প্রবল বন্যায় বিধ্বস্ত পাঞ্জাব! জলের তলায় হাজারের বেশি গ্রাম, মৃত ২৯
সংবাদমাধ্যমকে ‘শত্রু’ হিসাবে আখ্যা, হঠাৎ মন্ত্রী কিশোরকে ভয় তাড়া করছে!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ভয় তাড়া করছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী কিশোর বর্মণকে। মন্ত্রী কিশোর বর্মণ এখন তার চতুর্দিকে শুধু শত্রুদের দেখছেন। শয়নে স্বপনে তাকে এখন শত্রুরা তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তার এই শত্রু ভয়ের উৎকণ্ঠা সোমবার প্রকাশ্যে এলো। এদিন আগরতলা এডিনগর পঞ্চায়েত রাজ ট্রেনিং সেন্টারে, পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী কিশোর বর্মণের কন্ঠে শত্রু ভয়ের কথা বেরিয়ে আসে। তার এই বক্তব্য ইতিমধ্যে সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। তার এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের যেসব মন্তব্য পোস্ট হচ্ছে, তা কিশোরবাবুর জন্য মোটেও সুখকর নয়। এক কথায় তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।এদিন সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী কিশোর বর্মণ পঞ্চায়েত জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা কেউ মন্ত্রী হয়েছি, কেউ চেয়ারম্যান হয়েছি, কেউ আমরা সভাধিপতি হয়েছি। আমাদের প্রত্যেকের পিছনে কিন্তু শত্রু আছে, এটা সকলকে মাথায় রাখতে হবে। যে শত্রু বিরোধী দলের হতে পারে, আমার দলের মধ্যে হতে পারে, এমনকী সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে অন্যান্য মাধ্যমও হতে পারে। তাই সব সময় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা এখন শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি, তা কিন্তু নয়। মন্ত্রী কিশোরের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে।বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে কিশোর বর্মণকে নিয়ে এমন সব মন্তব্য আসতে থাকে, যা পত্রিকায় লেখা সম্ভব নয়। অনেকে বলছেন, আচমকা মন্ত্রিত্ব হাতে পেয়ে কিশোরবাবু এখন চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন।জনপ্রতিনিধি উপদেশবাণী শোনাচ্ছেন। কিন্তু তিনি হয়তো ভুলে গেছেন, এই সংবাদমাধ্যমই ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনে অন্যতম প্রধান সহায়কের ভূমিকা পালন করেছিল। কিশোরবাবু আজ যাদের শক্ত (সংবাদমাধ্যম) মনে করছেন, সেই শত্রুরাই আপনার মতো প্যারাসুট ড্রপারকে ত্রিপুরায় পরিচিতি দিয়েছে। ২০২৩ সালের আগে আপনাকে আপনার পরিবার ছাড়া এ রাজ্যে আর ক’জন চিনতো? আপনার হঠাৎ মন্ত্রিত্ব পাওয়ার কারণটাও সংবাদমাধ্যম খুব ভালো করেই জানে।
২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নলছড়ে আপনার জয়লাভের পিছনেও সংবাদমাধ্যম অন্যতম সহায়ক ভূমিকা
পালন করেছিলো। কিশোরবাবুর কাছে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্ন, গোটা ত্রিপুরার কথা ছেড়ে দিন, আপনার জন্মস্থান নলছড়ের ক’জন মানুষ আপনাকে চিনতো? আপনাকে নলছড় এবং গোটা ত্রিপুরাবাসীর কাছে পরিচিতি দিয়েছে সংবাদমাধ্যম। আর সেই সংবাদ মাধ্যমকে আপনি শত্রু হিসাবে মূল্যায়ন করলেন। সংবাদমাধ্যমকে আপনি শত্রু আখ্যা দিয়ে দাগিয়ে দিলেন? আপনার এই বক্তব্য থেকে আপনার অহংকার, দাম্ভিকতা এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ মনোভাবটি রাজ্যবাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সংবাদমাধ্যম যে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ, হঠাৎ মন্ত্রিত্ব লাভের পর হয়তো কিশোরবাবু এই সত্যটাকে ভুলে গেছেন। নয়তো গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে এভাবে তিনি শত্রু আখ্যা দিয়ে দাগিয়ে দিতে পারেন না।আপনার ক্ষমতা,মন্ত্রিত্ব আজ আছে,কাল থাকবে না। গণতন্ত্রের এটাই মহিমা।কিন্তু সংবাদমাধ্যম ছিলো, আছে এবং থাকবে। তবে আজ আপনার এই বক্তব্যের পর, ভবিষ্যতে সংবাদমাধ্যমও আপনার বিষয়ে সতর্ক থাকবে।