August 2, 2025

স্মার্ট মিটারে বেশি বিল,তদন্তে আসল তথ্য ফাঁস এজেন্সিকে শোকজ বরখাস্তের নির্দেশ মন্ত্রীর!!

 স্মার্ট মিটারে বেশি বিল,তদন্তে আসল তথ্য ফাঁস এজেন্সিকে শোকজ বরখাস্তের নির্দেশ মন্ত্রীর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্মার্ট মিটারে অস্বাভাবিক বিল আসছে।এই নিয়ে রাজ্য যখন তোলপাড় হচ্ছে এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতিধ্যে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে বিদ্যুৎ দপ্তর ও বিদুৎ নিগমের চোখ কপালে উঠেছে। বেরিয়ে এসেছে আসল রহস্য। প্রকৃত তথ্য জানতে পেরে বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ সাথে সাথেই বেসরকারী বিদ্যুৎ বিলিং এজেন্সিকে শোকজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মিটার রিডারকে বরখাস্ত করা এবং বিলিং এজেন্সি থেকে অর্থ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তে নেমে বিদ্যুৎ নিগম জানতে পারে কিছু মিটার রিডার কারচুপি করে, গ্রাহকের সাথে সমঝোতা করে এতদিন কম ইউনিট উল্লেখ করে বিদ্যুৎ বিল করে গেছে।স্মার্ট মিটার লাগাতেই বকেয়া ইউনিট-এর তথ্য বেরিয়ে আসে। এতে করেই কিছু কিছু এলাকায় স্মার্ট মিটারে বেশি বিল সামনে আসে। জানা গেছে, খোয়াই লালছড়ার বাসিন্দা জনৈক অশোক কান্তি দেব রায়ের গত জুন মাসের ২৫ তারিখ স্মার্ট মিটার লাগানোর পর বিল আসে ৮২,৫৮৯ টাকা। এই অস্বাভাবিক বিল দেখে স্বাভাবিক ভাবেই হৈচৈ শুরু হয়। বিষয়টি বিদ্যুৎমন্ত্রীর নজরেও আসে। তিনি সাথে সাথে খোয়াই লালছড়া অশোকবাবুর বাড়িতে ইঞ্জিনীয়ারদের একটি টিম পাঠান তদন্তের জন্য।
তারা গিয়ে দেখে, অশোকবাবুর বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানোর আগে পুরনো মিটারে রিডিং ছিল ১১১৪৮। কর্মীরা স্মার্ট মিটার বসানোর সময় পুরনো মিটারের এই রিডিং অশোকবাবুকে দেখিয়ে তার স্বাক্ষর নেন।এরপর স্মার্ট মিটার বসিয়ে, স্মার্ট মিটারের রিডিং ১১১৪৮ করে অশোকবাবুর আবার স্বাক্ষর নেন।এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু যখন বিল আসে, তখন দেখায় যায় টাকার পরিমাণ ৮২,৫৮৯। তদন্ত করে দেখা যায় অশোকবাবুর বাড়ি থেকে প্রতিমাসে এতদিন যে মিটার রিডার এসে বিল করে গেছেন, সেই মিটার রিডার ইউনিট কম দেখিয়ে অর্থাৎ কম লিখে বিল করে গেছেন। স্মার্ট মিটার লাগাতেই বকেয়া ইউনিটের বিলও একসাথে উঠে আসে।
মন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমানে বিদ্যুৎ গ্রাহক আছেন মোট ১০ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৮৫ জন।এর মধ্যে বহু মিটার আছে অচল।বহু বাড়িতে মিটারও নেই।লোড অ্যাসেসমেন্ট করে এতদিন চলে আসছে।আজকে পর্যন্ত সারা রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে ৯৪ হাজার। এর মধ্যে অস্বাভাবিক বিলের অভিযোগ এসেছে মাত্র ০.০৯৮ শতাংশ। এক শতাংশও নয়। মন্ত্রী বলেন, আজকেই বিদ্যুৎ নিগমে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত কোনও ইস্যু থাকলে এই টাস্ক ফোর্স পুরো বিষয়টি দেখবে এবং সাথে সাথে সমস্যার সমাধান করবে। মন্ত্রী জানান, এক দুইদিনের মধ্যে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেওয়া হবে। এই নম্বরে শুধুমাত্র স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত কোনও ইস্যু থাকলে গ্রাহকরা মেসেজ পাঠাতে পারবে। টিম সাথে সাথে সমস্যার সমাধান করবে। মনে রাখতে হবে, এই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর শুধুমাত্র স্মার্ট মিটার ইস্যু সংক্রান্ত। অন্য কোনও সমস্যার মেসেজ কিন্তু গ্রহণ করা হবে না। মন্ত্রী আশাব্যক্ত করে বলেন, আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ সমাধান করে নেওয়া হবে। এ নিয়ে আর কোনও অভিযোগই আশা করি উঠবে না।
অন্যদিকে, কিছু কিছু এলাকায় স্মার্ট মিটারের অস্বাভাবিক বিলের রহস্য উন্মোচন করতে নেমে যে তথ্য উঠে এসেছে তা রীতিমতো উদ্বেগের। এই অর্থ কিন্তু নিগমের কোষাগারে জমা হওয়ার কথা ছিল। তা কিন্তু হয়নি। বলা যায় এখন কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসছে। তবে সব জায়গাতে নয়, সামান্য কিছু ক্ষেত্রে এমন নজিরবিহীন ঘটনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই ঘটনা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে, এতদিন যে সব গ্রাহক কারচুপি করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে, স্মার্ট মিটার লাগানোর সাথে সাথে সেই কারচুপি বেরিয়ে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *