September 20, 2025

রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী!

 রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী!

দৈনিক সংবাদ অনলাইন: রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা, নেশা বিরোধী অভিযান, জমি ও নিগো মাফিয়াদের আস্ফালন, তোল্লাবাজি থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার রাজধানীর প্রজ্ঞা ভবনে এক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। বৈঠকে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক থেকে শুরু করে, পুলিশের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক, জেলার এস পি, ডিএসপি, ওসি সমস্ত অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শুরুতে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন বিষয়ে পুলিশের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।

উক্ত বৈঠক শেষে বিস্তারিত তুলে ধরতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড: মানিক সাহা। তিনি বলেন, মূলত রাজ্যকে কিভাবে নেশামুক্ত করে গড়ে তোলা যায় সে বিষয়টির ওপর উক্ত বৈঠকে বিশেষ জোড় দেওয়া হয়েছে। ড্রাগস এর সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রয়োগ করা হবে, কোনো অবস্থাতেই তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। এই বিষয়ে যারা মূল কান্ডারি তাদের কিভাবে নাগালে আনা যায় সে বিষয়েও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে মত বিনিময় হয়েছে।
এছাড়াও তিনি রোহিঙ্গাদের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গারা ত্রিপুরাকে কোরিডোর বানিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করছে প্রতিনিয়ত। কিভাবে তারা রাজ্যে প্রবেশ করতে সফল হচ্ছে কিংবা কী উদ্দেশ্য নিয়ে তারা রাজ্যে আসছে এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার বিষয়টি নিয়েও পুলিশকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়াও গরু পাচারের বিষয়টিও বর্তমানে গুরত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এক্ষেত্রে বিএসএফ এর সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনগুলোর সংযোগ আরও বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

এছাড়াও ট্রাফিক ব্যবস্থাকে কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সে বিষয়েও ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া গোটা রাজ্যে মোট ৮ টি মহিলা পুলিশ স্টেশন রয়েছে, সেগুলোতে কী কী সমস্যা রয়েছে এবং কিভাবে তা সমাধান করা যায় সে সমস্ত বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী উক্ত পর্যালোচনা বৈঠকের মাধ্যমে। পাশাপাশি প্রতিটি থানায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টির দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সাহা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টিতে আলোকপাত করতে গিয়ে আরও বলেন, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের দিক দিয়ে গোটা ভারতবর্ষের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরার স্থান নিচের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। তাছাড়া সাইবার ক্রাইমের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই সাইবার পুলিশ স্টেশনের উদ্বোধন হবে যাতে করে সাইবার ক্রাইম রুখতে আরও সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় শোনা যায় থানায় এফআইআর নেওয়া হচ্ছে না। থানায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ওসি’দের সঙ্গেও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। থানাগুলো পরিষেবা প্রদানের সর্বশেষ ঠিকানা। সেখানে সাধারণ মানুষ যেন সঠিক পরিষেবা পায় সেক্ষেত্রে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও এদিনের পর্যলোচনা বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরাকে খুব ভালোভাবে পরিচালনা করছে রাজ্য পুলিশ। তিনি সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাসে এধরনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ইতিপূর্বে কখনো হয়নি। এবং এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব শুধুমাত্র পুলিশের। সবদিক দিয়ে পুলিশি ব্যবস্থা রাজ্যে অনেক ভালো। এবং আগামীদিনেও তা বজায় থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, কোনো মাফিয়া ত্রিপুরায় থাকতে পারবে না। যারা কাটমানি, সিন্ডিকেট ইত্যাদি কাজে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ত্রিপুরা থেকে মাফিয়া শব্দ যেন উঠে যায় সেই দিশায়ই কাজ করছে রাজ্য পুলিশ। সর্বোপরি পুলিশের ওপর আস্থা রাখার আহবান জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *