August 2, 2025

বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে আরও ২৫ স্কুল, তোড়জোড় শিক্ষা দপ্তরের!!

 বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে আরও ২৫ স্কুল, তোড়জোড় শিক্ষা দপ্তরের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের পঠনপাঠনের পরিকাঠামোর মান উন্নয়নের কাজ এখনও অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যেকদিন ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে নিয়মিত পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। যদিও এ বছর বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে দশম ও দ্বাদশের ফলাফল মান বাঁচলো শিক্ষা দপ্তরের। এর থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজ্য সরকারের আরও ২৫ টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে সংযুক্ত করার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
অবাক করার বিষয় হলো রাজ্য সরকারের বর্তমান ১২৫ টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের পড়াশোনার শিক্ষক সংকটের দৌলতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হচ্ছে। শুধু তাই নয় এই ১২৫ টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুল পরিকাঠামোর অভাবেও ধুঁকছে। এরই মধ্যে আবার ২৫ টি সরকা স্কুলকে প্রথম ধাপে বিদ্যাজোতি প্রকল্পের অধীনে আনার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আরও ২৫ টি স্কুলকে এবং তৃতীয় ধাপে আরও ৫০ টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অধীনে আনা হবে। এমনকী স্কুলগুলিকে সিবিএসসি বোর্ডে শামিল করা হবে।

শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের দশম ও দ্বাদশে শোচনীয় ফলাফল হয়েছিল। এমনকী ওই সময়ে এক বৈঠকে বিদ্যাজোতি প্রকল্পে থেকে ৩৭টি স্কুলকে বাতিলের জন্যেও শিক্ষা দপ্তরে আলোচনা হয়। তবে সংবাদপত্রে এ খবর প্রকাশের পর এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারও করেছিল দপ্তর। আর ২০২৫ সালে দশম এবং দ্বাদশ মানের পরীক্ষার ফলাফল মোটামুটি ভালো হওয়ার সাথে নয়া ২৫ টি স্কুলকে এই বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে শামিলের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। গত জানুয়ারী মাসেই নয়া ২৫ টি সরকারী স্কুল বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে শামিলের সিদ্ধান্ত হয়। এই সংবাদ ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। অবাক করার বিষয় হল রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল ১২৫ টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে ১৪০০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হবে। যা বিগত তিন বছরেও হয়নি। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল প্রথমে ১০০ টি বিদ্যাজ্যোতিস্কুলে একাডেমিক কাউন্সিলার ১০০জন, স্পেশাল এডুকেটর ১০০ জন, ফিজিক্যাল এডুকেশন চিটার ১০০ জন, প্রি-প্রাইমারি টিচার প্রত্যেকটি স্কুলের জন্য ৩ জন, পিজিটি শিক্ষক শিক্ষিকা যথাক্রমে সোসিওলজি ৭৫ জন, সাইকোলজি ৭৫ জন, জিওগ্রাফি ৭৫ জন, ইকনোমিক্স ৭৫ জন। লাইব্রেরিয়ান ১০০ জন, স্টাফ নার্স, আয়া সহ ১৪০০ জন, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হবে। গত সাড়ে তিন বছরে এর মধ্যে ত্রিশ শতাংশও শিক্ষক-কর্মচারী বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের জন্যে নিয়োগ করা হয়নি।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর নয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার জন্য জেলা, মহকুমা সহ রাজধানী মিলিয়ে প্রায় ৯৮ টি সরকারী স্কুলকে প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত করেছে শিক্ষা দপ্তর। এর মধ্যে ৮ টি স্কুল এডিসি এলাকায়। এখন এই ৯৮টি স্কুল থেকে ২৫ টি স্কুলকে বাছাই করা হবে। এ লক্ষ্যে শিক্ষা দপ্তরের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বিদ্যাজোতি স্কুলে পাঠরত ছাত্রছাত্রী অনুপাতে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ নেই। শুধু তাই নয়, বর্তমান ১২৫ টি স্কুলের অধিকাংশ গ্রন্থাগার নেই। আর যে সব স্কুলে লাইব্রেরি আছে, এই স্কুলগুলিতে আবার পাঠ্যবই নেই। বসার বেঞ্চ নেই, ব্লেক বোর্ড নেই। পানীয় জল নেই। নেই শৌচাগার। তবে এক্ষেত্রে হুঁশ নেই সরকার ও দপ্তরের। যার খেসারত প্রদান করছে রাজ্যের হাজারো ছাত্রছাত্রীরা। জানা গিয়েছে, এখন ২৫ টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অধীনে এনে সিবিএসই-র পাঠ্যক্রম চালুর পথে শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর ১২৫ টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের পশ্চিম জেলায় ৩০ টি স্কুল। ঊনকোটি জেলায় ১১ টি, গোমতী জেলায় ১৬ টি, দক্ষিণ জেলায় ১২ টি, উত্তর জেলা ১৫ টি, সিপাহিজলা জেলায় ১৬ টি, খোয়াই জেলায় ১২ টি এবং ধলাই জেলায় ১৩ টি বিদ্যালয় রয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো সিবিএসই প্রশ্নপত্রে এই ১২৫ টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল করতে পারছেন না ছাত্রছাত্রীরা। বাংলা স্কুল থেকে রাতারাতি ইংরেজি মাধ্যমে স্কুলে পরিবর্তন এবং সিবিএসসি বোর্ডে শামিলের খেসারত দিচ্ছেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের স্কুল হওয়া স্বর্তে বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ১২০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা করে আদায় করেছে শিক্ষা দপ্তর। আবার পড়াশোনার পরিকাঠামো নেই। তাই ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *