ছাত্র ভর্তির অনৈতিক দাবিতে উত্তাল কলেজ,শিক্ষকদের দরজা বন্ধ করে বিক্ষোভ, অশ্লীল গালাগাল!!
জরুরি অবস্থার ইতিহাস ভুললে চলবে না: মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রদেশ যুব মোর্চার পর সোমবার রাজধানী আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে মক পার্লামেন্টের আয়োজন করে প্রদেশ মহিলা মোর্চা। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জরুরি অবস্থার কালো দিন নিয়ে স্ববিস্তারে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তার কথায়, তৎকালীন সময়ে জরুরি অবস্থা ছিলো সংবিধান ও গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আক্রমণে।এর ইতিহাস সকলেরই জানা উচিত,ভুললে চলবে না।জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য এদিন দেশের তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আয়োজিত মক পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত জরুরি অবস্থার দিনগুলি ছিলো একটি অন্ধকারময় অধ্যায়। অনেক কিছু ভুলে গেলেও বিশেষ করে দুঃখের এই দিনগুলিকে ভুললে চলবে না আমাদের। তিনি বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা আরোপ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। এরপর দশ মার্চ যখন ফলাফল ঘোষণা করা হয়, তখন তিনি জয়ী হন।কিন্তু তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ নারায়ণ এই ফলাফল মেনে নিতে পারেননি। এলাহাবাদ উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ জানালে বিচারপতি জগমোহন
লাল সিনহা ১৯৭২ সালের ১২ জুন
গোটা নির্বাচনকে বাতিল বলে ঘোষণা করেন।এভাবেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে সামনে এনে আরও একবার জনসমক্ষে জরুরি অবস্থার দিনগুলির কথা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরবর্তী সময়ে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সুপ্রিম কোর্টের দরজায়ও কড়া নাড়েন। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি কৃষ্ণা আইয়ার তখন বলেছিলেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন তবে ভোট দেওয়া কিংবা কোনও সরকারী পদে থাকতে পারবেন না। এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের উপর চাপ সৃষ্টি করে (১৯৭৫ সালে) জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জরুরি অবস্থার দিনগুলি কালো দিন হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায়। তিনি বলেন, পরবর্তী প্রজন্মকে এই কালো দিন সম্পর্কে অবগত করানোর পাশাপাশি গোটা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্যই মক পার্লামেন্টের আয়োজন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জরুরি অবস্থার ঘোষণা ছিলো ভারতীয় সংবিধানের উপর সরাসরি আক্রমণ। এদিন কংগ্রেসের শাসনকালে গণতন্ত্রকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছিলো তারও খুঁটিনাটি তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
উপস্থিত ভারতীয় জনতা পার্টি ত্রিপুরা প্রদেশের সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ১৯৭৫ সালে ক্ষমতা রক্ষার স্বার্থে ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর এক নির্মম আঘাত নেমে আসে। জরুরি অবস্থার নামে সংবিধানকে পদদলিত করে দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছিলো তখন। গণতন্ত্রকে হত্যা করে ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও পদ টিকিয়ে রাখার জন্য গৃহীত এই সিদ্ধান্ত ছিলো ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায়। জরুরি অবস্থার ৫০তম বছরে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে সেই তথ্যই তুলে ধরলেন তিনিও। তিনি বলেন, এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে গণতন্ত্র ও সংবিধানের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এদিন বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন পুরো দেশে সংবিধান লঙ্ঘন করে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিলো। সে সময় স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার পর্যন্ত পদদলিত হয়েছিলো। হাজারো বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করা, সংবাদপত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, মানুষের বাস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া, সবই হয় তখন। অন্যদের মধ্যে প্রদেশ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাস, ভারতীয় জনতা মহিলা মোর্চা ত্রিপুরা প্রদেশের সভানেত্রী মিমি মজুমদারও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জেলা ও মণ্ডল স্তরের বিভিন্ন নেত্রী, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ছাত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।