ছাত্র ভর্তির অনৈতিক দাবিতে উত্তাল কলেজ,শিক্ষকদের দরজা বন্ধ করে বিক্ষোভ, অশ্লীল গালাগাল!!
বিদ্যুৎ পরিষেবায় গ্রাহক বান্ধবতায় জোর,নিগমকে জনসংযোগে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ মন্ত্রীর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমকে জনগণের আরও কাছাকাছি পৌঁছে দিতে এবং গ্রাহকদের সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ শুক্রবার একগুচ্ছ নির্দেশনা জারি করলেন। নিগমের কর্পোরেট কার্যালয়ে রাজ্যের সমস্ত বিদ্যুৎ সাব ডিভিশনের আধিকারিক ও কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী পরিষ্কার ভাষায় বলেন, গ্রাহকের সমস্যা মানে নিগমের সমস্যা। নিগমের কাজ শুধু লাইন টানা বা মিটার বসানো নয়, নিগমের কাজ হচ্ছে বিশ্বাস অর্জন করা। এই ভিডিও কনফারেন্সে কর্পোরেট কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন নিগমের ব্যবস্থাপক অধিকর্তা বিশ্বজিৎ বসু, অর্থ অধিকর্তা সর্বজিৎ সিং ডোগরা, টিপিজিএল-এর কারিগরি অধিকর্তা শুভজিৎ ঘোষ, টিএসইসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার স্বপন দেববর্মা, কর্পোরেটের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শিশির দেববর্মা এবং অপর প্রান্তে গোটা রাজ্যের বিদ্যুৎ সাব ডিভিশনের কর্মী অধিকারিকরা ছিলেন। মোট ৪৯৯ টি ওয়েব লিংক থেকে গোটা রাজ্যের প্রায় দুই হাজার বিদ্যুৎ কর্মী এবং আধিকারিকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনায় মন্ত্রী বলেন, লাইন সারাই করা যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি হল কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা। হেল্পার, লাইনম্যান থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের কর্মীদের নিরাপত্তা বিধি মেনে কাজ করতে হবে। দুর্ঘটনা এড়িয়ে একটি সুস্থ, দক্ষ নিগম গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যের প্রতিটি বিদ্যুৎ সাব ডিভিশনে ২৪x৭ একটি হেল্পলাইন নম্বর স্থাপন করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, গ্রাহকেরা যেন সরাসরি অফিসে ফোন করে সমস্যার কথা বলতে পারে, এজন্য প্রতিটি সাব ডিভিশনে নোডাল অফিসার নিযুক্ত করা হবে। পঞ্চায়েত অফিস, ক্লাব, ওয়ার্ড কার্যালয় সহ বিভিন্ন জায়গায় এই নম্বর প্রচার করতে হবে।

প্রতিটি সাব ডিভিশনে একটি করে গ্রাহক সহায়তা ডেস্ক খোলার কথা জানানো হয়েছে, যেখানে প্রশিক্ষিত কর্মীরা সরাসরি গ্রাহকদের সমস্যা শুনে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করবেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বন্ধু মোবাইল অ্যাপের ব্যাপক প্রচার চালানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বন্ধু অ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলে গ্রাহকরা অনেক কিছু সহজে বুঝতে পারবেন। প্রতিটি কর্মী সম্পর্কে জেনে গ্রাহকদের জানাতে হবে। স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত বিরূপ মত বা অপপ্রচারের জবাব দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ স্মার্ট মিটারকে ভুল প্রমাণ করতে পারেনি। যদি কেউ পারেন, আমরা সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করব। এটা গ্রাহক বান্ধব প্রযুক্তি। তিনি নিগমের কর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়ে প্রচার চালাতে অনুরোধ করেন এবং নিজ নিজ সাব-ডিভিশন থেকে তথ্যভিত্তিক পোস্ট করার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর সূর্য ঘর মুফত বিজলী যোজনাকে ভবিষ্যতের বিদ্যুৎ পরিষেবা বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নিজের ছাদেই সোলার প্যানেল বসিয়ে শুধু বিল শূন্যে আনাই নয়, আয়ও করা সম্ভব। এই যোজনায় আমরা ত্রিপুরার প্রতিটি বিদ্যুৎ গ্রাহককে সচেতন করতে চাই। মন্ত্রী কঠোর ভাষায় বলেন, হুকলাইন রোধে কোনো রকম ছাড় দেওয়া যাবে না। এটা শুধু দণ্ডনীয় নয়, অন্যান্য সৎ গ্রাহকদের প্রতি অবিচার। এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। মন্ত্রী এই বৈঠকে জনসংযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১১টি প্রধান পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন: হেল্পলাইন নম্বর চালু ও প্রচার, গ্রাহক সহায়তা ডেস্ক স্থাপন, বিদ্যুৎ বন্ধু অ্যাপের সচেতনতা, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর প্রচারে জোর, সাব ডিভিশন ভিত্তিক জনসংযোগ নোডাল অফিসার নিয়োগ, এলাকার জনগণকে নিয়ে মাসিক বিদ্যুৎ জন সংলাপ কর্মসূচি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয়তা, গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তির সময়সীমা নির্ধারণ, নতুন কানেকশনে বিলম্ব রোধে নির্দেশ, নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত সংযোগ বজায় রাখা।
বিগত বর্ষা মরশুম এবং দুর্গা পূজার সময় বিদ্যুৎ নিগমের কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বিদ্যুৎ মন্ত্রী এদিন বলেন, কখনো একগলা জলে নেমে, কখনো অনিদ্রায় কাজ করে আপনারা যেভাবে কাজ করেছেন, তাতে জনগণের আস্থা বেড়েছে। এবারও সেই উদাহরণ ধরে রাখতে হবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রী ছাড়াও এই ভিডিও কনফারেন্সে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নিগমের ব্যবস্থাপক অধিকর্তা বিশ্বজিৎ বসু, অর্থ অধিকর্তা সর্বজিৎ সিং ডোগরা এবং জেনারেল ম্যানেজার স্বপন দেববর্মা। তারা জানান, মন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে জনসংযোগ ও গ্রাহক পরিষেবা উন্নত করতে আগামী মাস থেকেই গুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে কাজ শুরু করবে বিদ্যুৎ নিগম।