ছাত্র ভর্তির অনৈতিক দাবিতে উত্তাল কলেজ,শিক্ষকদের দরজা বন্ধ করে বিক্ষোভ, অশ্লীল গালাগাল!!
শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে টিস্কোয়াফ : মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়নে আরও এক নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের মধ্য দিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়কে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে গিয়েই বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এই প্রয়াস নেওয়া হয়। শুক্রবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় রাজ্যভিত্তিক এই কার্যক্রমটির সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। এরপরই তিনি টিস্কোয়াফ (টিএসকিউএএএফ) অর্থাৎ ত্রিপুরা স্কুল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্কের মৌলিক বিষয়গুলি তুলে ধরেন। তার কথায়, এর উদ্দেশ্যই হলো প্রতিটি বিদ্যালয় যেন নিজের বর্তমান অবস্থানকে নির্ণয় করে উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। এদিন দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং ধলাই জেলায় পরিচালিত স্কুল কমপ্লেক্স কর্মসূচিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন স্তরের মোট একান্নজন শিক্ষাকর্মীকে সংবর্ধিত করেন মুখ্যমন্ত্রী।বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে এবং সমগ্র শিক্ষা অভিযান ও এসসিইআরটির সহায়তায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে এই টিস্কোয়াফ।শিক্ষা শুধুমাত্র প্রথাগত শংসাপত্র অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। জীবনে নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতেও এটি একটি অপরিহার্য অনুঘটক হিসাবে কাজ করবে। তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরাই যাতে আনন্দময়, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ পায় সে লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। টিস্কোয়াফও এমনই একটি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচির উদ্দেশ্যই হলো প্রতিটি বিদ্যালয়কে উন্নয়নের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এই ফ্রেমওয়ার্ককে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২২-এর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে।

আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্দেশে বলেন, পড়াশোনা শেখানোর গতানুগতিক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।উদ্ভাবনীমূলক চিন্তাভাবনা সংযুক্তিকরণের মধ্য দিয়ে শিক্ষাকে ছাত্রছাত্রীদের কাছে আরও বেশি মনোযোগী করে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বরাবরের মতোই বলেন যে শিক্ষা কেবলমাত্র পাঠ্যবইভিত্তিক না হয়ে মূল্যবোধ, বিকাশ ও জাতি গঠনের মাধ্যমে হয়ে উঠুক। আর এতেই ছাত্র ছাত্রীরা আগামীদিনে দেশ ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে উপস্থিত সকলের উদ্দেশে আহ্বান রাখেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য বাজেটের সর্বাধিক অর্থ শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয়িত হয়। রাজ্যের শিক্ষা প্রদান পরিকাঠামো উন্নয়নে সহর্ষ, নিপুণ, বিদ্যাসেতু-এর মতো কর্মসূচিও চালু রয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রের যেকোনো বিভাগে যাতে রাজ্যের নাম দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির নামের সাথে অন্তর্ভুক্ত হয় সেদিক থেকে নজর রেখেই সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা মানুষের জানা এবং অজানার মধ্যে এক সেতু বন্ধনের কাজ করে। তিনি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচিগুলির কথা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, শিক্ষাকে আরও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে সিএম সাথ প্রকল্পে ২০০ জন মেধাবী ছাত্র ছাত্রীকে ষাট হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদান, মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনায় ১৪০ জন ছাত্রীকে স্কুটি, ১,২২,৫০৯ জন (নবম শ্রেণীর) ছাত্রীকে বাইসাইকেল প্রদান করা হচ্ছে অন্যতম। আরও বলেন, মহাবিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীদের ফি মকুব করা হয়েছে। ফলে মহাবিদ্যালয়ে ছাত্রীদের উপস্থিতির হার ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে বলে জানান। এদিক থেকে আগামীদিনে রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীরা দেশের অন্যান্য প্রান্তের ছাত্র ছাত্রীদের সাথে প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে সম সুযোগ পাবে বলেও মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব বলেন, ড্রপ আউটের হারের নিরিখে জাতীয় গড়ের চাইতে রাজ্যের হার অনেকটাই কম। তিনি আগামীদিনে রাজ্যে পাঠ্যসূচি পরিবর্তিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান। অনুষ্ঠানে বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তাও বক্তব্য রাখেন। এদিন টিস্কোয়াফ-এর উপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও টিস্কোয়াফ-এর একটি বইয়ের আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এসবিআই ফাউন্ডেশনের এমডি তথা সিইও সঞ্জয় প্রকাশ, জেলা শিক্ষা আধিকারিক, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা ও বিভিন্ন স্তরের শিক্ষানবিশরা।
