শক্তি সংরক্ষণে ফের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে ভূষিত হলো ত্রিপুরা!!
২৮ ও ২৯ নভেম্বর ইউনিটি প্রমো ফেস্ট,মেরি ডাওঙ্গির আগমনী বার্তায় উচ্ছ্বসিত জম্পুই!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বহুল প্রতীক্ষিত ইউনিটি প্রমো ফেস্ট জম্পুইয়ে হতে যাচ্ছে আটাশ এবং ঊনত্রিশ নভেম্বর। পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর হাত ধরে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি উপত্যকায় যেন এক অদৃশ্য উত্তাপ, এক প্রত্যাশার হাসি লেগে আছে। আর সেই উৎসাহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মায়ানমার বংশোদ্ভূত মিজোরামের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মেরি ডাওঙ্গি।
জম্পুই পাহাড়ে তার আগমন যেন হঠাৎ করেই অপরিচিত কোনও তারকার আলোর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। পাহাড়ি জনপদে বহুদিন পর এমন দেখা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার গান নিয়ে যে আবেগ, যে সাড়া তা যেন এবার বাস্তবে স্পর্শযোগ্য হয়ে উঠছে। মেরি ডাওঙ্গি আসছেন জেনে জম্পুইয়ের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে উত্তেজনা ছুঁয়ে ফেলেছে পাহাড়ের বাতাসকে। কেউ ক্যামেরা প্রস্তুত রাখছে, কেউবা ফোনে আগেভাগেই জায়গা খালি করছে রেকর্ডিংয়ের আশায়। পাহাড়ি জীবনের স্বভাবসুলভ নীরবতা যেন কিছুদিনের জন্য চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে এই উল্লাসের পথ খুলে দিতে। ইউনিটি প্রমো ফেস্ট যে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয় তা এখন পরিষ্কার। এটি পরিণত হয়েছে এক সামাজিক মিলনমেলা, এক আনন্দ তরঙ্গ যা দীর্ঘদিনের নিস্তব্ধতা ভেঙে নতুন প্রাণ সঞ্চার করছে।
অপরদিকে উৎসব উপলক্ষে জম্পুই পাহাড়জুড়ে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে পর্যটকের ঢল। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে কেবল মেরি ডাওঙ্গির কণ্ঠে গান শোনার জন্য। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের মধ্যেও নতুন উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। প্রচুর পেয়িং গেস্ট সাজিয়ে তোলা হয়েছে মুহূর্তটির জন্য। ইডেন সহ জম্পুই পাহাড়ের সমস্ত বেসরকারী গেস্ট হাউস ইতিমধ্যেই বুকিং হয়ে গেছে। যেন পাহাড়ের প্রতিটি ঘরও উৎসবের তালে তালে নি:শ্বাস ফেলছে। যারা আগে পাহাড়ে পর্যটনের দিন ফেরার স্বপ্ন দেখেছিল তাদের চোখেও আজ একটু বাড়তি উজ্জ্বলতা। মেরি ডাওঙ্গির বিশেষ পারফরম্যান্স একদিনেই থাকছে এবং তার আগমনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় রাখা হয়েছে বিশেষ নজর। মঞ্চ সাজানো হচ্ছে পাহাড়ি ঐতিহ্য ও আধুনিক আলোকসজ্জার মিশেলে, যাতে জম্পুইয়ের মনোরম পরিবেশের সঙ্গে শিল্পীর সুরের গাঁথুনি আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। গানের পাশাপাশি থাকছে সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী, স্থানীয় শিল্পীদের পারফরম্যান্স, পাহাড়ি খাবারের স্টল এবং দিনব্যাপী নানা প্রদর্শনী। জম্পুই পাহাড়ে এমন উচ্ছ্বাস অনেকদিন দেখা যায়নি। এ ধরনের উৎসব কেবল বিনোদনই নয়, এটি পাহাড়ের অর্থনীতিতে নতুন গতি আনবে। পর্যটক সমাগম বাড়লে স্থানীয় ব্যবসা, পরিবহণ, হস্তশিল্প এবং খাদ্যপণ্যের বিক্রি বাড়বে। পাহাড়ি পথ ধরে সন্ধ্যায় যখন আলো জ্বলে ওঠে তখন মনে হয় জম্পুই পাহাড় যেন নিজেই উন্মুক্ত হয়ে অপেক্ষা করছে অতিথিদের জন্য। সেই অপেক্ষা এবার রঙিন হয়ে উঠেছে মেরি ডাওঙ্গির আগমন বার্তায়। তার সুর যে মানুষের হৃদয়ে আগে থেকেই জায়গা করে নিয়েছিল এবার সেই সুরের বাস্তব উপস্থিতি পাহাড়ের উৎসবকে আরও মহিমান্বিত করে তুলবে তা বলাই বাহুল্য। জম্পুই পাহাড়ের মানুষ জানে – এই দুদিন শুধু গান সঙ্গীতের নয়, এই দুদিন পাহাড়ের নিজস্ব পরিচয়বাহী এক মহোৎসবের।পাহাড়ের শীত, কুয়াশা, আকাশভরা আলো আর দূর পাহাড় চূড়ায় খেলা করা বাতাস সব মিলিয়ে ইউনিটি প্রমো ফেস্ট হয়ে উঠছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। জম্পুই পাহাড় তাই প্রস্তুত। মানুষ প্রস্তুত। কেবল সময়ের অপেক্ষা, পাহাড়জুড়ে ভেসে উঠবে সেই সুর যা পাহাড়ের নিস্তব্ধ রাত ভেদ করে উড়ে যাবে অনেক দূর আরও দূরে।