ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!
রক্তশূন্যতার সমস্যায় বেশি ভোগেন মহিলারা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া হল রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া। বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে রক্তশূন্যতার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। সমীক্ষায় এমনটাই দেখা যাচ্ছে। নানা কারণে মহিলারা এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হন। মূলত প্রতি মাসে ঋতুস্রাব, ল্যাকটেশন বা মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনপ্রক্রিয়া ও গর্ভধারণের কারণে নারীদের রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি নারীদের ৩০ শতাংশ এবং ৩৭ শতাংশ গর্ভবতী নারীর রক্তশূন্যতা থাকে।এই তথ্য অবশ্যই বেশ চিন্তার।কারণ হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি থাকলে শরীরে দুর্বলতা অনেকটাই বেড়ে যায়।
হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরির কাঁচামাল আয়রন কমে গেলে আয়রন ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা হতে পারে।এ ছাড়া ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, ক্যানসার, অস্থিমজ্জার সমস্যা, থাইরয়েডের সমস্যা, সময়ের আগে রক্তকণিকা ভেঙে যাওয়া বা থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি নানা কারণে রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে। ফলে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।
আগেই বলছিলাম আয়রনের ঘাটতির কথা।রক্তশূন্যতার অন্যতম প্রধান কারণ শরীরে আয়রনের অভাব।প্রতিমাসেই ঋতুস্রাবের ফলে ৩০ থেকে ৮০ মিলিলিটার রক্ত শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে এর মাত্রা অনেক বেশি হতে পারে,আবার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলে।ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়। যদি এই অতিরিক্ত পুষ্টির চাহিদা পূরণ না হয়, তাহলে মা ও শিশু দু’জনের জন্যই স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। এ ছাড়া অপুষ্টি, কৃমি সংক্রমণ, দীর্ঘ মেয়াদে ব্যথার ওষুধ সেবনে পাকস্থলিতে ক্ষত, জরায়ুর টিউমার, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পায়খানার সঙ্গে রক্তক্ষরণ, পাইলসসহ নানা কারণে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
এই সময়ে সঠিকভাবে খাওয়াদাওয়া করা অত্যন্ত জরুরি। না হলে পরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধও খেতে হবে। ডায়েটিশিয়ানকে দিয়ে একটি খাওয়ার চার্ট তৈরি করে নিতে পারলে আরও ভাল হয়।
সচেতনতা শুরু থেকেই নিতে হবে।
রক্তশূন্যতার লক্ষণ কী অতিরিক্ত দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ?
ত্বক ও ঠোঁট ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া। অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠা। মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। বুক ধড়ফড় করা বা শ্বাসকষ্ট হওয়া ইত্যাদি রক্তশূন্যতার লক্ষণ।
গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা হয় কেন?
গর্ভাবস্থায় ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি হয় এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া উচিত। ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় সবুজ ও রঙিন শাকসবজিতে। এটা সহজেই আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন। আমাদের দেশের অনেক নারী জানেন না যে তাদের মৃদু ধরনের জিনগত রক্তরোগ যেমন থ্যালাসেমিয়া বা অন্য কোনও রোগ আছে কীনা। তাদের জীবনভর হিমোগ্লোবিন একটু কম থাকে। হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামে পরীক্ষা করলে তা শনাক্ত করা যায়।ফলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এই সমস্যা প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?
রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত হলে প্রথমে জানতে হবে এটি কতটা তীব্র। সে অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এরপর নেপথ্য কারণ খুঁজে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। রক্তশূন্যতা এড়াতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কচু ও কচুশাক, পালংশাক, কাঁচা কলা ও খেজুরে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে। তবে অনেক সময় খাবারের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ না হলে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কী ধরনের সাপ্লিমেন্ট খাবেন তা নিয়ে আগে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।
গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতি এড়াতে সুষম খাবারের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে।