August 2, 2025

ড্রোনে করে বাড়িতে উড়ে এল পেনশনের টাকা

 ড্রোনে করে বাড়িতে উড়ে এল পেনশনের টাকা

আচমকাই হেতারাম দেখলেন আকাশে উড়ছে ড্রোন। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ হেতারাম। স্বাভাবিকভাবেই ড্রোন সম্পর্কে কোন চিন্তা বা ভাবনা ছিল না তার। প্রথমে ভেবেছিলেন
হয়ত মাথার উপর দিয়ে
হেলিকপ্টার বা ওই ধরনের
ছোট কোন উড়ন্ত বস্তু ঘুরছে।
তারপর দেখলেন ঘুরতে
ঘুরতে বাড়ির দিকে এগিয়ে
আসছে যন্ত্রটি।প্রথমদিকে
কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন
হেতারাম। মিনিট খানেকের প্রতীক্ষা, তারপর বাড়ির উঠোনেই নামলো সেই
উড়ন্ত বস্তু। তার পা থেকে অদ্ভুত ভাবে খুলে এলো একটা লাল রঙের পোটলা।
হতবাক হেতারাম। তার জন্য এসেছে নগদ ২০০০ টাকা সঙ্গে কাগজ আর রবার
স্ট্যাম্প। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, টাকা প্রাপ্তির ঘটনা জানিয়ে আঙুলের ছাপ
দিয়ে সেই চিঠি পাঠিয়ে দিতে হবে। যেমন সরকারি নির্দেশ ঠিক তেমনটাই কাজ
করলে হেতারাম। আবার লাল পুটলির মধ্যে সেই কাগজ ঢুকিয়ে পায়ের কাছে
রাখতেই সেই যন্ত্র আবার উড়ে গেল। আশেপাশের লোক মারফৎ জানলেন এটা
উড়ন্ত যন্ত্র নয়, এটা ড্রোন। আর ড্রোনে করেই প্রতিবন্ধী পেনশনের টাকা নিজের
বাড়িতে বসে পেয়েছেন হেতারাম।
এমন কাণ্ড দেখে আপ্লুত ওড়িশার এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা হেতারাম
সতনামি। প্রতিবন্ধকতার জন্য চলাফেরা করতে পারেন না আর। মাসখানেক
আগে পঞ্চায়েত দপ্তরে গিয়েছিলেন পেনশনের টাকা তুলতে। তখনই তার করুণ
অবস্থা দেখে বিকল্প কোন কিছুকরার চিন্তাভাবনা নিয়েছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান।
তাই সরকারি পেনশনের টাকা ড্রোনে করে তার বাড়িতে এল।
ওড়িশালার নুয়াপাড়া জেলার মধ্যে রয়েছে ঘন জঙ্গলে ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম
ভুটকাপাড়া। সেখানেই থাকেন হেতারাম।
এত দিন সরকারি পেনশনের জন্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পেরিয়ে
পঞ্চায়েত অফিসে যেতে হত হেতারামকে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা ভেবে
হেতারামের কষ্ট যাতে লাঘব হয়, তার জন্যই এই ড্রোনের ভাবনা গ্রামের
পঞ্চায়েত প্রধানের। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে নিজের উদ্যোগেই ড্রোনটি কেনেন
পঞ্চায়েত প্রধান সরোজ আগরওয়াল। তিনি বললেন, ‘আমাদের পঞ্চায়েত
এলাকায় জঙ্গলে ঘেরা ভুটকাপাড়া গ্রামে থাকেন হেতারাম। তিনি প্রতিবন্ধী।
জন্মের পর থেকে চলাফেরা করতে পারেন না। রাজ্য সরকারের প্রকল্পে আমিই
ওনার নাম নথিভুক্ত করি। পেনশন সংগ্রহে যাতে ওকে সমস্যায় পড়তে না হয়,
সে কারণেই ড্রোন কিনি।’
প্রধানের এই উদ্যোগে অভিভূত হেতারাম। তিনি বলেছেন,
‘ড্রোনের সাহায্য টাকা পাঠিয়েছেন সরপঞ্চ। আমার জন্য বড় স্বস্তির।
আমার বাড়ি থেকে পঞ্চায়েত অফিস যেতে খুব সমস্যা হত।’
পঞ্চায়েত প্রধানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নুয়াপাড়ার বিডিও সুবাদার প্রধানও। তিনি
জানিয়েছেন, গোটা ঘটনাই পঞ্চায়েত প্রধানের জন্য সম্ভব হয়েছে। ইতিমধ্যে
বিডিও তরফে ড্রোনে করে টাকা পৌঁছান�োর ছবি তুলে ওড়িশা রাজ্য সরকারের
ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *