১৬৯৯ নিয়মিত পদ অবলুপ্তির পথে!টিপিএসসিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ সরকার, ক্ষুব্ধ বেকার মহল।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না রাজ্য সরকার। রাজ্যে আমলাতন্ত্র এমন পর্যায়ে উঠেছে যে মন্ত্রিসভার অনুমোদিত প্রায় ১৬৯৯টি পদের নিয়োগ এখন বাতিলের পথে। রাজ্য সরকারের আমলাদের সাথে টিপিএসসির আমলাদের লড়াইয়ের দৌলতে বেকারের চাকরি অধরা।
শুধু তাই নয়, একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে ন্যূনতম সময় লাগছে পাঁচ থেকে ছয় বছর। এমনকী প্রত্যেক বছর ন্যূনতম হাজার হাজার শূন্যপদ অবলুপ্তও হচ্ছে।বাড়ছে বয়স উত্তীর্ণ বেকারের সংখ্যা।যদিও এক অজানা ভয়ে মহাকরণ ও ত্রিপুরা লোকসেবা আয়োগের আমলাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না সরকার।
মহাকরণ সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে গ্রুপ-এ, গ্রুপ-বি, গ্রুপ-সি মিলিয়ে প্রায় ১২৮৮টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য টিপিএসসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। একইভাবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে আরও ২৮৬টি বিভিন্ন পদে এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত আরও ১২৫টি বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল। ১৬৯৯টি নিয়মিত পদের জন্য অর্থ কমিশনের নির্দেশ অনুসারে রাজ্য সরকারের কোষাগারে অর্থরাশি প্রদান করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। অবাক করার বিষয় হলো, এখন প্রায় দু’বছর হচ্ছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মানল না টিপিএসসি কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, গত ফেব্রুয়ারী মাসে ষোড়শ অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদের রাজ্য সফরকালে নিয়োগ প্রক্রিয়া মন্থর গতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। ওই সময়ে অর্থ কমিশনের আধিকারিকদের সমস্যা সমাধান হবে বলে আশ্বস্তও করেছিল সরকার।যা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।উল্টো ১৬৯৯টি পদ বাতিলের সাথে নিয়মিত পদের অর্থরাশি এখন যে কোনো সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগার ফিরে যেতে পারে বলে খবর। এই বিষয় সম্প্রতি আবার প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্য প্রশাসনে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কোন ক্ষমতা বলে আমলারা সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকরে বাধা দিচ্ছেন?
মহাকরণ সূত্রে খবর, এই জটিলতার জন্য ফুড ইনস্পেক্টর পদে ১৮টি, রেভিনিউ ইনস্পেক্টর ২২টি, ইলেকশন ইনস্পেক্টর আঠারোটি, ইনস্পেক্টর অব ট্যাক্সেস আটটি, স্মল সেভিংস ইনস্পেক্টর বারোটি, আইসিডিএস সুপারভাইজার ১৭৮টি, সিডিপিও বারোটি, পঞ্চায়েত অফিসার আটাশটি, পঞ্চায়েত এগজিকিউটিভ অফিসার ২৩৮টি, পঞ্চায়েত এক্সটেনশন অফিসার ষোলটি, সাব ইনস্পেক্টর পুলিশ (পুরুষ ও মহিলা) ১০৮টি, ওয়েট অ্যান্ড মেজারমেন্ট অফিসার বারোটি, অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসার ২৮৮টি, লেকচারার টেকনিক্যাল কলেজ ৮৮টি
টিইএস (ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা) ২১৮টি, এলডিসি (মহাকরণ) ৬৬টি, টিজেএস আঠারোটি, টিএফএস বত্রিশটি, এগ্রি অফিসার বারোটি, টিপিএস ৪৮টি, টিসিএস ৮৮টি পদ সহ আরও বিভিন্ন পদ মিলিয়ে প্রায় ১৬৯৯টি পদে নিয়োগ বিশ বাও জলে।
অবাক করার বিষয় হলো, এই সবগুলি নিয়মিত পদে টিপিএসসি মাধ্যমে নিয়োগ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। মন্ত্রিসভার অনুমোদনও রয়েছে।শুধুমাত্র টিপিএসসি কর্তৃপক্ষের সাথে বাদানুবাদের জন্যই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ।
টিপিএসসি সূত্রে খবর, হাজারো শূন্যপদে একসাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য ত্রিপুরা লোকসভা আয়োগে কর্মচারী ও আধিকারিক নেই। এক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণেরও অনুরোধ জানিয়েছে টিপিএসসি কর্তৃপক্ষ। তবে এখন পর্যন্ত শীতঘুমে সরকার।
অভিযোগ, টিপিএসসির জনৈক চেয়ারম্যানের সাথে রাজ্য সরকারের ঠাণ্ডা লড়াই চলছে।এর সূত্রপাত বেতনভাতাকে ঘিরে!এর প্রভাবেই টিপিএসসি বেকারের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে। বেকার ঠকানোর পরিকল্পনায় যুক্ত রয়েছে রাজ্য সরকারের একাংশ আমলারা। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ বেকাররা।