নেপাল হয়ে বিহারে ঢুকেছে জইশ জঙ্গি, রাজ্য জুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা!!
শিলচরের চেয়ে এগিয়ে ত্রিপুরা বর্ষপূর্তিতে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-নিজেদের দক্ষতা, উৎকর্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে আত্মবিশ্বাস। আমরা পারি এই মনোভাব পোষণ করতে হবে নিজের মনে। সেই সঙ্গে নিজেদের ভালো কাজের প্রচার করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের উদ্দেশে এই মন্তব্য করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। বুধবার ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ ও ড. বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকর স্মৃতি হাসপাতালের কুড়িতম প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধক এবং প্রধান অতিথি হিসাবে ভাষণ দিকে গিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য পেশায় যুক্ত থাকার সুযোগ সবার হয় না। চিকিৎসক হিসাবে কাজ করার সুযোগ আসে ভগবান প্রদত্ত সুবিধা হিসাবে। এই কথা মাথায় রেখে সবাইকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হয়ে
কাজ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।২৭ আগষ্ট ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাদিবস। এই কথা নতুন করে মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দিনটিকে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে শপথগ্রহণের দিন হিসাবে মনে করতে বলেন। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি মনে হলে তার গর্ব অনুভব হয়। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। বলেন, এককালে বাইরে রোদের মধ্যে প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। এখন বাতানুকূল সভাগৃহে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বুধবার সাড়ে সাতশো আসন ক্ষমতার দ্বিতল বিবেকানন্দ সভাগৃহে প্রতিষ্ঠাদিবস উদ্যাপন করা হয়। এর ভূমিতলে আয়োজন করা হয় স্বেচ্ছা রক্তদান শিবির। উপরের তলে করা হয় মূল অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে রাজ্যের বাইরে রোগী স্থানান্তর না করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এই প্রসঙ্গে শিলচরের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার তুলনা টানেন। বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার দিক থেকে শিলচরের তুলনায় রাজ্য অনেক এগিয়ে রয়েছে। তিনি ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু শল্য, অস্থি শল্য সহ অন্যান্য বিভাগের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স সহ অন্যান্যদের বিশ্বাসযোগ্যতা আশাপ্রদ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার ভাষণে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসা পেশায় হবু এবং নয়া ডাক্তারদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান। আলস্যকে প্রাধান্য না দিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন।নিজের বক্তব্যে তিনি রাজ্যে নেশাসক্তি ও সেই সূত্রে এইচআইভি এবং এইডস রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির ভাষণ দিতে গিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব কিরণ গিত্যে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটছে বলে দাবি করেন। বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সাধারণত প্রবৃদ্ধির ১.৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে খরচ করা হয়। ত্রিপুরায় খরচ করা হয় ৩ শতাংশ। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ডা. অরিন্দম দত্ত। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন কমিটির সম্পাদক ডা. অমর কান্তি চাকমা। সভাপতির ভাষণ দেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতির চেয়ারপার্সন ডা. প্রমথেশ রায়। তিনি তার ভাষণে ত্রিপুরা মেডিকেলের এমবিবিএসের আসন সংখ্যা ১০০ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫০ এবং স্নাতকোত্তর স্তরের আসন সংখ্যা ৮ থেকে বৃদ্ধি করে ১৮টি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সবার অতিরিক্ত ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা প্রদান করা সহ মাসের চতুর্থ শনিবারে ছুটির ঘোষণা দেন তিনি। অনুষ্ঠানে পরিচালন সমিতির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপন সাহাও ভাষণ দেন। অংশ নেন হাসপাতালের মেডিকেল সুপার ডা. জয়ন্ত কুমার পোদ্দার। এ উপলক্ষ্যে শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সফল ছাত্রছাত্রী, হবু চিকিৎসকদের পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার প্রাপকের মধ্যে রয়েছে তন্ময়ী তারণ, হৃদিতা মজুমদার, সপ্তর্ষি চক্রবর্তী, রাকেশ দেবনাথ, আয়ুষি কুমারী, অনুরাধা সাহা, সুজাতা পাল, সপ্তদীপা দত্ত, মধুরিমা নন্দী, কাশিস মিশ্র, অঙ্কনা দত্ত, রক্ষন্ধ্যা ইয়াসমিন, গৌতম ইলম্বম, দেবাঙ্গ মণ্ডল, ত্রিদিস্মিতা দাস, আস্থা, শুভব্রত ঘোষ এবং এলিনা শর্মা সরকার। ডা. শিবেন্দু মোহন দাস, ডা. মিহির কান্তি দাস, ডা. প্রমথেশ রায় ও এন দেববর্মার নামাঙ্কিত পুরস্কার তুলে দেয় অতিথিরা।