August 13, 2025

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হল সোমবার, যখন পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম নিয়ে যুদ্ধের হুমকি দিলেন। তার এই মন্তব্য আসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুঁশিয়ারির মাত্র একদিন পর।
সোমবার সিন্ধু প্রদেশে এক সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাবল অভিযোগ করেন, নয়াদিল্লি সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তিকে খর্ব করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি আরেক দফা সংঘাত হয়, তবে পাকিস্তান পুরো সিন্ধু নদ ও এর পাঁচটি উপনদীর নিয়ন্ত্রণ নেবে। “পাকিস্তানের জনগণের মোদীকে যুদ্ধে মোকাবিলা করার ক্ষমতা রয়েছে,” মন্তব্য করেন তিনি। সিন্ধু নিয়ে বিরোধকে তিনি পাকিস্তানের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সভ্যতার উপর আঘাত বলে দাবি করেন।
এর মাত্র একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুনির সতর্ক করে বলেন, ভারত যদি সিন্ধুতে বাঁধ তৈরি করে, পাকিস্তান অপেক্ষা করবে বাঁধ সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য, তারপর “দশটি ক্ষেপণাস্ত্র” ছুড়ে তা ধ্বংস করবে। মুনির ভারত-পাকিস্তানকে তুলনা করেন ঝকঝকে মার্সেডিজ গাড়ি ও নুড়ি ভর্তি ট্রাকের সঙ্গে, ইঙ্গিত দেন সংঘর্ষে পাকিস্তান মারাত্মক ক্ষতি করবে।
ভারত দ্রুত মুনিরের মন্তব্যের নিন্দা জানায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে মন্তব্যগুলোকে “দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে অভিহিত করে এবং জানায়, এসব কথা শুধু আন্তর্জাতিক মহলের সেই উদ্বেগকেই জোরদার করছে যে, পাকিস্তানের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে— এবং সেই অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ এমন এক সেনাবাহিনীর হাতে, যারা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে কাজ করে। “ভারত কোনওভাবেই পরমাণু হুমকির সামনে মাথা নত করবে না,” বিবৃতিতে স্পষ্ট জানানো হয়।
১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু ও এর উপনদীগুলির জল ভাগাভাগির নিয়ম স্থির করে। চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পর ভারত এই চুক্তি স্থগিত করে দেয়, যার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়।
সেনা ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব— উভয় পক্ষ থেকেই পাকিস্তান এখন সিন্ধু ইস্যুতে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে, যা দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে মৌখিক সংঘাতকে এক বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *