August 1, 2025

৩১৬ স্কুলকে সম্মাননা প্রদান,শিক্ষায় উৎকর্ষতা বাড়াতে টি-স্কয়ারে গুরুত্ব মুখ্যমন্ত্রীর!!

 ৩১৬ স্কুলকে সম্মাননা প্রদান,শিক্ষায় উৎকর্ষতা বাড়াতে টি-স্কয়ারে গুরুত্ব মুখ্যমন্ত্রীর!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যের মোট
৩১৬টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এ বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় – ১০০ শতাংশ পাস করেছে। টিবিএসই পরিচালিত বিভিন্ন স্কুল এবং সিবিএসই অনুমোদিত বিদ্যাজ্যোতি এই স্কুলগুলির মধ্য থেকে সোমবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মোট ৫০টি স্কুলকে প্রতীকী হিসেবে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ডা. ও মানিক সাহা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলির প্রতিনিধির হাতে স্মারক অভিজ্ঞানপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের সাফল্য সম্বলিত একটি পুস্তিকারও আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী।


আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয়ের সফলতার অধিকাংশই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকার উপর। শিক্ষকরাই হচ্ছেন প্রকৃত মানুষ গড়ার কারিগর। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন খামতি এবং সমস্যাগুলি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই পূরণ করতে পারেন। এদিক থেকে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যায় শিক্ষিত হলেই চলবে না। সমাজের কথা তথা দেশের কথা মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। সমাজ পরিবর্তনেও ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে আসতে হবে। আর তবেই না প্রকৃত শিক্ষার সার্থকতা আসবে বলে মনে করেন তিনি। শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার উপরও এদিন গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্দেশে বলেন, যেসব বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা একশ শতাংশ পাসের সফলতা অর্জন করেছে তাদের আত্মতুষ্টির কোনো স্থান নেই। এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।

রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা দেশের অন্যান্য রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় অন্তত মেধার দিকে কোনো অংশে কম নয়। শুধু চাই সঠিক পরিচর্যা ও অবিচল লক্ষ্য। রাজ্য সরকার সেই লক্ষ্য পূরণে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার বিকাশে কাজ করে চলছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলির কথাও তুলে ধরেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি এদিন টি-স্কয়ার শিক্ষা পদ্ধতি চালুর কথাও উল্লেখ করেন। তিনি মনে করেন, এতে বিদ্যালয়গুলির উৎকর্ষতার মান বৃদ্ধি পাবে। এদিন তিনি শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে বছর বাঁচাও পরীক্ষা পদ্ধতি চালু, ধীরগতির শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিতভাবে রেমিডিয়েল ক্লাস চালু, শিক্ষাক্ষেত্রে সুপার-৩০ প্রকল্প চালু, মুখ্যমন্ত্রী মেধা পুরস্কার, নবম শ্রেণীর ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে বাইসাইকেল বিতরণ, প্রি-প্রাইমারি ক্লাস চালু, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের জন্য মিশন মুকুল প্রকল্প চালু, পিএম শ্রী প্রকল্প চালু, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা পদ্ধতি, মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনায় দ্বাদশমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৪০ জন মেধাবী ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে স্কুটি প্রদান সহ এমন আরও একাধিক ইতিবাচক দিকগুলির কথা তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে এখন। এরই প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো ত্রিপুরাকে পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সম্প্রতি। এদিক থেকে ত্রিপুরা এখন দেশের মধ্যে তৃতীয় রাজ্য হিসেবে মিজোরাম ও গোয়ার পর পূর্ণ সাক্ষরতার মর্যাদায় ভূষিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়নেও সমান গুরুত্ব দিয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৪টি বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ৮০ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজ্যের মোট ৩৪৬টি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৩০টি বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা আরও বলেন, ত্রিপুরা বর্তমানে অনেকগুলি প্যারামিটারে সফলতার দিক দিয়ে দেশের অনেক রাজ্য থেকে এগিয়ে রয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা। এছাড়াও শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, এসসিইআরটি ত্রিপুরার অধিকর্তা লালনুন্নেমি ডার্লংও উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *