December 13, 2025

সুশাসনে টেন্ডার ছাড়াই মদের লাইসেন্স নবীকরণে গুঞ্জন!!

 সুশাসনে টেন্ডার ছাড়াই মদের লাইসেন্স নবীকরণে গুঞ্জন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এক্সাইজ দপ্তরে টেন্ডারবিহীন মদের লাইসেন্স নবীকরণ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের এক্সাইজ দপ্তরকে ঘিরে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে প্রশাসনিক অস্বচ্ছতা ও সম্ভাব্য দুর্নীতির অভিযোগে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের পর রাজ্যের কোথাও বিলাতি মদের দোকানের জন্য সরকারী দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি আর্থিক বছরে বিলাতি মদ বিক্রেতা দোকানের লাইসেন্স নবীকরণ বা নতুন বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ নিলাম / টেন্ডার প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক। অভিযোগ, কোন দরপত্র আহ্বান না করেই বেশ কয়েকজন পুরনো লাইসেন্সধারীকে লাইসেন্স দেওয়ার হয়েছে। যাদের নামে লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ লেভি আরোপ করা হয়েছে। যদিও এই লেভি আরোপের পেছনে সরকারী যুক্তি এখনও জনসমক্ষে আসেনি। বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলছে টেন্ডার ছাড়া লাইসেন্স দেওয়া অধিকার কে দিল দপ্তরকে? এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়মের পরিপন্থী এবং আর্থিকভাবে রাজ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। অভিযোগ, এ ধরনের টেন্ডারবিহীন লাইসেন্স নবায়নের পেছনে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। অভিযোগ আরও তীব্র হয়েছে একারণে যে, পুরো প্রক্রিয়াটি হয়েছে নীরবে জনসমক্ষে কোন নোটিফিকেশন ছাড়াই।
প্রশাসনের স্বচ্ছতার অভাব নিয়েই আলোচনার ঝড় বইছে সচিবালয় থেকে মহকুমা সদর পর্যন্ত।এক্সাইজ দপ্তরের এই ধরনের আচরণ স্পষ্টতই নীতি লঙ্ঘন।নিলাম বা টেন্ডার হলে রাজ্যের আয় আরও বাড়ত।অথচ টেন্ডার না ডেকে রাজস্ব ক্ষতির দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছরে এই নিয়ম অকারণে স্থগিত রাখায় প্রশ্ন উঠছে দপ্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে। ২০২১ সালের পর নতুন কোনও প্রকাশ্য দরপত্র আহ্বান হয়নি। পুরনো লাইসেন্সধারীদের নবায়ন করা হয়েছে সরকারী বিবৃতি বা নোটিফিকেশন ছাড়াই। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।
নতুন টেন্ডার হলে বেশি দর উঠাতে পারত, যা বিশেষ মহলের অনুকূল হতো না। এ অবস্থায় স্পষ্ট প্রশ্ন-দরপত্র বন্ধের পেছনে কার স্বার্থ জড়িত? অনেকের বক্তব্য টেন্ডার হলে আমরাও অংশ নিতে পারতাম এবং নতুন সুযোগ আসত। এখন সবই গুটিকয়েক মানুষের দখলে।
রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমায় বিলাতি মদের দোকানের সংখ্যা ও রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য। এই খাতে স্বচ্ছতা না থাকলে রাজ্যে দুর্নীতির আশঙ্কা বেড়ে যায়।
আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠতেই অনেকেই চাইছে এ ব্যাপারে তদন্ত হোক। এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত দপ্তর কর্তৃপক্ষ কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। দপ্তরের নীরবতাই সন্দেহকে আরও ঘনীভূত করছে। দরপত্র হলে রাজ্যে রাজস্ব বাড়বে আর বাজার হবে প্রতিযোগিতামূলক। দরপত্র বন্ধ রাখলে বাজারে একচেটিয়া ব্যবস্থা তৈরি হয়।
বিলাতি মদের দোকানের লাইসেন্স বিতরণ- এমন একটি সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে এক্সাইজ দপ্তর ছেলেখেলা খেলছে। টেন্ডার না ডেকে যে ভাবে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট ভাবে নিয়মবহির্ভূত। দরপত্র না ডেকে লাইসেন্স নবীকরণে কে দিল সেই অনুমতি? কেন দেওয়া হলো এবং এই প্রক্রিয়ায় কারা লাভবান হলো- এই প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ ও প্রশ্নের স্তূপ জমলেও এক্সাইজ দপ্তর নীরব। এই নীরবতাই পরিস্থিতিকে আরও সন্দেহজনক করে তুলছে। এ প্রশ্নের উত্তরই ঠিক করবে রাজ্যের প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ভবিষ্যৎ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *