August 2, 2025

২৬ কলেজের দায়িত্ব পাচ্ছে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়!!

 ২৬ কলেজের দায়িত্ব পাচ্ছে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, ত্রিপুরার একমাত্র রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে এবার জাতীয় স্তরে উন্নীত করার জন্যও রাজ্য সরকার একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর ত্রিপুরায় মহারাজা বীর বিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা হয়।
বর্তমানে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাত্র দুটি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ এবং একটি আইনি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। সাধারণ ডিগ্রি কলেজগুলি হলো এবিবি কলেজ এবং বিবিএম কলেজ। সরকারী আইন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে। মাত্র তিনটি কলেজ গত নয় বছর ধরে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকার দরুন জাতীয় স্তরে পিছিয়ে রয়েছে ত্রিপুরার একমাত্র রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুদান সঠিক পরিমাণে আসছে না।
যার খেসারত দিতে হচ্ছে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত ছাত্রছাত্রী এবং গবেষকদের।বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রাজ্য সরকার নয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের নয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজ্যের অন্যান্য সাধারণ ডিগ্রি কলেজকেও এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে সরকারী সাধারণ ডিগ্রি কলেজ রয়েছে ২৮টি।এর মধ্যে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ।আর বাকি তিনটি সাধারণ ডিগ্রি করলেজ রয়েছে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। এখন নয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাকি ২৫ সাধারণ ডিগ্রি কলেজে আনা হবে।
উচ্চ শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, প্রায় তিন বছর আগেই ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় তরফে ডিগ্রি কলেজগুলিকে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয় সংযুক্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও এতকাল এই অনুরোধে কর্ণপাত করা হয়নি। যার পরিণতিতে দেখা গেছে প্রত্যেক বছর স্নাতক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরেই ছাত্র বিক্ষোভ আছড়ে পড়ছে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও ২৮টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজের মধ্যে ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। এই ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকলেও কলেজগুলি নিয়ন্ত্রণের প্রশাসনিক ক্ষমতা রয়েছে রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কাছে। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র পরীক্ষা গ্রহণ এবং পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের বাইরে এমন কোনো ভূমিকা নেই। প্রত্যেক বছর স্নাতক পরীক্ষার ফলাফল ঘিরে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে থাকা সাধারণ ডিগ্রি কলেজগুলোর পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করছেন রাজ্য সরকারের আওতাধীন বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকারা। পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন ঘিরে অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের নিয়ন্ত্রণের অধিকার ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নেই। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যই ছাত্রছাত্রী স্বার্থে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২৮টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজকে আনার সিদ্ধান্ত হচ্ছে।
নয়া সিদ্ধান্তের জন্য ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ অনেকটাই কমে যাবে। আর এখন নয়া বিপাকে পড়বে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও এই নয়া সিদ্ধান্তের জন্য প্রশাসনিক জটিলতার ক্রাস পাবে। এখন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২৮টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ আসার পর স্নাতক পরীক্ষা, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল প্রকাশ ঘিরে কোনো সমস্যা হবার কথা নয়। কারণ যারা উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন অধ্যাপক অধ্যাপিকারা তারা সবাই উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধীনে সরকারী কর্মচারী। ফলে তাদের নিয়ন্ত্রণ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধীনে রয়েছে। শুধু তাই নয়, নয়া কোর্স-নয়া বিভাগ এবং নয়া কলেজ সূচনার জন্য ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় দৌড়ঝাঁপ করার প্রয়োজন নেই। এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তর যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
জানা গিয়েছে এই সিদ্ধান্তকে কার্যকর করার জন্য ইতিমধ্যে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে অনুরোধ করা হয়ে গিয়েছে। এখন শুধুমাত্র অনুমতি আসার অপেক্ষা। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হবে। শুধু তাই নয়, ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (ন্যাক)-এর পরিসংখ্যানে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কীভাবে উন্নত করা যায়। এ লক্ষ্যেই একটি রূপরেখা স্থির করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
এরপর ধাপে ধাপে রাজ্য সরকারের দুটি বিএড কলেজ সহ অন্যান্য ডিগ্রি কলেজগুলি এবং সবগুলি কারিগরি কলেজ ও এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হবে। বর্তমান পরিকাঠামো নিয়ে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এত বড় দায়িত্বভার কীভাবে সামলাবেন তা সময়ই বলবে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *