August 2, 2025

অটিস্টিক সন্তানের জন্য বিশেষ স্কুল খোলেন মা!!

 অটিস্টিক সন্তানের জন্য বিশেষ স্কুল খোলেন মা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- অটিস্টিক সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাতে মা রীতিমতো হিমশিম খেয়েছিলেন। এক এক করে ২২টি স্কুল তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।
সেই তরুণী মা নিজেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য দুবাইতে একটি স্কুল গড়ে তোলেন, যাতে তার সন্তানের মতো অন্যদের এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়। সিরিয়ান এই নারীর নাম রানা আক্কাদ।
যদিও অনেক দিন ধরে তিনি দুবাইয়েই বাসিন্দা। অটিজিমে আক্রান্ত তার শিশুপুত্রের নাম ছিল জাদ (ছবিতে মা ও ছেলে)। গালফ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রানা বলেন, আমার ছেলে জাদ আতাসিকে ২২টি স্কুল থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। আমি সস্তা, নামীদামি, নিম্নমানের সব ধরনের স্কুলে চেষ্টা করেছিলাম। এমনকি, আমি ওকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য তৈরি সেন্টারেও রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে সে শারীরিকভাবে অনেক পিছিয়ে পড়ছিল। তার কথা বলা ও আচরণগত কিছু সমস্যা ছিল, কিন্তু শারীরিক কোনও অক্ষমতা ছিল না।’ ২২ বছর আগে রানা আক্কাদ দুবাইয়ে এসেছেন। জাদের যখন দেড় বছর বয়স, মা লক্ষ্য করেন, তার সন্তান আর পাঁচটা বাচ্চার মতো নয়, স্বভাবে-আচরণে আলাদা। বছর দুয়েক আগে মায়ের কোল শূন্য করে জাদ হঠাৎ মারা যায়। জাদের বয়স ছিল তখন ১১ বছর। রানা জানান, তারা কিছুটা আভাস পেলেও এক সময় তাকে ক্লিনিক্যালি বলা হয় যে, জাদ অটিজমে আক্রান্ত। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে, ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাটা ছিল কঠিন যুদ্ধ। চার বছরের শিক্ষা, পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির পর ২০২০ সালের অক্টোবরে রানা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য মডার্ন অলটারনেটিভ এডুকেশন’ সেন্টার চালু করেন। জাদ-সহ মোট ১১ শিক্ষার্থী ছিল সেখানে। কিন্তু জাদ তখন অবসাদের চরম পর্যায়ে। ভাক্তারও ততদিনে আভাস দিয়েছেন, এ শিশু বেশিদিন বাঁচবে না। রানা বলেন, জাদের মৃত্যুর সঙ্গে অটিজমের কোনও সম্পর্ক নেই। অন্য দিনের মতো সে সেদিন স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়েছিল, কিন্তু আর জেগে ওঠেনি। এটি ছিল সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ, কিশোর বয়সে যা বিরল। কিন্তু পুত্রের মৃত্যুশোককে রানা শক্তিতে পরিণত করেছেন। রানা বলেন, ‘এই সেন্টারের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। জাদ ছিল দেবদূত। ওকে হারানোর পরও আমি এই স্কুল চালিয়ে যেতে পারছি। আমি তার ১২তম জন্মদিনে, ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারী সেন্টারের নাম মডার্ন তা অলটারনেটিভ এডুকেশন থেকে “জাদ’স ইনক্লুশন” রাখি এবং সেদিন আমি তার স্মরণে ক্যাম্পাসে একটি জলপাইগাছ রোপণ করি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *