দেশজুড়ে প্রি-খরিফ প্রচারে,ল্যাব-টু-ল্যান্ড কৃষি জাগরণ কৃষিরথে রাজ্য ঘুরবেন রতন!!

 দেশজুড়ে প্রি-খরিফ প্রচারে,ল্যাব-টু-ল্যান্ড কৃষি জাগরণ কৃষিরথে রাজ্য ঘুরবেন রতন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগামী ২৯ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত দেশজুড়ে ‘প্রি-খরিফ ক্যাম্পেইন’শুরু হবে। বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযানের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসাবে রাজ্যেও কৃষি রথ নিয়ে প্রচারে বেরোবেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের আহ্বানমতো, খেত-খামারের গন্ধমাখা সরল ভাষায় ক্যাম্পেইনকে আম-কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার রূপরেখা যিনি উপস্থাপন করেছেন তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ। সোমবার দিল্লীর কৃষি ভবন থেকে হওয়া ভিডিও কনফারেন্সে দেশের সমস্ত রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ও শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে রাজ্য থেকে যুক্ত হয়েছিলেন রতনলাল নাথ,কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা ড.ফনি ভূষণ জমাতিয়া সমেত দপ্তরের অন্য আধিকারিকেরা। বৈঠকে ত্রিপুরার প্রতিনিধিরা প্রি-খরিফ প্রচারের খুঁটিনাটি তুলে ধরার পাশাপাশি রাজ্যের ভৌগোলিক ও আর্থসামাজিক বাস্তবতাকে সামনে আনেন। শুষ্ক-নম্র জলবায়ুর ফাঁক গলিয়ে ফসলের সম্ভাবনা উন্মোচনে কীভাবে প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও প্রকল্পনা একসূত্রে বাঁধা যায় – তার উপর বিশেষ জোর দেন মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শুধু কৃষি দপ্তর নয়, প্রাণী সম্পদ-মৎস্য-সহ যোগিতা-বঙ্গোপসাগরীয় ক্ষেত্রসমূহ – সমস্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে হাত ধরাধরি করে মাঠে নামতে হবে।রতনবাবু সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দিয়ে জানান,ত্রিপুরায় ইতিমধ্যেই আন্তঃদপ্তর সমন্বয় সেল গঠনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ব্লক স্তরের সমন্বয়ক নিযুক্ত হয়ে যাবে।ত্রিপুরার আটটি জেলায় গড়ে তোলা হচ্ছে মোট চব্বিশটি বহুমাত্রিক টেকনিক্যাল দল প্রতি জেলায় তিনটি। প্রতিটি দলে থাকবেন কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিক, কৃষি-বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রতিনিধি,প্রাণীসম্পদ ও মৎস্য বিশেষজ্ঞ, আছে কো অপারেটিভ ও বন দপ্তরও।
রতনবাবুর স্পষ্ট নির্দেশ, প্রত্যেক বৈঠকে অন্তত ২০০ জন কৃষক থাকতে হবে। তাই জেলার সাংসদ-বিধায়ক, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে বিট অফিসারেরাও যুক্ত হবেন ফিল্ড মোবিলাইজেশনে। সভার সূচি আগে থেকেই প্রচার পুস্তিকায় ছাপিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে।যাতে কৃষক কৃষাণিরা খেতের সময়সূচি মেলাতে পারেন।
প্রত্যেক জেলায় থাকবে তিনটি কৃষি রথ -ট্রাক-মাউন্টেড এলইডি স্ক্রিন,সাউন্ড সিস্টেম আর মিনি ডেমো প্লট সহ।
রথ ঘুরবে হাট-বাজার, রাস্তা- মোড়, স্কুল-মাঠে, চলতি ফসলের সমস্যার সমাধান, ড্রোন-স্প্রে, জাটকা চাষ, সূর্যমুখী ও উচ্চ ফলনশীল ধান ইত্যাদি নিয়ে অ্যানিমেশন ভিডিও চলবে। সরাসরি প্রশ্ন- উত্তর পর্বে থাকবেন কৃষিবিদেরা। স্থানীয় ভাষার ঘোষক বর্ণনা করবেন সহজ করে।
বর্ষার আগেই সমান্তরাল সার-বপন, পলি-মালচিং, ক্লাইমেট-স্মার্ট সিড ত্রিপুরার খামারে একাধিক নতুন ধারণা ঢোকাতে চাইছেন রতনলাল নাথ। তার বক্তব্য, কাগজে-কলমে প্রকল্প নয়, জমির মাটিতে ফলাফল। এই স্লোগান নিয়েই আমরা নামছি। তাই প্রতিটি সভার শেষে থাকবে ডেমো প্লট ভিজিট। কৃষকের জমিতেই তৈরি হবে ক্ষুদ্র প্রদর্শনী খেত। ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী দিন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহাকে প্রধান অতিথি হিসাবে চেয়েছেন রতনবাবু। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও আগ্রহ প্রকাশ করেচেন, এমনটাই দপ্তর সূত্রে খবর। চব্বিশ মে অরুন্ধতীনগরের ট্রেড এগ্রিকালচারের রিসার্চ সেন্টারে ডাকা হয়েছে রাজ্য স্তরের প্রস্তুতি বৈঠক। বিভাগীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, সেই বৈঠকে টাস্ক ফোর্সের কাজের গাইডলাইন চূড়ান্ত হবে। জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের হাতে তৎক্ষণাৎ দেওয়া হবে ‘অ্যাকশন-ইন-টুয়েলভ-ডেজ’ হ্যান্ডবুক। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী এদিন বৈঠকে প্রশংসা করেছেন ত্রিপুরার উদ্ভাবনী পন্থার। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় ফসল বৈচিত্র সমন্বিত মডেল। রতন লাল নাথ বলেন, আমরা চাই, খরিফ- পূর্ব এই প্রচার জাতীয় মানচিত্রে ত্রিপুরাকে ব্যতিক্রমী উদাহরণ হিসাবে দাঁড় করাক। কৃষিই আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। খরিফের বীজ বোনা শুরু হওয়ার আগেই প্রি খরিফ ক্যাম্পেইন যেন হয়ে উঠছে রাজ্যের কৃষিতে এক অন্যমাত্রা যোগ করতে চলেছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে, রাজ্যের নিজস্ব উদ্ভাবন যোগ করে রাজ্যের কৃষি দপ্তর এক মহাযজ্ঞে নামছে। শুধু সভা-সমিতি নয়, প্রত্যন্ত পাড়ার কুঁড়েঘরেও পৌঁছবে অডিও-ভিডিও রথের বার্তা। আট জেলার একেকটিতে বারোদিনে ১০৮ সভা। আটটি জেলায় সভা হবে মোট ৮৬৪টি। প্রায় প্রতিটি পঞ্চায়েতকে ছুঁয়ে যাবে তিন-তিনটি রথ, আর শতাধিক প্রযুক্তিগত দল। রতনবাবুর বক্তব্য, সাফল্যের মাপকাঠি একটাই- বর্ষায় বৃষ্টির জল জমার আগেই ত্রিপুরার প্রতিটি চাষির মনে যেন গেঁথে যায় এই বার্তা যে, কৃষিই সমৃদ্ধি, প্রযুক্তিই হাতিয়ার আর পাশে আছে সরকার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.