ছাত্র ভর্তির অনৈতিক দাবিতে উত্তাল কলেজ,শিক্ষকদের দরজা বন্ধ করে বিক্ষোভ, অশ্লীল গালাগাল!!
চাকরি পাচ্ছে আরও ৫ পরিবার, বাম রাজত্বে রাজনৈতিক হত্যার তথ্য তুলে ধরে বিস্ফোরক রতন!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যে রাজনৈতিক খুন হওয়া আরও পাঁচজনের পরিবারের যোগ্যতম ব্যক্তিকে সরকারী চাকরি প্রদানের সুপারিশ ও অনুমোদন দিল স্ক্রটিনি কমিটি। এই কমিটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন রাজ্য মন্ত্রিসভার বরিষ্ঠ সদস্য রতন লাল নাথ। তাঁর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গত ১৯ জুন ২০২৫ ইং। ওই বৈঠকেই স্ক্রুটিনি কমিটি রাজ্যে রাজনৈতিক খুন হওয়া, বিশেষ করে বাম জমানায় আরও পাঁচজনের পরিবারের উপযুক্ত সদস্যকে সরকারী চাকরি প্রদানের সুপারিশ করেছে। খুব শীঘ্রই ওই পরিবারগুলির যোগ্য সদস্যকে নিয়োগপত্র (নিয়মিত) প্রদান করা হবে। বৈঠকে স্ক্রুটিনি কমিটি যে পাঁচ পরিবারের যোগ্য সদস্য বা সদস্যাকে চাকরি প্রদানের সুপারিশ করেছে, সেগুলো হলো,সিধাই থানার অন্তর্গত জগৎপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত বিজয় দাসের স্ত্রী অঞ্জলি দাস। বিজয় দাসকে গত ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ ইং খুন করা হয়েছিল। সিধাই থানার অন্তর্গত, তারানগর গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত নিখিল চন্দ্র দেবের কন্যা মধুমিতা দেব।নিখিল দেব কে গত ১৭ মে ১৯৯৩ সালে খুন করা হয়েছিল। বাইখোড়া থানার অন্তর্গত দক্ষিণ জোলাইবাড়ি বাসিন্দা প্রয়াত সুব্রত দত্তের ভ্রাতুষ্পুত্র অরুপ দত্ত।সুব্রত দত্ত কে খুন করা হয়েছিল ১৫ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে।আগরতলা পূর্ব আড়ালিয়া রাধাকিশোরনগরের বাসিন্দা প্রয়াত দীপক কুমার বিশ্বাস এর পুত্র অভিজিৎ বিশ্বাস। দীপক কুমার বিশ্বাস খুন হয়েছিলেন ২৫ নভেম্বর ২০০৩ সালে। আগরতলা কুঞ্জনবন গোর্খাবস্তী এলাকায় বাসিন্দা প্রয়াত তপন কুমার ভৌমিকের পুত্র তুষার কান্তি ভৌমিক। অভিযোগ, তপন কুমার ভৌমিক বর্তমান বিরোধী দল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছেন। তাঁর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছিল গত ২ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখে। ১৩ মার্চ ২০২৩ ইং তিনি মারা যান।
শনিবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে করে এই তথ্য জানান স্ক্রুটিনি কমিটির চেয়ারম্যান তথা রাজ্য মন্ত্রিসভার বরিষ্ঠ সদস্য রতন লাল নাথ। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৯টি আবেদন জমা পড়েছে। এর আগে ১৮ জনকে চাকরি প্রদান করা হয়েছে। ৫ টি আবেদন বাতিল করা হয়েছে। কেননা, এগুলি তদন্ত করে দেখা গেছে, রাজনৈতিক হত্যা নয়। গত ১৯ জুন ২০২৫ ইং, ৮ টি আবেদন স্ক্রুটিনি কমিটির পর্যালোচনা ও বিবেচনার জন্য তোলা হয়েছিল। কমিটি সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে ৫ টি আবেদন মঞ্জুর করেছে এবং তাদের চাকরি প্রদানের সুপারিশ করেছে। তিনটি আবেদনের মধ্যে ১ টি আবেদনে পুলিশের কোনও
রেকর্ড নেই। তাই এটি বাতিল করা হয়েছে। আরেকটি আবেদনে প্রার্থী প্রয়োজনীয় কাগজ (ওয়ারিশ) জমা দিতে পারেনি। তাই এটি আরেকটি সুযোগ প্রদান করা হয়েছে।আরেকটি আবেদন রাজনৈতিক হত্যা নয়। তাই এটিও বাতিল করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, এছাড়াও আরও ৮টি আবেদনের তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।
এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বাম জামানায় সীমাহীন রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক হত্যার তথ্য তুলে ধরে সিপিএমকে তুলোধুনো করেছেন। তিনি বলেন, বাম জমানায় এই রাজ্যে কি পরিমাণ রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং রাজনৈতিক খুন হয়েছে, তা গুনে শেষ করা যাবে না। ওই সময়ে শত শত কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছেন। মারাত্মক সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। ভাবতেই শরীর শিউরে উঠে যে আজ কংগ্রেস দল সিপিএমের প্রেমে পাগল। সিপিএম কংগ্রেস একে অপরের সাথে ঢলাঢলি করেছে। চৈতন্য মহাপ্রভুকে পর্যন্ত এরা. হার মানিয়ে দিচ্ছে। গোটা রাজ্যের মানুষ আজ সিপিএমে-কংগ্রেসের প্রেম দেখে ছিঃ ছিঃ করছে। মন্ত্রী বলেন, বাম জামানায় শুধু রাজনৈতিক হত্যা ‘করাই নয়, হত্যার পর থানাগুলি থেকে সমস্ত রেকর্ড পর্যন্ত গায়েব করে দিয়েছে। যে কারণে বহু পরিবারের সদস্য-সদ্যসা সরকারের কাছে আবেদন পর্যন্ত করতে পারছে না। মন্ত্রী বলেন, এই ধরনের জঘন্য কার্যকলাপ, ভূ-ভারতে কোথাও আছে কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এমন কাজ কমিউনিস্ট ছাড়া অন্য কেউ করতে পারে না। মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক খুন হওয়া গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষন নয়। এটা যে কোনও সরকারের চরম ব্যর্থতা। অথচ তারাই গণতন্ত্রের কথা বলে। এদের লজ্জাও নেই। ২০১৮ সালে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আমরা কিন্তু কে কোন দলের বিচার করিনি। আমাদের সরকারের মনে হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়ানোর উচিত। রাজনৈতিক খুন হয়েছে এমন পরিবারে উপযুক্ত একজনকে সরকারী চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা সেই কাজটাই করছি আন্তরিকভাবে।