December 11, 2025

হস্টেলে র‍্যাগিংয়ের শিকার ছোটরা ১০০ থেকে ২২ এ নামল ছাত্রসংখ্যা!!

 হস্টেলে র‍্যাগিংয়ের শিকার ছোটরা ১০০ থেকে ২২ এ নামল ছাত্রসংখ্যা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-র‍্যাগিংয়ের যন্ত্রণায় হস্টেলে যেতে ভয় পাচ্ছে ছাত্ররা। হস্টেল সুপারকে জানালেও কোনও লাভ হয় না। এমনকী মহকুমা শাসককে পর্যন্ত বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে টানা র‍্যাগিংয়ের ফলে বহু ছাত্রকে হস্টেল থেকে নিয়ে গেছেন অভিভাবকরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে আগরতলা আনন্দনগরের ড. বি আর আম্বেদকর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বয়েজ হস্টেলের বিরুদ্ধে। এই হস্টেলে দুই বছর আগেও একশোর কাছাকাছি ছাত্র থাকত। এরপর থেকে ক্রমাগত ছাত্র কমতে শুরু করে।কমতে কমতে এখন ২২ জনে নেমে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রকে নিয়ে গেছেন তার মা। ছাত্র ও তার মা হস্টেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভউগরে দিয়েছেন। হস্টেল সুপার রাজেশ দেববর্মার বিরুদ্ধেও তাদের বহু অভিযোগ। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রের বাড়ি চারিপাড়া এলাকায়। তার মা জানান, প্রায়ই হস্টেলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্ররা মারধর করে। হস্টেলে থাকতে গেলে তাদের টাকা দিতে হয়। তার ছেলেকে ৬০০ টাকা দিতে বলে। এই টাকা না দেওয়ায় ছেলের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। ছয় মাস আগেও এই ধরনের অত্যাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।এই কারণে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রকে তার মা নিয়ে গেছিলেন।পরে হস্টেল সুপার জানান পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। এখন আর র‍্যাগিং হয় না। এই বিশ্বাসে ১৫ দিন আগেই ছেলেকে হস্টেলে ফের দিয়ে এসেছিলেন তার মা। কিন্তু শুক্রবার ছেলে আবার হস্টেলের সিকিউরিটি গার্ডের নম্বর থেকে ফোন করে জানায় তাকে খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রচণ্ড নির্যাতন চলছে তার উপর। এই কথা জানতে পেরে ছাত্রের মা আবারও ছুটে যান। তিনি জানান, এভাবে হোস্টেলে রাখা যায় না।
এদিকে, অভিযুক্ত হস্টেল সুপার রাজেশ দেববর্মা জানান, দ্বাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছিল সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রটির। সমস্যা নিয়ে জানা গেছে, গত দুই বছর আগেও স্কুলের বয়েজ হস্টেলের বেশ সুনাম ছিল। একশোর উপর ছাত্র থাকত। এখানে থেকে ভালো পড়াশোনাও হত। যার ফলে ছাত্রের সংখ্যাও বাড়ে। কিন্তু দুই বছর ধরে একাদশ ও দ্বাদশের ছাত্ররা র‍্যাগিং শুরু করেছে ছোট ক্লাসের ছাত্রদের উপর। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে এক এক ছোট ক্লাসের ছাত্রদের নিয়ে যাচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা। টাকা চেয়ে মারধর করা হচ্ছে ছাত্রদের। এই অভিযোগ গেছে মহকুমাশাসকের কাছেও। যে কারণে একাধিকবার ছাত্র ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। এরপরও র‍্যাগিংয়ের সমস্যার সমাধান হয়নি। মূলত দ্বাদশের এক ছাত্র এই র‍্যাগিংয়ের নেতৃত্ব দেয়। রহস্যজনকভাবে হোস্টেল সুপার রাজেশ দেববর্মা এই ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। অথচ বহু ছাত্র গত এক বছরে চলে গেছে। তবুও শিক্ষা দপ্তর অথবা মহকুমা প্রশাসনের নজর নেই। র‍্যাগিংয়ের শিকার ছাত্ররা এক এক করে চলে যাওয়ায় বয়েজ হস্টেলে এখন ছোট ক্লাসের ছাত্রদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। খুব দ্রুত হস্টেলের দিকে প্রশাসন নজর না দিলে বড় ধরনের ঘটনাও হতে পারে বলে অভিভাবকদের আশঙ্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *