November 15, 2025

রাজ্যের লক্ষ্য শিক্ষা হাবঃ মুখ্যমন্ত্রী!!

 রাজ্যের লক্ষ্য শিক্ষা হাবঃ মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-জাতীয় শিক্ষা নীতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে বহুমুখী শিক্ষা,
দক্ষতা উন্নয়ন, মূল্যভিত্তিক শিক্ষা এবং বৈশ্বিক প্রস্তুতির প্রসার করা। একটি শিক্ষার জন্য একটি উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করে। একই সাথে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরির জন্য ছাত্রছাত্রীদেরও প্রস্তুত করার লক্ষ্যে গুরুত্ব তুলে ধরে। মহেশখলাস্থিত টেকনো ইন্ডিয়া ক্যাম্পাসে শুক্রবার একের পর এক বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি অব ত্রিপুরা (টিআইইউটি)- এর একাডেমিক ব্লক-ডি, টেগোর লাউঞ্জ এবং একটি রক্তদান শিবিরেরও উদ্বোধন করেন। এছাড়াও ভার্চুয়ালি টিআইইউটি-এর ছাত্র ও ছাত্রী নিবাস, অডিটোরিয়াম, উপাচার্যের বাসভবন এবং আবাসিক স্টাফ কোয়ার্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, এমনকী ওপেন জিম ও ওপেন থিয়েটারেরও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আনুষ্ঠানিক সূচনা পর্বে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে
উচ্চশিক্ষার পরিবেশকে উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে সরকার। মূল লক্ষ্য হচ্ছে ত্রিপুরাকে একটি লিডিং হাবে পরিণত করা। শক্তিশালী পরিকাঠামো তৈরি, ফ্যাকাল্টিদের গুণগতমানের উন্নতি এবং সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষাগত ক্ষেত্রে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করছে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর। রাজ্য সরকারের নীতি হলো শিক্ষার্থীদের গুণগত মানের উন্নতিসাধন করা। এতে তারা কেবল ব্যক্তিগত উন্নতিই নয় বরং রাজ্য ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, টেকনো ইন্ডিয়ার এই ইভেন্ট শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি মাইলফলক নয়। এটি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২,৮০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ত্রিপুরার পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্য যেমন পাঞ্জাব, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীও রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে দ্রুত পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটছে। রাজ্যে একটি বেসরকারী মেডিকেল কলেজ সহ তিনটি মেডিকেল কলেজ, একটি ডেন্টাল কলেজ, একটি বিএসসি নার্সিং কলেজ, একটি ফার্মাকোলজি কলেজ এবং এএনএম ও জিএনএম প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। এছাড়াও ২৮টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ, ছয়টি পলিটেকনিক কলেজ, পাঁচটি পেশাদারী কলেজ এবং একটি ডিগ্রি টেকনিক্যাল কলেজ রয়েছে। রয়েছে টিআইটি, এনআইটি, এনএফএসইউ, এগ্রিকালচারাল কলেজ, ভেটেরিনারি কলেজ, সেন্ট্রাল সংস্কৃত ইউনিভার্সিটি এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। এসব ছাড়াও গত কয়েক বছরে রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে ব্যাপক উন্নতিসাধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে যথেষ্টই সচেষ্ট। উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি শিক্ষা হাব হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর সরকার।
অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী কিশোর বর্মণ বলেন, প্রাচীন ভারতবর্ষে নালন্দা, তক্ষশীলার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি গোটা বিশ্বে জ্ঞান, গবেষণা ও মানবতার আলো ছড়িয়ে দিয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় মূল্যবোধ, উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে ভারতকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে রাজ্য এবং দেশের বর্তমান উচ্চশিক্ষার অগ্রগতির হাল হকিকত নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন। অন্যান্যদের মধ্যে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা তথা টিআইইউটি-এর অধ্যক্ষ সত্যম রায়চৌধুরী, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের সহ চেয়ারপার্সন অধ্যাপিকা মানসী রায়চৌধুরী এবং টিআইইউটি-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. রতন কুমার সাহা, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ ড. অরুণোদয় সাহা সহ আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্য অতিথিদের উপস্থিতিতে টিআইইউটি এবং মহিলা পলিটেকনিক কলেজের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৩৩ কেভি ডুয়াল ফিডিং ইনডোর সাবস্টেশনেরও সূচনা করা হয় এদিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *