December 13, 2025

রুখিয়াতে নয়া প্রযুক্তির বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভূমিপূজন,মাটির নীচে গ্যাস শেষ হয়ে যাচ্ছে তাই নতুন প্রযুক্তি জরুরি: রতন!!

 রুখিয়াতে নয়া প্রযুক্তির বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভূমিপূজন,মাটির নীচে গ্যাস শেষ হয়ে যাচ্ছে তাই নতুন প্রযুক্তি জরুরি: রতন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-যারা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে পারবে না, তাদের বর্তমান পৃথিবীতে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। তাই হুকলাইন নয়, ঘরে ঘরে পিএম সূর্যঘর সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করুন। মঙ্গলবার সোনামুড়া মহকুমার বক্সনগরের রুখিয়া বিদ্যুৎ প্রকল্পে আধুনিক প্রযুক্তির ১২০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস টারবাইন প্রকল্পের ভূমিপূজন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।
১৩২০ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠবে এই প্রকল্পটি। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা যেন নির্ধারিত সময়সীমা ৩ বছরের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন করতে পারে এই বিষয়ে নিজের ভাষণে গুরত্ব আরোপ করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। তিনি জানান, আধুনিক প্রযুক্তির এই টারবাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গ্যাসের প্রয়োজন হবে না। বরং একই পরিমাণ গ্যাসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে দ্বিগুণ। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে এই রুখিয়া বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হয়। ৬টি ধাপে মোট ৯ টি ওপেন সাইকেল গ্যাস টারবাইন বসানো হয় এখানে। কিছুদিন চলার পর ১ থেকে ৬ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। ২০০২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে থাকে। এরপর ৩ টি ইউনিট চালু হয়। প্রতিটি থেকে ২১ মেগাওয়াট করে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এগুলি থেকে যে গরম গ্যাস বেরোয় তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। নতুন এই প্রযুক্তির কম্বাইন্ড সাইকেল টারবাইনে এই গরম গ্যাস থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবার আধুনিকীকরণ ও উন্নয়নে বর্তমান সরকারের সাড়ে সাত বছরের সময়কালে কী কী কাজ হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।তিনি বলেন, রাজ্যে আগে ১৩২ কেভি সাবস্টেশন ছিল ১২ টি। বর্তমানে রয়েছে ২১ টি। ৩৩ কেভি সাবস্টেশনের সংখ্যা ৪৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫ টি। আরও ১৮ টির কাজ চলছে। পরিবাহী লাইনের পরিমাণ বৃদ্ধি ছাড়াও ২১৭কিলোমিটার ইলেকট্রিফিকেশন করা রেললাইন

আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবেল পাতা হয়েছে ৫৭১ কিমি, আগে যা ছিল মাত্র ৯৫ কিমি। তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গোটা দেশে ত্রিপুরা চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
বিদ্যুৎ চুরি বন্ধের পাশাপাশি সবাইকে বিদ্যুৎ বিল প্রদানের আবেদন রাখেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। হুকলাইন ও বিল প্রদানের ক্ষেত্রে এখনও কিছু গ্রাহকের অনীহা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। সোনামুড়া মহকুমার হিসেব দিতে গিয়ে রতন লাল নাথ বলেন, এই মহকুমাধীন নলছড় বিদ্যুৎ সাব- ডিভিশনের আওতায় ৪৫ শতাংশ, মেলাঘরের ক্ষেত্রে ৪৪ শতাংশ, কাঠালিয়ার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ, সোনামুড়ার ক্ষেত্রে ৪৯ শতাংশ গ্রাহক বিল প্রদান করেন। আর বক্সনগর সব-ডিভিশনের অবস্থা যে সর্বনিম্ন তারও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। বলেন, বক্সনগরে মাত্র ২২ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল প্রদান করেন। এই অবস্থা হলে নির বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা কী ভাবে প্রদান করা যাবে? প্রশ্ন রাখেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার সময় যতটা লোডের কথা বলে লাইন নামান গ্রাহকরা, পরবর্তী সময় অনেকেই ওভারলোড ব্যবহার করেন। সেই কারণেই অনেক সময়ই পরিবাহী তার পুড়ে গিয়ে পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। তার বাইরে রয়েছে হুকলাইনের সমস্যা। তিনি বলেন, গত সাড়ে সাত বছরে রাজ্যে ৫০ হাজার ৬৬৭টি হুকলাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১২ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা। এই হুকলাইনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে আগামী দিনে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যে তার টেন্ডার হয়ে গেছে বলেও অবৈধ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।
তাছাড়াও ভাষণ রাখতে গিয়ে বক্সনগরের বিধায়ক তফাজ্জল হোসেন রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের স্বার্থে বিদ্যুৎমন্ত্রী বিদেশ থেকেও বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে আসছেন বলে অভিহিত করেন। যা আগের সরকারের আমলে চিন্তাও করা হয়নি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সিপাহিজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিশ্বজিৎ বসু, বক্সনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন স্বপ্না নাম: সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *