August 2, 2025

নেকনজরে কমিশন!!

 নেকনজরে কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাহুল গান্ধীর নেকনজরে নির্বাচন কমিশন।কিছুদিন আগে পত্রিকায় নিবন্ধ লিখে কংগ্রেস নেতা ও লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্র ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে তোপ দেগেছিলেন।তার এই নিবন্ধ ছাপার পর দেশজুড়ে একেবারে হৈচৈ পড়ে যায়। যদিও এরপরও নিরুত্তর, ভাবলেশহীন নির্বাচন কমিশন। তবে বরাবরের মতোই নির্বাচন কমিশন বলেছে, এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।সাম্প্রতিককালে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুরুয়াত হয়েছিলো গত লোকসভা ভোটের সময়কাল থেকেই।গত লোকসভা ভোটে সাতটি পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো দেশে। দেখা গেছে একেটি পর্যায়ে ভোটের কয়েকদিন পর নির্বাচন কমিশন ভোটের চূড়ান্ত হার প্রকাশ করে। এতে ৭-৮% পর্যন্ত ভোট বৃদ্ধিও হয়ে যায়। কিন্তু বিরোধীরা এ নিয়ে সরব হলেও নিরুত্তাপ থাকে নির্বাচন কমিশন। গত লোকসভা ভোটের সময়েই জাতপাত নিয়ে প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছিলো খোদ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোন প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
এরপর কয়েকমাস পরই হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট হয়। হরিয়ানায় গত লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছিলো কংগ্রেস এবং সেই নিরিখে গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে বলে সবাই ধরে নিয়েছিলো। এমনকী ভোটের পর সমস্ত মিডিয়া তাদের এটি পোলে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে বলে জানিয়েছিলো। কিন্তু দেখা গেছে ভোটের পর সমস্ত জল্পনাকল্পনাকে পেছনে ফেলে বিজেপিই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচন কমিশনে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে বিরোধী কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এগুলির কোন হিল্লে হয়নি।
এর পর আসে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন। মহারাষ্ট্রে লোকসভা ভোটে ভালো ফল করেছিলে বিরোধী দল।সেই নিরিখে তারা আশায় বুক বেঁধেছিলো যে বিধানসভায় ভালো করবে তারা। কিন্তু দেখা গেল যে, মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে বিশাল জয় অর্জন করে শাসক বিজেপি-শিবসেনা- এনসিপি (অজিত) জোট।মহারাষ্ট্র ভোটের পরেও নির্বাচন কমিশনে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এর কোন সদুত্তর দেয়নি আজ পর্যন্ত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লেখেন। তাতে নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তোলেন রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য ছিল, ২০১৯ সালের লোকসভা থেকে
২০২৪ সালের লোকসভা ভোট পর্যন্ত ৫ বছরে মহারাষ্ট্রে যেখানে।ভোটার বেড়েছে ৩২ লক্ষ, সেই জায়গায় ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকে বিধধনসভা ভোটে মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে সে রাজ্যে ভোটার বেড়েছে ৪২ লক্ষ। এত বিশাল সংখ্যক ভোটার কোত্থেকে এলো এর জবাব চেয়েছিলো রাহুল গান্ধী। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোন গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। রাহুলের আরও বক্তব্য ছিল- লোকসভা ভোটে যে কেন্দ্রগুলিকে বিরোধী জোট ভালো ফল করেছিলো সেই আসনগুলিতেই বেছে বেছে ভোটার বেড়েছে। রাহুল গান্ধীর মতে, এতে যে জল মেশানো হয়েছে এবং ভুয়ো ভোটার ছিল তা পরিষ্কার। রাহুল গান্ধীর এই নিবন্ধ প্রকাশিত হতেই দেশজুড়ে একেবারে হৈচে পড়ে যায়। নির্বাচন কমিশন বলে যে, এতদিন পরে রাহুল গান্ধীর এই ধরনেরর অভিযোগ উত্থাপন করার যৌক্তিকতা কী? শাসক বিজেপি বলেছে, হারের পর মুখ লুকাতে নতুন পন্থা আবিষ্কার করেছে কংগ্রেস।
এদিকে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে যে, এবার থেকে ৪৫ দিনের পর নির্বাচনের কোন সিসিটিভি ফুটেজ, ওয়েবকাস্টিং কিংবা ভিডিও ফুটেজ আর রাখবে না নির্বাচন কমিশন। এতেও কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য- সরকারী দলের সাথে নির্বাচন কমিশনের আগে থেকেই ম্যাচ ফিক্সিং চলছে। নির্বাচন কমিশন ৪৫ দিন পর নষ্ট করে ফেলবে সমস্ত তথ্য, এর অর্থ কী? এরা তথ্য চাপাতে চাইছে। নির্বাচন কমিশন জবাব দিতে চাইছে না। তাদের জবাব দেবার কথা। তারা উল্টো তথ্য সংরক্ষণ না করার কথা বলছে। এটা চলতে পারে না। বিহার ভোটেও বিরোধীদের দমাতে নির্বাচন কমিশন এবং শাসক দলের মধ্যে ম্যাচ ফিক্সিং চলছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের সাথে প্রায় প্রকাশ্যেই সংঘাত চাইছে কংগ্রেস। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ভাবলেশহীন ও নিরুত্তাপ। কমিশনা উল্টো বলেছে, রাহুল গান্ধী কেন তাদের সাথে কথা বলছে না। আপাতত বিহার ভোটের দিকেই তাকিয়ে বিরোধী দল। শাসক দল কী গেম প্ল্যান করেছে তা ভোটের পরই বোঝা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *