শিক্ষামন্ত্রক, ইউজিসির নির্দেশে,বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত নিল ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-অবশেষে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তরফে রীতিমতো দাবড়ানি খেয়ে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। বায়োমেট্রিক এটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া থেকে ছাড় পাবেন না খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রারার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য আধিকারিকরা। এমনকী বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া থেকে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, এসিস্টেন্ট প্রফেসররাও ছাড় পাচ্ছেন না। তাদের সকলকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শারীরিকভাবে উপস্থিতির প্রমাণ দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এগজিকিউটিভকাউন্সিলের বৈঠকে বায়োমেট্রিক আটেন্ডেন্স প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্তে সিলমোহর প্রদান হয়েছে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার সহ শিক্ষামন্ত্রক এবং ইউজিসির প্রতিনিধিরা। আর এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে,ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ্রেণীর অধ্যাপক বছরের বেশির ভাগ সময় নানা অজুহাতে বহিঃরাজ্যে থাকছেন। অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন তারা রাজ্যে থাকলেও সেমিনারের নাম দিয়ে যথাসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। এখন নতুন করে সংযুক্ত হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের কর্মশালার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসার প্রবণতা। যার খেসারত দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী। বিপাকে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো গবেষকরা।
যথাসময়ে শেষ হচ্ছে না গবেষণা।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী সেমিস্টার পদ্ধতিতে শ্রেণীকাণ্ড যে পরিমাণ পঠনপাঠন হওয়ার কথাচ তাও হচ্ছে না।উল্টে বিভাগে বছরের পর বছর বন্ধ থাকছে নিয়মিত পড়াশোনা।যার পরিণতিতে সিলেবাস শেষ হচ্ছে না। ফেল করছেন ছাত্রছাত্রীরা।
একই হাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ প্রশাসনিক আধিকারিকের। তারাও যথা সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। তাই এক মাসের কাজ ছয় মাসেও শেষ হচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে শিক্ষক কর্মচারীরা। জানা গিয়েছে সম্প্রতি এই অভিযোগগুলো প্রমাণ সহ মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে গিয়েছে। এরপরই নড়েচড়ে দিল্লী বসলো কেন্দ্রীয় সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, সারা দেশে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেবলমাত্র ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শেষরক্ষা হলো না। ছাত্রছাত্রী, গবেষক এবং অধ্যাপকদের অভিযোগমূলে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চালু হচ্ছে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া।
জানা গিয়েছে, এর আগেও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স প্রক্রিয়া চালু উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তীব্র প্রতিবাদে এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রবল বাঁধাতে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স প্রক্রিয়া চালু করা যায়নি।
এখন একুশে জুলাই বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া চালুর ঘিরে যে নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তরফে জারি করা হয়েছে,এর বিরুদ্ধেও পথে
নেমে গিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
যদিও এ দফায় শিক্ষামন্ত্রক এবং ইউজিসির নির্দেশে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স প্রক্রিয়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্ত আগামী ৩১ হবে জুলাই থেকে কার্যকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর, অতিথি শিক্ষক, গ্রুপ এ অফিসারদের জন্য।
৩১ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, প্রফেসর, ফিনান্স অফিসার সহ অন্যান্য সাংবিধানিক পদের আধিকারিকদের জন্য কার্যকর হবে।