শক্তি সংরক্ষণে ফের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে ভূষিত হলো ত্রিপুরা!!
শক্তিশালী সত্য ইতিহাসই সশক্ত ভবিষ্যৎ নির্মাণ করেঃ বিপ্লব!!মোহনপুরে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে দলের অতীত জানলো গোটা রাজ্যবাসী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-আভাসটা পাওয়া যাচ্ছিল গত ক’দিন ধরেই। রাজ্য রাজনীতিতেও এনিয়ে গত ক’দিন ধরে জল্পনা চলছিলো। রবিবার – মোহনপুরে সেই জল্পনারই সমাপন দেখলো গোটা রাজ্যবাসী। আর এই সমাপনের নেপথ্য নায়ক হলেন রাজ্য রাজনীতির চানক্য মোহনপুরের জনপ্রিয় বিধায়ক তথা রাজ্যের বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এক মঞ্চে রাজ্যের প্রাক্তন ও বর্তমান, মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে এনে একইসাথে রাজ্যবাসী, রাজ্যের বিরোধীদল গুলি এবং দলীয় কার্যকর্তাদের এমন এক বার্তা দিলেন। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে ‘বিপ্লব-মানিক-রতন’ জুটি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কেননা, এই মঞ্চেই ভাষণ দিতে গিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে একে অপরকে যেভাবে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন। তাতেই নতুন করে এই জল্পনার জন্ম দিয়েছে। অন্যদিকে তাদের দু’জনের মুখে উঠে এলো চাণক্য রতনের প্রশংসাও। শুধু তাই নয়, আজ মোহনপুরে যেন রাজ্য রাজনীতির নতুন করে ভবিষ্যৎ দিশা নির্ধারিত হলো। একইসাথে এদিন রাজ্যের বিরোধী দলগুলির নানা জল্পনাকল্পনাতেও জল ঢেলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। সব মিলিয়ে রবিবার মোহনপুর থেকে বিপ্লব-মানিক-রতন জুটি রাজ্য রাজনীতি এবং রাজ্যবাসীকে যেন এক অন্য বার্তা দিলো।আর এই বার্তা হলো আরও শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ বিজেপি।রবিবার মোহনপুর দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় মাঠে মোহনপুর বিজেপি মণ্ডলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় পৃষ্ঠা প্রমুখ সম্মেলন।এলাকার বিধায়ক রাজ্যের কৃষি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথের উদ্যোগে আয়োজিত এই সাংগঠনিক কর্মসূচিতে মোহনপুর
বিধানসভার ৫৬ টি বুথ থেকে ১০৩৮ জন পৃষ্ঠাপ্রমুখ অংশ নেন।

এই কর্মসূচিতে রাজ্যের প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি প্রদেশ সভাপতি সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, দলের দুই সাধারণ সম্পাদক বিধায়ক ভগবান দাস ও অমিত রক্ষিত, বিজেপির সবগুলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। পৃষ্ঠা প্রমুখ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আজ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ-লব কুমার দেব, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং এলাকার জনপ্রিয় বিধায়ক মন্ত্রী রতন লাল নাথ প্রত্যেকেই উপস্থিত পৃষ্ঠাপ্রমুখ এবং দলীয় নেতৃত্বদের হৃদয় ছুঁয়ে গেলেন। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাকে আজ দেখা গেলো একেবারে অন্য ভূমিকায়। ভাষণ দিতে উঠে আজ তিনি স্মৃতির ঝাঁপি খুলে অতীত রোমন্থন করলেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব কে মঞ্চে বসিয়ে, তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন। বিপ্লব দেবের হাত ধরে ২০১৬ সালে তার বিজেপি দলে যোগদান থেকে শুরু করে, প্রথমে বিস্তারকের দায়িত্ব পাওয়া, এরপর মেম্বারশিপ অভিযানের দায়িত্ব পাওয়া, তারপর সারা রাজ্যে পৃষ্ঠা প্রমুখ গঠন করার দায়িত্ব পাওয়া, তারপর রাজ্য সভাপতি, এরপর রাজ্যসভার সাংসদ পদে যাওয়া, সেখান থেকে আবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসা পর্যন্ত, প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের অবদানের কথা তিনি আজ প্রকাশ্যে তুলে ধরলেন। শুধু তাই নয়, কমিউনিস্ট শাসিত ত্রিপুরায় কীভাবে বিজেপি দলকে একটু একটু করে বিপ্লব কুমার দেব গড়ে তুলেছিলেন, তার সাংগঠনিক দক্ষতা, তার অমানসিক পরিশ্রমের ইতিহাস তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ভারতবর্ষে কমিউনিস্ট শাসিত কোনও রাজ্যে প্রথম বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত করার কৃতিত্ব এবং ত্রিপুরাকে কমিউনিস্ট শাসন থেকে মুক্তি দিয়েছে বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন, অনেকেই আমার এবং বিপ্লব দেবের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা বলেন। বিশেষ করে বিরোধীরা। আমাদের দলেরও কেউ কেউ তাতে শামিল হয়। বিরোধীরা ভাবছে আমাদের দু’জনের মধ্যে মতানৈক্য প্রচার করলে তাদের সুবিধা হবে। ভাদের আর কিছুই করতে হবে না। এটাও একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ ৫৫ মিনিটের ভাষণে এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার অতীতে ফিরে যেতে দেখা গেছে। অতীত রোমন্থন করতে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ কয়েকবার আবেগ প্রবণ হয়ে পড়তেও দেখা গেছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কন্ঠে স্ত্রী রতন লাল নাথের প্রশংসাও শোনা গেছে।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিপ্লব কুমার দেব দলীয় কার্যকর্তাদের কীভাবে
উজ্জীবিত করতে হয়, কার্যকর্তাদের কীভাবে দলের প্রতি আন্তরিক, আনুগত্য বং নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করতে হয় তা আবারও এদিন প্রমাণ প্রলেন। সম্মেলনে উপস্থিত পৃষ্ঠা প্রমুখ থেকে শুরু করে দলীয় নেতৃত্বরা তার শ্রা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনলেন। বিপ্লব বলেন, সবাইকে অতীত ইতিহাস মনে রাখতে ব। অতীত ছাড়া বর্তমান হয় না, আর বর্তমান ছাড়া ভবিষ্যৎ নির্মাণ হয় না। -লব বলেন, শক্তিশালী সত্য ইতিহাসই সশক্ত ভবিষ্যৎ নির্মাণ করে। তাই তিটি কার্যকর্তাকে অতীত স্মরণে রেখে বর্তমানকে সমৃদ্ধ করে ভবিষ্যতের দিশা জারিত করতে হবে।তিনি এই ধরনের সাংগঠনিক কর্মসূচি সারা রাজ্যে য়োজিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দলের প্রতিটি বিধায়ককে নিজ নিজ এলাকায় এই কর্মসূচি আয়োজন করে কমিউনিস্টদের জবাব দেওয়ার পরামর্শ দেন। এদিনও কড়া ভাষায় কমিউনিস্টদের আক্রমণ করেন এবং তীব্রভাবে সমালোচনা করেন। সবমিলিয়ে এদিন এদিন মোহনপুর থেকে রাজ্যের শাসকদল রাজ্যবাসী এবং রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়েছে।যা নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা উসকে দিয়েছে।