August 2, 2025

শহরে যানজট বাড়লেও ঘুমে প্রশাসন!!

 শহরে যানজট বাড়লেও ঘুমে প্রশাসন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এই শহর এখন শুধুই শহর নয়।বলতে হবে স্মার্ট সিটি। তবে কি শুধুই কাগজে কলমে, নাকি বাস্তবে! ছবি দেখে অন্তত বোঝার উপায় নেন। মনে হবে কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে হঠাৎ করে সরু রাস্তায় একসাথে দু-চারটে গাড়ি এলে যেমনটা হয়, তাই। কিন্তু না। ছবিটি এই শহরেরই। তথাকথিত স্মার্ট সিটির। যে শহরে কোনো মন্ত্রী আমলা নয়, ভুক্তভোগী হতে হয় নিত্য যাত্রীদের।
শহর আগরতলা কোনো নতুন নয়। এই শহরে একসময় হাতোগোনা শখানেক গাড়ির আনাগোনা থাকলেও সময়ের সাথে সাথে এখন লাখো গাড়ির আনাগোনা বেড়েছে এই শহরে। রাজপথের বহর বলতে গেলে আগে যা ছিলো, নামমাত্র কিছুটা এদিক সেদিক হয়েছে ঠিকই, তবে তুলনামূলকভাবে নেহাতই কম। যে শহরে সে রকমভাবে আজ অবধি গড়ে উঠলো না পার্কিং প্লেস, সেখানে দিনের পর দিন বেড়ে যাওয়া গাড়িগুলি ঠাঁই নেবে কোথায়? এই প্রশ্নও উঠছে এখন। সাধারণ জনগণ বলছেন, পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়া সত্ত্বেও নিদ্রাভঙ্গ হচ্ছে না প্রশাসনের। রাস্তার পাশে ছোট বড় গাড়ি কিংবা যে কোনো ধরনের যানবাহন রেখে সামান্য উঁকি ঝুঁকি মারার পর্যন্ত সুযোগ থাকছে না। প্রয়োজনের খাতিরে এই শহরে নানা অফিস আদালত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজার হাটগুলিতেই বা কীভাবে যাবেন সাধারণ জনগণ?স্মার্ট সিটির পুলিশবাবুরা অনেক সময় তাই নিজেদের স্মার্ট প্রমাণ করতে বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায়।তাতেই কি সমাধান?
ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলছেন, আনস্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থায় ভীষণভাবেই বেকায়দায়ও পড়ে যাচ্ছেন তারা নিজেরাই। এই অবস্থায় প্রশাসনিক নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও নানা অনিয়ম বেনিয়ম দেখেও অনেক সময় আনস্মার্ট হয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে পুলিশবাবুদের। অকপটে বেড়ে চলেছে নিত্য যানজট।
মাত্র কদিন আগেও যানজট রুখতে একটি বিশেষ অভিযান চালায় ট্রাফিক পুলিশ। দপ্তরের পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা অনেকেই বেরিয়েছেন সেই অভিযানে। রাজধানীর উত্তর গেট এলাকায় এমনই এক অভিযানে বেরিয়ে ভীষণভাবেই বেকায়দায় পড়তে দেখা গিয়েছে তাদেরকেও। নামকাওয়াস্তে এমন অভিযান অবশ্য নতুন নয়। কদিন বাদে বাদেই রাজ্য পুলিশ এবং ট্রাফিক দপ্তরের পক্ষ থেকে শহর আগরতলার বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকায় গিয়ে অভিযান চালাতে দেখা যায় তাদের।নিগমবাসীদের অনেকেই বলছেন, বাস্তব ক্ষেত্রে এ ধরনের অভিযানের নিট ফল শূন্য ছাড়া আর কিছুই নয় পথচারীদেরও অনেকেই তাদের দেখে হাসেন কিংবা টিপ্পনিও কাটেন। অভিযান শেষ হতেই ওই একই অবস্থা। কার্যক্ষেত্রে রোখা যাচ্ছে না যানজট। উপরন্তু দিনের পর দিন শহর আগরতলার বুকে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলা থেকে আগত যানগুলিও বাড়িয়ে তুলছে ভিড়। একদিকে আনাগোনা বাড়ছে যানবাহনের, অন্যদিকে পার্কিং প্লেসের অভাবে প্রায় প্রতিদিনই রাজধানী আগরতলার বিভিন্ন রাস্তাঘাটগুলিতে ঠাঁই নিচ্ছে বহু যান। স্বাভাবিকভাবেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনেকেই পৌঁছতে পারছেন না গন্তব্যে। সাথে স্মার্ট সিটির আনস্মার্ট ব্যবস্থা তো রয়েছেই। একসাথে বটতলা বাজার এলাকা থেকে রামনগর এলাকার বিভিন্ন রাস্তাগুলিতে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করায় আরও বেগতিক অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় এই শহরের। একই অবস্থা পোস্ট অফিস চৌমুহনী থেকে শুরু করে কামান চৌমুহনী, আরএমএস চৌমুহনী এলাকাগুলিতে। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্মাণ কাজের দৌলতে সকাল থেকে রাত অবধি তীব্র যানজট পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। অনেক সময় ড্রেন নির্মাণের দৌলতে পাশ কাটিয়ে অন্য রাস্তাও ধরতে হচ্ছে যানগুলিকে। অবশ্য মন্ত্রী আমলারা এই যানজটের শিকার হচ্ছেন না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ জনগণ। তারা বলছেন, মন্ত্রী আমলারা যখন রাস্তায় নামেন তখন আগে থেকেই ট্রাফিকবাবুরা দায়িত্ব নিয়ে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ করে দেন তাদের। কিন্তু সাধারণ জনগণের ভোগান্তি কিন্তু বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *