August 2, 2025

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা!!

 মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা!!

অশান্ত গোটা পৃথিবী।পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, যেন বিশ্বে প্রতিদিন একটি নতুন যুদ্ধের ফ্রন্ট খুলছে। গোটা বিশ্ব যেন এখন আগ্নেয়গিরির মুখে দাঁড়িয়ে। যেদিকে তাকাই সেদিকেই যেন যুদ্ধের দামামা বেজে চলেছে। এর মধ্যে আবারও ইজরায়েল এবং ইরান মুখোমুখি। হামলা–পাল্টা হামলায় গোটা বিশ্বেই নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। ইজরায়েল-ইরান মুখোমুখি সংঘর্ষ কোনও সাধারণ ঘটনা নয়। কারণ ইজরায়েল আগে ইরানে উপর একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বিমান হামলা চালিয়েছে। খবরে প্রকাশ এই হামলায় ইরানের পরমাণু কেন্দ্র থেকে শুর করে বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইজরায়েলি হামলায় ইরানের একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ।
ইজরায়েলের এই হামলার পর গোটা বিশ্বেই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।কেননা, ইরান যে পাল্টা আঘাত করবে,সেটা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। আশঙ্কাকে সত্যি করে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই বড়সড় পাল্টা প্রত্যাঘাত হানল ইরান। রাতের অন্ধকারে ইজরায়েলের দিকে ধেয়ে এলো একের পর এক মিসাইল ও ড্রোন।তেল আভিভ শহরের আকাশ থেকে নেমে এলো একের পর এক আগুনের গোলা।গোটা নগরী কেঁপে উঠলো সাইরেনের শব্দে। বাদ পড়লো না জেরুজামও। খবরে প্রকাশ, এক ঘন্টা পাঁচ মিনিটে ইরান দুশোটি মিসাইলও ড্রোন ছোড়ে।
কিন্তু উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, শত্রুপক্ষের যাবতীয় আক্রমণ এতদিন মাঝ আকাশেই রুখে দিতে পারতো ইজরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধকারী আধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে। এরজন্য গর্ববোধ করতো ইজরায়েল। কিন্তু শুক্রবার গভীর রাতে ইরানের হামলা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে ইজরায়েল। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলি সেই ইঙ্গিতই দিয়েছে। ফলে গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক মহল। এর আগে ইরানের ৩৩০ টিরও বেশি জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। টার্গেট ছিল মলত ইরানের পরমাণ ও মিসাইল ঘাঁটিগুলি।
আত্মরক্ষার স্বার্থে ওই হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করে ইজরায়েল। তারপরই পাল্টা হামলায় জবাব দেয় ইরান।খবরে প্রকাশ, ইজরায়েলের উপর ইরানের এই হামলার পর, উপসাগরীয় দেশগুলোর আরও বড় হামলার আশঙ্কায় আমেরিকা পশ্চিম এশিয়ার দিকে নিজেদের যুদ্ধজাহাজ এবং সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করতে শুরু করেছে বলে খবর।
এরই মধ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি আরও জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে। ইরানকে সরাসরি হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেছে নয়া পরমাণু চুক্তি না মানলে আরও ভয়ঙ্কর হামলার মুখে পড়তে হবে। তখন আর কিছুই আস্ত থাকবে না। ট্রাম্পের এই হুমকি প্রকাশ্যে আসার পর, জল্পনা সত্য প্রমাণিত হলো।ইরানের উপর আচমকা ইজরায়েলি হামলার নেপথ্যে আমেরিকার হাত রয়েছে কিনা-তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা চলছিল। এবার সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প যা লিখেছেন, তাতে অনেকের কাছেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায় যে, প্রচ্ছন্ন নয়, ইজরায়েলি হানার নেপথ্যে আমেরিকার সরাসরি ‘মদত’ রয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, আগামীকালই ১৫ জুন ওমানে পরমাণু বৈঠকে বসার কথা আমেরিকা এবং ইরানের। আমেরিকা কিছুতেই চায় না ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ইরান অনেকটা এগিয়ে গেলেও, আরও কিছুটা পথ হাঁটতে হবে। কিন্তু আমেরিকা চায়, এখানেই থেমে যাক ইরান। অনেকের বক্তব্য, ওই বৈঠকের আগে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, আমেরিকা ইজরায়েলের পাশেই রয়েছে। ইজরায়েলের সিদ্ধান্তে তাদের সমর্থন রয়েছেন।
অন্যদিকে, ইরানের আক্রমণের পর ভয়ঙ্কর অ্যাকশন মুডে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ একাধিক দেশের নেতাদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করে বলেছেন। পশ্চিমা দেশগুলো ইজরায়েলের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে। উল্টোদিকে মুসলিম দেশগুলি ইজরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু সব থেকে উদ্বেগের কারণ হলো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির জবাবে ইরান পাল্টা জবাব দিয়ে ঘোষণা করেছে যে, তারা তাদের পরমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কায় গোটা বিশ্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *