রাজ্যে রাজনৈতিক উচ্ছৃঙ্খলতা – বরদাস্ত করব না: প্রদ্যোত!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-অবশেষে বিজেপি ও তিপ্রা মথার মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে মুখ খোললেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। তিনি বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। আলোচনায় বসে সব সমস্যার সমাধান হয়। একটি অংশ এই পথে যাচ্ছে না। যা ঠিক হচ্ছে না। তিপ্রা মথা সর্বদা শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। আমরা এই রাজনৈতিক উৎশৃঙ্খলতা বরদাস্ত করব না। রাজ্য সরকারের কাছে আমার অনুরোধ যারা হিংসার রাজনীতি করবেন তাদের বিরুদ্ধে যাতে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়।সোমবার রাজধানীর জেলা ও দায়রা আদালতে মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ সাংবাদিকদের জানান,
রাজনৈতিক হিংসার এই অপসংস্কৃতি সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরাতেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের অন্য কোন রাজ্যে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এ ধরনের হিংসা হচ্ছে না।ত্রিপুরাতে এই অপসংস্কৃতির কারা আমদানি করেছে।এটা রাজ্যের সকল মানুষেরই জানা রয়েছে।আমাদের মূল লক্ষ্য হলো রাজনীতি এই অপসংস্কৃতি থেকে ত্রিপুরাকে মুক্ত করতে হবে। তাই দলমত নির্বিশেষে যারাই রাজনৈতিক হিংসা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন,আমাদের মূল লক্ষ্য ত্রিপুরার শান্তি সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখা। যাতে রাজ্যে সর্বক্ষেত্র আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়। কিন্তু বাস্তব হল ত্রিপুরাতে প্রত্যেক দিন রাজনৈতিক মতাদর্শ ঘিরে হামলা পাল্টা হচ্ছে। এক ভাই অপর ভাইয়ের উপর প্রাণঘাতী হামলা করছেন।এই কারণেই ত্রিপুরার যুব সমাজের একটি অংশের আজ বেহাল দশা। তারা বুঝতে পারছে না, ক্ষমতা পরিবর্তনশীল। আজ আমি যে পরিবারে হামলা করব। কয়েক বছর দেখা যাবে এই পরিবার আমার উপর হামলা চালাচ্ছে। এই অপসংস্কৃতির জন্য ত্রিপুরার সুনাম দেশব্যাপী খারাপ হচ্ছে।প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে। ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত আদায়ের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সাথে বৈঠক হয়েছে। এখন ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত আদায়ের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের চেষ্টা হচ্ছে। যাতে আমাদের সব সমস্যার নিরসন হয়। গত ৭০ বছর ধরে আমাদের বিভিন্নভাবে ঠকানো হয়েছে। যার জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখন আবার অবৈধ অনুপ্রবেশ। অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধের জন্যেও দেশের নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক হয়েছে। সবই যখন ঠিকঠাক চলছে তখন আমাদের মধ্যে অতি উৎসাহী একটা অংশ রাজনৈতিক বর্বরতা নেমে পড়েছে। যা ঠিক হচ্ছে না। এতে আদতে ক্ষতি হচ্ছে আমাদের।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, রাজ্যের ঐক্য সংহতি রক্ষায় আমাদের
পথে থাকতে হবে। আজ যা হয়েছে, তা যদি পুনরায় হয়। এমনকি এতে যদি তিপ্রা মথার কোনও প্রতিনিধি জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ হবে। এ ধরনের হিংসাত্মক হামলা আমরা বরদাস্ত করবো না। রাজ্যের মানুষ যেকোন রাজনৈতিক দলের নেতা মন্ত্রী কর্মী সমর্থক হতে পারেন। এই ব্যক্তিস্বাধীনতা রাজ্যের মানুষকে দেশের সংবিধান দিয়েছে। মানুষের অধিকার রয়েছে তারা যে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে নিতে পারেন। যে যার পছন্দমতো রাজনৈতিক দলকে ভোটও দিতে পারেন। এই স্বাধীনতা সারা দেশের মানুষের সাথে রাজ্যে প্রত্যেক মানুষের রয়েছে। আমরা কোন প্ররোচনায় পা দেবো না, শুধু তাই নয় আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
এদিকে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ জানান, ভিলেজ কমিটির নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে মথা। যাতে অবিলম্বে ভিলেজ কমিটির নির্বাচন রাজ্যে হয়। তার দাবি ভিলেজ কমিটি নির্বাচন না হওয়ার দরুণ এডিসি এলাকার উন্নয়নের কাজ থমকে গিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে দিল্লী পুলিশের উত্থাপিত বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। তার অভিযোগ দিল্লী পুলিশ এভাবে বাংলা ভাষাভাষীদের অপমানিত করতে পারেন না। সংবিধানের অষ্টম তপশিলের অন্যতম ভাষা হলো বাংলা। বাংলা ভাষাভাষীদের প্রতি চরম অবমাননা করেছে দিল্লী পুলিশ।সংবিধানকে পর্যন্ত অবজ্ঞা করতে চাইছে দিল্লী পুলিশ।যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।