঞদের মতে,ঝুঁকিপূর্ণ, দমবন্ধকর অবস্থার শিকার হতে চলেছেন শহরবাসী!!

 উড়ালপুল: বিশেষজ্ঞদের মতে,ঝুঁকিপূর্ণ, দমবন্ধকর অবস্থার শিকার হতে চলেছেন শহরবাসী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগরতলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্তকে কেন বিশেষজ্ঞ মহল অবৈজ্ঞানিক ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করছেন,তার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত,এই উড়ালপুলে তিনটি নব্বই
ডিগ্রির বাঁক এবং একটি এস আকৃতির
বাঁক থাকবে।যা অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিক
ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করছে বিশেষজ্ঞ
মহল। শহরের কর্নেল চৌমুহনী এলাকায় উড়ালপুলে এস আকৃতির বাঁক থাকবে, তাও খুব ছোট পরিসরে।তাছাড়া আরএমএস চৌমুহনী, হারাধন সংঘ এবং উত্তর গেট – এই তিনটি স্থানে থাকবে নব্বই ডিগ্রি বাঁক।
যেকোনো উড়ালপুলে এ ধরনের একাধিক বাঁক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে।দ্বিতীয়ত, শহরের আরএমএস চৌমুহনী এলাকাটি জলাভূমি।এখানে মাটির শক্তি অনেকটাই কম।এখানে একাধিক বিল্ডিংকে একদিকে হেলে পড়তে বা ফাটল ধরতে দেখা গেছে। এখনো এই দৃশ্য চোখে পড়ে। জলাভূমিতে এই ধরনের বড় নির্মাণ স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ। উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে কলকাতার কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন। সম্প্রতি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এই মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। জানা গেছে, ওই মেট্রো লাইনে আরও একটি স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। কারণ একটাই, বিপজ্জনক ফাটল এবং নরম মাটিতে বসে যাওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে,আগরতলা শহরকে যানজট মুক্ত করতে এবং শহরকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করতে হলে রাজ্য সরকারকে বড় আকারে পরিকল্পনা করতে হবে। যেমন এলিভেটেড রোড অর্থাৎ উঁচু রাস্তার কথা ভাবতে হবে। দেশের বহু শহরে এ ধরনের এলিভেটেড রোড আছে। দেখতে উড়ালপুলের মতো, কিন্তু উড়ালপুল নয়। এই সব এলিভেটেড রোডের উপর দিয়ে হাল্কা এবং মাঝারি ওজনের যানবাহন অনায়াসে চলাচল করতে পারে। আগরতলা শহরে দুটি এ ধরনের এলিভেটেড রোড করা যেতে পারে। এর জন্য রাজ্য সরকারকে তেমন কোনো জমিও অধিগ্রহণ করতে হবে না। এমনকী মানুষের তেমন কোনো ক্ষতিও হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি এলিভেটেড রোড করা যেতে পারে হাওড়া নদীর দক্ষিণ পাড়ে। নাগেরজলা বর্তমান উড়ালপুলের সাথে লিংক করে নদীর পাড়ে পাড়ে এই রোড একেবারে আশ্রম চৌমুহনী পর্যন্ত আসতে পারে। প্রয়োজন মতো এই এলিভেটেড রোডের মাঝে মাঝে উঠা-নামার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। একই রকম আরেকটি এলিভেটেড রোড করা যেতে পারে কাটাখালের উত্তর পাড় ধরে। অবশ্যই এই পরিকল্পনা বিশাল ব্যয়সাপেক্ষ, কিন্তু অসম্ভব নয়।এটা যদি করা যায়,এই শহরের ছবিটাই অনেকটা পাল্টে যাবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলে এই পথেই হাঁটতে হবে।এছাড়া বিকল্প নেই। শহরকে যতটা সম্ভব যানজট মুক্ত এবং আধুনিক রূপ দিতে গেলে সরকারকে এমন বড় পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হবেই। আগরতলা শহরকে ইচ্ছে করলেও ভবিষ্যতে বড় করা যাবে না।বর্তমানে যা আছে, যতটুকু আছে সেটাকে মাথায় রেখেই ভবিষ্যতের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সেটাই হবে প্রকৃত উন্নয়ন। শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই উড়ালপুল নির্মাণ হলে সমস্যার সমাধান কতটা হবে সেটা ভবিষ্যৎই বলবে। কিন্তু এখনো খোলা আকাশে আগরতলা যে শ্বাস নিচ্ছে, সেটা যে বন্ধ হয়ে একটা দমবন্ধকর অবস্থা তৈরি হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *