August 2, 2025

দুর্নীতিতে ডুবে গেছে গোটা প্রশাসন, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই চাকরি ছাড়ছেন দুই অফিসার!!

 দুর্নীতিতে ডুবে গেছে গোটা প্রশাসন, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই চাকরি ছাড়ছেন দুই অফিসার!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কর্মসংস্থানে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। উত্তর জেলায় দুই দপ্তরের দুই আধিকারিক চাকরি ছাড়ছেন। অভিযোগ, উত্তর জেলা প্রাক্তন এক জেলা শাসকের নেতৃত্বে কয়েক কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। অথচ, সরকার এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সেই কারণে উত্তর ত্রিপুরা জেলা আজ উন্নয়নের আড়ালে প্রশাসনিক ধ্বংসস্তূপ। সোশ্যাল মিডিয়ার আলোকচিত্রে উন্নয়নের ঢাকঢোল বাজিয়ে বাস্তব সমস্যাকে আড়াল করছে প্রশাসন।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উদ্বোধন, সেমিনার আর রিপোর্টের মোড়কে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে দুর্নীতি আর অব্যবস্থার গন্ধ।কিন্তু এবার সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জেলায় কোটি কোটি টাকা সরকারী বরাদ্দ লোপাট হয়েছে আর তার নেপথ্যে রয়েছেন এক ভূতপূর্ব জেলা শাসক।
সেই সময়েই রিয়াং শরণার্থীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের নামে উত্তর জেলায় মাটি সমতল প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা গায়েব হয়েছে। প্রশাসনের ফাইল বলছে উত্তরে মোট ১১০০০ মিটার পেভার ব্লকের রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছে অর্থ কিন্তু মাঠে তার ছিঁটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না।একইভাবে ৩০০ মিটার সিমেন্ট-কংক্রিট রোডের কাগজে অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে রাস্তা কোথায় -সেই প্রশ্নের উত্তর নেই।
এই লোপাট বাণিজ্যের পুরো ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে রয়েছে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সিনিয়র কয়েকজন আধিকারিক। এদিকে উত্তরের পানীয় জল সম্পদ দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার অনিমেষ দাস সম্প্রতি বি আর এস নিয়ে চাকরি ছেড়েছেন।
মঙ্গলবার হর্টি কালচার জেলাস্তরের আধিকারিক মনোজিৎ মজুমদারও চাকরি চাড়ার আবেদন করেছেন। কি কারণে একের পর এক অফিসাররা হঠাৎ করে স্বেচ্ছাবসর নিচ্ছেন? উত্তর লুকিয়ে রয়েছে। দেখা উত্তরের সরকারী বরাদ্দের টাকা গেছে কিছু প্রভাবশালী সরকারী কর্মচারীর পকেটে। অথচ সরকারের অবস্থান অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ। না আছে কোনও তদন্ত, না আছে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা। একদিকে প্রশাসন যখন উন্নয়নের নামে সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও কনফারেন্স আর উদ্বোধনের ছবি পোস্ট করে বাহবা কুড়োচ্ছে অন্যদিকে গোটা জেলার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই, ওষুধ নেই, নার্সের অভাব প্রকট। স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকট চরমে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের মুখে অথচ প্রশাসন যেন ঘুমিয়ে পড়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেই। যেন এই দুর্নীতির নাটক রচনায় একাংশ হয়ে উঠেছে গোটা সরকারী যন্ত্র।
উত্তর জেলার সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন তুলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে কি হাসপাতালের ওষুধের ঘাটতি মেটানো যাবে? সেমিনার করে কি পড়াশোনার অবনতি রোধ হবে? রিপোর্ট লেখে কি মাটি সমতলের লোপাট ঢেকে রাখা যাবে? দেখা যাচ্ছে এতটাই অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে প্রশাসনের ভিতরের সৎ আধিকারিকরাও দমবন্ধ অনুভব করছেন। পর পর দুই সিনিয়র আধিকারিক নিজের সম্মান বাঁচাতে চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন।
উত্তর জেলা প্রশাসনের ভেতরের পচা অবস্থা দেখে আর সহ্য করতে পারেননি। এদিকে রিয়াং শরণার্থীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের নামে মাটি সমতল প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা লোপাট হয়েছে।
লোকের ট্যাক্সের টাকা চলে গেছে দুর্নীতিবাজ আধিকারিকদের পকেটে, আর যাঁরা এর প্রতিবাদ করছে তাঁরা চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এটা কী প্রশাসনের ভেতরের ‘ক্লিন আপ’ না কি সৎ লোকদের সরিয়ে দুর্নীতির খেলা চালিয়ে যাওয়ার কৌশল?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *