August 2, 2025

রাজ্যকে ঐক্যের বার্তা দিয়ে প্রদ্যোত, ভারতবিরোধী মৌলবাদী সরকার চলছে বাংলাদেশে!!

 রাজ্যকে ঐক্যের বার্তা দিয়ে প্রদ্যোত, ভারতবিরোধী মৌলবাদী সরকার চলছে বাংলাদেশে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ত্রিপুরাতে ঐক্যের বন্ধন ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষায় রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে পথে নামার বার্তা দিলেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। তিনি বলেন, সুসম্পর্ক রক্ষার সাথে দেশ ও রাজ্যের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমাদের ভাবতে হবে। রাজ্যে শান্তি সম্প্রীতি ঐক্য সংহতি রক্ষার জন্য এটাই একমাত্র পথ। তবেই সর্বক্ষেত্রে ত্রিপুরার মান উন্নয়ন সম্ভব।
মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য সহ ত্রিপুরার সব রাজাদের শাসনকালেই আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল।তবে সাম্প্রতিক বাংলাদেশের অস্তিত্ব পরিস্থিতির জন্য আবার ত্রিপুরা প্রভাবিত হতে পারে। তাই রাজ্যের সকল মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। আজ মৌসুরি থেকে এমনটাই বললেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।
তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে ১৯৯০ সালে এবং ২০০০ সালে শুরুতে রাজ্যের উপজাতি যুবকদের ভুল বুঝিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে উগ্রপন্থী বানানো হয়েছে। বাংলাদেশে ক্যাম্পেই তাদের ট্রেনিং দেওয়ার পর হাতে বন্দুক ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দেখা গেল রাজ্যের নিরীহ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। তাই বাংলাদেশিরা আমাদের কোনোদিনই বন্ধু ছিল না।শুধুমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবার এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরা সহ ভারতবর্ষের প্রকৃত বন্ধু ছিলেন। তাই চক্রান্ত করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আর এখন যে সরকারটি বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় এসেছে এরা হলেন ভারতবিরোধী মৌলবাদী সরকার। অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখল করে মৌলবাদী সরকারটি প্রথমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলির উপর হামলা চালালো। এখন এরা ত্রিপুরার বিরুদ্ধেও নানা ষড়যন্ত্র করছে। তাই ত্রিপুরার সকল স্তরের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে যাতে কোনো মৌলবাদী ত্রিপুরায় প্রবেশ করতে না পারে।


মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, ত্রিপুরায় বাঙালি, ট্রাইবাল, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সহ সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে যা বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের পছন্দ হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশেও ভোট ব্যাঙ্কের জন্য আমাদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছে। এতে সবার ক্ষতি হবে। মনে রাখতে হবে, ১৯৮০ সালের দাঙ্গায় এবং উগ্রবাদের সময় রাজ্যবাসীর কোনো লাভ হয়নি। এতে রাজ্যের সকল অংশের মানুষের ক্ষতি হয়েছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক লাভালাভের জন্য আমাদের ভাবনাচিন্তার পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। তাই আমরা এডিসি এবং নন এডিসি এলাকা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছি। এতে আদতে ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যবাসীর।
তিনি বলেন, রাজ্যে আমাদের ভাবনা চিন্তায় ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। মাত্র ৫ শতাংশ ফারাক এ ঘিরে আমাদের মধ্যে বিভাজনের তৈরি করা হচ্ছে। নতুন ত্রিপুরা গড়তে হলে আমাদেরই ফারাক ভুলে যেতে হবে। এ লক্ষ্যেই কাজ করছি আমরা। যা একটি অংশের সহ্য হচ্ছে না।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের দাবি, আমি যখন বাংলাদেশের বর্তমান মৌলবাদী ভারতবিরোধী সরকারের অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে কথা বলছি, তখনই আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক বলা হচ্ছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তিনি বলেন, মহারাজ বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের নাতি আমি। আমাদের রক্তে ষড়যন্ত্র বলে কিছু নেই। আমাদের পূর্বপুরুষরা ত্রিপুরায় মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির, কসবা কালী মন্দির, শিববাড়ি, জগন্নাথ বাড়ি, লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি, উমা মহেশ্বরী মায়ের মন্দির, বুদ্ধ মন্দির, দুর্গাবাড়ি সহ বিভিন্ন মন্দির তৈরি করে গিয়েছেন। তাই এখন আমাদের ভাবনা চিন্তার পরিবর্তন করতে হবে।
তার অভিযোগ, আমাদের প্রধান শত্রু হলো বাংলাদেশ। একসময় উগ্রপন্থীদের গড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। যার ফলে ত্রিপুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের সকল অংশের যুবক যুবতীদের বুঝতে হবে-হিংসা করলে আদতে দুই পক্ষেরই ক্ষতি হয়। তাই ঐক্যের বন্ধন ও ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষায় সকলকে তিনি একসাথে নামার আহ্বান জানান।
জানা গিয়েছে, আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, অবৈধ অনুপ্রবেশ ইস্যুতে ভারতের নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকে বসছে মথার সুপ্রিমোর নেতৃত্বে মন্ত্রী বিধায়কদের প্রতিনিধি দল। এরপর ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ইস্যুতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সাথে বৈঠকে মিলিত হবেন তারা। শুধু তাই নয় রাজ্যের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথেও বৈঠকের জন্য নয়াদিল্লীতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে মথা নেতৃত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *