অন্ধ্রপ্রদেশের মন্দিরে একাদশীর ভিড়ে পদপিষ্ট, মৃত অন্তত সাত!শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর!!
স্বসহায়ক দলের হাত ত্রিপুরায় নতুন অধ্যায়, সর্ব প্রথম তৈরি হলো নীলকণ্ঠ ফুলের জৈব চা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা রাজ্যের কৃষি ও গ্রামীণ শিল্পোন্নয়নের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করলো তেপানিয়া ব্লক। এই প্রথম বারের মতো ত্রিপুরায় সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হলো বাটারফ্লাই পি ফুলের চা যা জনপ্রিয়ভাবে “ব্লু টি” নামে পরিচিত। এই অনন্য উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে তেপানিয়া ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। চা প্রেমীদের জন্য এটি এক অভিনব সংযোজন কারণ এই ব্লু টি সম্পূর্ণ ক্যাফেইনমুক্ত এবং ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ।তেপানিয়া ব্লকের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জৈব পণ্য উৎপাদনে দক্ষতা অর্জন করেছে।তবে এবার তারা সাহসিকতার সঙ্গে হাত দিয়েছে এমন এক উৎপাদনে যা রাজ্যের ভেষজ চা শিল্পে বিপ্লব ঘটাতে পারে।এই চা তৈরিতে ব্যবহৃত বাটারফ্লাই পি ফুল বা ক্লিটোরিয়া টারনেটা স্থানীয়ভাবে জৈব উপায়ে চাষ করা হচ্ছে। মাঠে কোনও রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে না। ফুল ফোটার পর তা সংগ্রহ করে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে পরে তা থেকেই তৈরি হচ্ছে এই অনন্য ব্লু টি। চাষের নীলাভ রঙ এবং ফুলের হালকা গন্ধ একে করে তুলেছে বিশেষ। স্বাস্থ্য গুণের দিক থেকেও এটি অন্য সকল চা থেকে আলাদা।এতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয় এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই শহরাঞ্চলে ব্লু টি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ‘ন্যাচারাল ডিটক্স টি’ হিসাবে। সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যরা বলেন এই চা তৈরির কাজ আমাদের আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করেছে। প্রতিদিনের শ্রমের ফল আজ আমরা হাতে পাচ্ছি। এখন আমাদের স্বপ্ন এই পণ্যকে রাজ্যের বাইরেও পৌঁছে দেওয়া। প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এই ব্লু টি-র ব্র্যান্ডিং এবং প্যাকেজিং প্রক্রিয়া শুরু করার। আধুনিক ডিজাইন আকর্ষণীয় প্যাকেট প্রস্তুত করে স্থানীয় ও অনলাইন বাজারে তা বিক্রির পরিকল্পনা চলছে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে শহরের কয়েকটি দোকানে ব্লু টি বিক্রি শুরু হয়েছে এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিলেছে। ত্রিপুরার আবহাওয়া ও মাটি বাটারফ্লাই পি ফুলের চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ফলে এই উদ্যোগ বড় পরিসরে প্রসারিত করা গেলে রাজ্যের অর্থনীতিতেও তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।এক বিশেষজ্ঞ জানান এই ফুল কেবল চায়ের জন্য নয় প্রাকৃতিক খাদ্য রঙ হিসাবেও ব্যবহার যোগ্য। তাই এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। তেপানিয়া ব্লকের এই সফলতা এখন রাজ্যের অন্যান্য ব্লকগুলির কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্লকের কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীও ব্লু টি উৎপাদনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তেপানিয়ার এই ব্লু টি বর্তমানে চা বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য সচেতন মহলে ব্যাপক আলোচনার বিষয়। চিকিৎসক মহলের একাংশ জানিয়েছেন নিয়মিত ব্লু টি পান করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ঘুম ভালো হয় এবং মস্কিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর পাশাপাশি এটি হজমশক্তি উন্নত করতেও সহায়ক। রাজ্যের শিল্পও বাণিজ্য দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন এই ধরনের গ্রামীণ উদ্যোগ যদি সঠিক দিক নির্দেশনা ও আর্থিক সহায়তা পায় তবে আগামী দিনে ত্রিপরা দেশের অন্যতম ভেষজ চা উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।ত্রিপুরার পাহাড়ি মাটিতে জন্ম নেওয়া এক নীল চা আজ রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন রঙ এনেছে-উন্নয়নের নীলাভ আলোর মতো। ভবিষ্যতে যদি সরকারী সহযোগিতা ও বাজারজাত করণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায় তবে তেপানিয়া ব্লকের এই ছোট্ট প্রচেষ্টা একদিন গোটা ত্রিপুরার গর্ব হয়ে উঠতে পারে।