সারারাজ্যে ৮৬৪ টি সভা, যুক্ত হবে ১.৭২ লক্ষ কৃষক,বৃহস্পতিবার থেকে শুরু বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান!!
             
      অনলাইন প্রতিনিধি :- সারা দেশের সাথে রাজ্যেও শুরু হচ্ছে কৃষি জাগরণে কেন্দ্র ও রাজ্যের সর্ববৃহৎ কর্মসূচি। খারিফ মরশুমকে সামনে রেখে কৃষিক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারত এবং আত্মনির্ভর রাজ্য হওয়ার সংকল্পকে বাস্তবায়িত করতে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ‘বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান’। এই অভিযানে সারারাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে মোট ৮৬৪টি কৃষক সভা। ১ লক্ষ ৭২ হাজার কৃষক এই কর্মসূচিতে যুক্ত হবেন। এতবড় কর্মসূচি এর আগে রাজ্যে আর অনুষ্ঠিত হয়নি।এই অভিযান চলবে আগামী ১২ জুন পর্যন্ত। কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে নেওয়া হয়েছে। বুধবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যান মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, কৃষি জাগরণে সারাদেশের সাথে রাজ্যেও আগামীকাল এক নয়া ইতিহাস রচিত হতে যাচ্ছে। এই অভিযান রাজ্যের কৃষক ও কৃষিক্ষেত্রে আগামী দিনে বিরাট পরিবর্তন আনবে বলে মন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। এই প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী জানান, ২৯ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সারা রাজ্যের ৮ টি জেলার ৮৬৪ টি স্থানে এই অভিযান উপলক্ষে কৃষি সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত হবে।প্রতি জেলায় তিনটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন ৭২ টি সভা করা হবে। ন্যূনতম ২০০ জন কৃষককে নিয়ে এই সভাগুলি করা হবে। এই অভিযানে মোট ২৪ টি কৃষি রথকে রাজ্যব্যাপী কাজে লাগানো হবে। কৃষি সংক্রান্ত প্রচার অভিযানের জন্য প্রতিটি টিমের সাথে থাকবে একটি করে রথ। আগামীকাল সিপাহিজলা জেলায় এই অভিযান কর্মসূচির সূচনা হবে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার উপস্থিতিতে। তিনি জানান, এই অভিযানের মূল উদ্দেশ হচ্ছে দেশে কৃষিক্ষেত্রের সমৃদ্ধি ঘটানো এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ধারণাকে কৃষকদের কাছে পৌঁছানো। এছাড়াও ক্ষেত্র পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে কৃষির প্রকৃত তথ্য সম্পর্কে অবগত হওয়া। পাশাপাশি কৃষকদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে জ্ঞাত হওয়া।
কৃষিমন্ত্রী জানান, এই কর্মসূচির আরও যে উদ্দেশ্য রয়েছে তা হলো কীভাবে আমরা কৃষিতে আত্মনির্ভর হতে পারি। এছাড়াও সভাগুলিতে কৃষকদের উন্নতির স্বার্থে এবং কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে সরকার কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সভাগুলিতে কৃষকদের চাহিদা, সুবিধা অসুবিধা, কেমন মাটিতে কী ধরনের চাষ, উন্নত আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার, জৈবচাষ পদ্ধতি, জৈবচাষের গুরুত্ব, কৃষিক্ষেত্রে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার, জলবায়ু অনুকূল চাষ পদ্ধতি, আবহাওয়া এবং ফসলবিমা সম্পর্কে অবহিতকরণ, পশুপালন পদ্ধতি, মৎস্যচাষ পদ্ধতি ইত্যাদি বিভিন্ন কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি জানান, এই সভাগুলিতে জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি কৃষি, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকগণ, কেভিকে, আইসিএআর ইত্যাদি বিভিন্ন – দপ্তরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির কৃষি বৈজ্ঞানিক এবং এফপিও-রাও উপস্থিত থাকবেন। কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং কৃষকদের উন্নতির স্বার্থে খুবই আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন। এরই ফলস্বরূপ বর্তমানে রাজ্যে কৃষিক্ষেত্রে শিক্ষিত যুবক যুবতীরাও এগিয়ে আসছে। মূলত দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ এবং আধুনিক প্রযুক্তিকে তাদের কাছে পৌঁছে দিতেই এই অভিযানের সূচনা। কৃষিমন্ত্রী জানান, এই অভিযানকে রাজ্যে সফলভাবে সম্পন্ন করতে সরকার থেকে চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি রাজ্যের সকল অংশের নাগরিকের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।