August 17, 2025

স্বাধীন ব্রু ল্যান্ডের ছক ফাঁস,কাঞ্চনপুর থানার অস্ত্র লুটের পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো পুলিশ!!

 স্বাধীন ব্রু ল্যান্ডের ছক ফাঁস,কাঞ্চনপুর থানার অস্ত্র লুটের পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো পুলিশ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাধীন ব্রু ল্যান্ড প্রতিষ্ঠার দাবিকে কেন্দ্র করে অশান্তির আবহ তৈরি হচ্ছে উত্তর ত্রিপুরার পাহাড়ি জনপদ কাঞ্চনপুরে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ত্রিপুরা ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্টের সক্রিয় জঙ্গিরা কাঞ্চনপুর থানার গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া এবং অস্ত্র লুটের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করেছিল। শেষ মুহূর্তে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় সেই নাশকতার ছক ভেস্তে যায়।
উত্তর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে জঙ্গিরা ডিনামাইট বিস্ফোরণের মাধ্যমে থানার গাড়ি ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছিল। উদ্দেশ্য ছিল অস্ত্র লুট করে নতুন করে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা। কিন্তু পুলিশের পূর্ব তথ্যের ভিত্তিতে আগেভাগেই শুরু হয় বিশেষ অভিযান। উত্তর জেলার পুলিশ সুপার অবিনাশ রাইয়ের নেতৃত্বে কাঞ্চনপুর, ভাংমুন ও দামছড়া থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযানে নামে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জম্পুই-কাঞ্চনপুর সড়ক থেকে সাধারণ পোশাকে আসা দুই জঙ্গিকে আটক করা হয়। ধৃতদের নাম ধনঞ্জয় রিয়াং (৩৯), আসামের হাইলাকান্দির বাসিন্দা এবং সদাই নন্দ রিয়াং (৩৪), দামছড়ার স্থায়ী পুনর্বাসনপ্রাপ্ত রিয়াং শিবির কাসকাওয়ের বাসিন্দা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ডিনামাইট ও নাশকতার সামগ্রী। তারা ওই সড়কে ডিনামাইট দিয়ে কাঞ্চনপুর থানার পুলিশের গাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে ফেলে কাঞ্চনপুর থানার ওসি। শুক্র ও শনিবার দিনভর ধৃতদেহ জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। জেরায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের কাছ থেকে স্বাধীন ব্রু ল্যান্ড প্রতিষ্ঠার দাবিতে লেখা একটি চিঠিও উদ্ধার হয়েছে।পুলিশের অনুমান এই হামলার মাধ্যমে উত্তর ত্রিপুরার শান্ত পরিবেশ নষ্ট করে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছিল। জেলা পুলিশ সুপার অবিনাশ রাই ঘটনাস্থলে অবস্থান করে বৈরীদের ধরতে নির্দেশিকা দেন। পুলিশ সুপার জানান, সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারতো। কাঞ্চনপুরকে ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ইতিমধ্যে এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জম্পুই-কাঞ্চনপুর সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ধৃতরা সম্প্রতি মিজোরাম ও আসামে গোপন বৈঠকে অংশ নিয়েছিল। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত। সম্প্রতি চাঁদাবাজি ও অস্ত্র পাচারের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ নজরদারি আরও বাড়িয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলেও পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে। ধৃতদের জেরা করে সংগঠনের অন্য সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ টহলও বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জঙ্গিদের অর্থের উৎস নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মোবাইল ফোন থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার হয়েছে। এর ভিত্তিতে তদন্ত এগোচ্ছে। ঘটনার পর কাঞ্চনপুর মহকুমার বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট শক্তিশালী করা হয়েছে। জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং সন্দেহভাজন কার্যকলাপ দ্রুত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *