সেপ্টেম্বরে আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা!!
রাজধানীর লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি,সরকার পরিচালিত দেবালয় রূপ পেয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সরকার পরিচালিত দেবালয় (মন্দির) হয়ে উঠেছে এখন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।সবথেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো,সরকারী সম্পদ, বিদ্যুৎ, গ্যাস থেকে শুরু করে যাবতীয় সম্পত্তি এবং সামগ্রী ব্যবহার করে চলছে এই জমজমাট ব্যবসা। অথচ সরকার এবং প্রশাসনের কর্তারা নীরব!এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি দেবালয় থেকে। আর এই ব্যবসার মূলে রয়েছে মন্দিরের পুরোহিত এবং অন্য কর্মীরা। তবে পুরোহিতরাই হলেন এই ব্যবসার প্রধান হর্তাকর্তা। বাকিরা কমিশন পেয়ে চুপ। খবর নিয়ে জানা গেছে, পশ্চিম জেলার অধীনে ১৩টি দেবালয় আছে। এই দেবালয়গুলির প্রধান সেবায়েত হচ্ছেন জেলাশাসক।এই দেবালয়গুলির প্রতিদিনের পূজার্চনা থেকে শুরু অন্যান্য যাবতীয় খরচ বহন করে জেলা প্রশাসন। এই দেবালয়গুলি সব ঠিকঠাকভাবে চলছে কিনা তা দেখাশোনার জন্য সুকান্ত পাল নামে জেলাপ্রশাসনের একজন কর্মী নিযুক্ত আছেন। অভিযোগ, তিনিও এই জমজমাট ব্যবসায় অন্যতম অংশীদার।
লক্ষ্মী নারায়ণ বাড়িতে তিনজন পুরোহিত আছেন। এরা প্রত্যেকেই বেতনভোগী। তাদের দুবেলা খাবার খরচও জেলা প্রশাসন বহন করে।
এছাড়াও ভোগের ঘরে অর্থাৎ ভোেগ রান্নার জন্য দুজন পুরোহিত আছেন।
তারাও প্রশাসনের বেতনভোগী। এছাড়াও আছেন দুজন শ্রমিক নিত্যকাজের জন্য। একজন আছেন ঠাকুরের বাসনপত্র সব ধোয়ার জন্য। একজন ভাণ্ডারী, কীর্তন করার জন্য অর্থাৎ আরতির সময় বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য একজন কর্মী আছেন। এরা প্রত্যেকেই বেতনভোগী কর্মচারী। এছাড়াও আছেন দুজন সিকিউরিটি গার্ড। খবর নিয়ে জানা গেছে, পাঁচজন পুরোহিতের মধ্যে একজন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ।ফলে তার কাজ এখন চারজনেই চালিয়ে যাচ্ছেন।জানা গেছে,সরকার পরিচালিত দেবালয়গুলিতে অন্নভোেগ বিক্রি করার অনুমোদন নেই। কিন্তু লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে এই অন্নভোগ নিয়েই চলছে জমজমাট ব্যবসা। এতদিন লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে অন্নভোগের প্রতি থালার মূল্য ছিল ১৩০ টাকা করে। গত ১ জুন ২০২৫ইং থেকে ভোগের মূল্য আরও ২০ টাকা বৃদ্ধি করে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। সেই ভোগের গুণমান নিয়েও ভক্তদের মধ্যে নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। রীতিমতো ভোগের কূপন ছাপিয়ে এই ব্যবসা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই ভোেগ বিক্রির অর্থ কোথায় যাচ্ছে? সবথেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ভোগ রান্না করা হচ্ছে সরকারী গ্যাস ব্যবহার করে। জেলা প্রশাসন গ্যাসের বিল দিচ্ছে।
লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে এখন প্রায়ই নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন চলছে। অন্নপ্রাশন থেকে শুরু করে নানা সামাজিক অনুষ্ঠান চলছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই প্রচুর ভোগ রান্না হচ্ছে এবং বিক্রি করা হচ্ছে। যেদিন অনুষ্ঠান থাকবে সেদিনতো তিনশ থেকে পাঁচশ জনের ভোগ রান্না হয়। এই অর্থ তাহলে যাচ্ছে কোথায়? সরকার পরিচালিত দেবালয়গুলির মধ্যে লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতেই ভক্তদের সবথেকে বেশি সমাগম হয়। ফলে এই দেবালয়ে প্রণামী, গাড়ির যাত্রা, মাঙ্গলিক, দোকান যাত্রা থেকে শুরু করে আরও নানাবিধ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান লেগেই থাকে।জানা গেছে, একটি মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
অথচ যারা মাঙ্গলিক কাটানোর জন্য আসেন, তারাই যাবতীয় উপকরণের খরচ বহন করেন। প্রতিদিন প্রণামীও লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে ভালোই জমা পড়ে। তাছাড়া প্রায় প্রতিদিনই ভক্তরা নানা কিছু মন্দিরে দান করেন। এসব যাচ্ছে কোথায়? আরও অভিযোগ, বিশেষ বিশেষ দিনে ভক্তের দেওয়া নানা সামগ্রী দিয়ে পুজো করা হলেও, জেলা প্রশাসন থেকে আবার বিল করে অর্থ আদায় করা হয়। মন্দিরে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য যে কর্মী নিযুক্ত, প্রকৃত পক্ষে তার কোনো কাজই নেই কারণ আরতির সময় এক ভক্তের দেওয়া একটি বৈদ্যুতিন বাদ্যযন্ত্র চালিয়ে দেওয়া হয়।
দর্শনার্থীরাও বিভিন্ন সময় খারাপ ব্যবহারের শিকার হন সিকিউরিটি গার্ডদের কাছ থেকে। যেদিন ব্যবসা ভালো সেদিন সারাদিন এবং রাত নয়টা পর্যন্ত মন্দিরের গেট খোলা থাকবে। অন্যদিন দুপুর একটায় বন্ধ। প্রশ্ন উঠেছে দেবালয়ের পবিত্রতা রক্ষা নিয়েও। যেভাবে সরকারী সম্পদ ও সম্পত্তি ব্যবহার করে দেবালয়ে ব্যবসা জমজমাট করে তোলা হয়েছে, তা এককথায় নজিরবিহীন। প্রশ্ন হচ্ছে, প্রশাসন কি এসব কিছুই জানে না?