October 29, 2025

রঞ্জিতবাবু জেনেভা গিয়েছিলেন,কোন দেশের পাসপোর্টে? জানতে চায় ত্রিপুরাবাসী!!

 রঞ্জিতবাবু জেনেভা গিয়েছিলেন,কোন দেশের পাসপোর্টে? জানতে চায় ত্রিপুরাবাসী!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যের নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স সংক্ষেপে এটিটিএফের প্রাক্তন প্রধান, সিপিএম দলের প্রাক্তন ছাত্র যুব নেতা, যার পিতা ছিলেন সিমনা অঞ্চলের সিপিআইএমের জাঁদরেল নেতা, যার হাতেই তৈরি হয়েছিল এটিটিএফ নামে জঙ্গি সংগঠন, অভিযোগ, যার হাতে লেগে রয়েছে এই রাজ্যের শত শত নিরীহ মানুষ খুনের রক্ত, যার বিরুদ্ধে এই রাজ্যের শত শত নিষ্পাপ শিশু ও নারী-পুরুষকে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে, যার বিরুদ্ধে এই রাজ্যের শত শত নিরীহ মানুষের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যার বিরুদ্ধে এই রাজ্যের হাজার হাজার অসহায় এবং নিরীহ পরিবারকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করার অভিযোগ রয়েছে, সেই রঞ্জিত দেববর্মা এখন বিধায়ক হয়ে রাজ্যবাসীকে গণতন্ত্রের পাঠ দিচ্ছেন! এই প্রাক্তন জঙ্গি নেতা তথা বর্তমান তিপ্রা মথা দলের বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মার একই সাথে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য। এমনকী তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতিও। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার বাংলাদেশি পরিচয়পত্র ভাইরাল হতেই তোলপাড় শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, যে নাকি ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশিদের তাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছেন, তিনি নিজেও বাংলাদেশি এবং তার বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে নতুন করে রাজ্যে অশান্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। সেই রঞ্জিত দেববর্মা অবশ্য দাবি করেছেন যে এগুলো সব জাল।যদিও এ ব্যাপারে দৈনিক সংবাদ কোনো সংবাদ পরিবেশন করেনি।
এর আগে রঞ্জিতবাবুর কাছে রাজ্যবাসী জানতে চায়, আপনি যে ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে জেনেভাতে গিয়েছেন, আপনি ১৯৯৭সালের ২৮ জুলাই জেনেভাতে যে ভারত সরকার এবং ভারতের নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে ভাষণ দিয়েছেন,তখন আপনি কোথাকার অর্থাৎ কোন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন? আপনিতো পাসপোর্ট ছাড়া আর জেনেভাতে যাননি। যাওয়া সম্ভবও নয়। বিগত বিভিন্ন ইতিহাস, নথি ইত্যাদি ঘেঁটে যতটুকু জানা গেছে, আপনি তো স্বাধীন ত্রিপুরা গঠনের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯০ সালেই আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গিয়েছিলেন। হাতে তুলে নিয়েছিলেন বন্দুক। তারপরের ইতিহাস রাজ্যবাসীর সকলেরই জানা। সেই কালো অধ্যায়, সেই কালো ইতিহাস রাজ্যবাসী কোনোদিন ভুলতে পারবে না।
ফলে সেই সময় তো আপনার বিরুদ্ধে ভারত সরকার হুলিয়া জারি করে রেখেছিলো। ইন্ডিয়ান পাসপোর্ট নিয়ে বা ব্যবহার করে আপনার তো জেনেভা যাওয়া সম্ভব নয়। ফলে ইন্ডিয়ান পাসপোর্টের প্রশ্নই আসে না। অভিযোগ, আপনি সেই সময় ভারত সরকার ও ভারতের নিরাপত্তা রক্ষীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে জেনেভা গিয়েছিলেন ঢাকা থেকে। বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ঢাকা থেকে জেনেভা গিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যবাসীর প্রশ্ন, একজন ভারতীয় কি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেতে পারে? একজন বাংলাদেশিই পেতে পারে। এখন রাজ্যবাসীর আরও প্রশ্ন, আপনি সেই পাসপোর্ট পেলেন কীভাবে? অভিযোগ, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের নির্দেশে সেই সময়ের বাংলাদেশের মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স আপনাকে এই পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছিল। আর পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য বাংলাদেশের বার্থ সার্টিফিকেট, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি তৈরি করতে হয়েছিল। ভাইরাল হওয়া বার্থ সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয়পত্র, সেগুলি কিনা? জানতে চায় রাজ্যবাসী। এর জবাব রঞ্জিতবাবুই দিতে পারবেন। আরও অভিযোগ, এই পাসপোর্ট ব্যবহার করেই আপনি পাকিস্তান সহ বেশ কয়েকটি দেশে ঘুরেছেন। অভিযোগ, শোনা গেছে আপনি থাইল্যান্ডেও গিয়েছিলেন উলফা জঙ্গিদের সাথে। এখন আবার অন্য কায়দায় রাজ্যকে অশান্ত করার চেষ্টা শুরু করেছেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে আপনার বিরুদ্ধে।
আপনিতো বন্দুক ও সন্ত্রাসবাদ ছেড়ে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন বলে এমন কোনো তথ্য বা খবর পাওয়া যায়নি। তথ্য বলছে, আপনাকে বাংলাদেশের ঢাকায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিলো।এরপর ২০১৩ সালের তেইশ জানুয়ারী আপনাকে মেঘালয় সীমান্ত দিয়ে পুশব্যাক করা হয়েছে।বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী,বিএসএফের হাতে তুলে দিয়েছিলো আপনাকে। বিএসএফের কাছ থেকে টিএসআর আপনাকে রাজ্যে নিয়ে আসে। তারপর কিছুদিন জেলহাজতে ছিলেন। বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। এরপর হঠাৎই আপনি রাজনীতিতে যুক্ত হলেন। ২০২৩ সালে প্রদ্যোত কিশোরের ঘনিষ্ঠ হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে তিপ্রা মথা দলের প্রার্থী হিসাবে টিকিট পেয়ে গেলেন। এখন আপনি নিজেই প্রদ্যোত কিশোরের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ কীভাবে একজন কুখ্যাত প্রাক্তন জঙ্গি নেতাকে বিধানসভায় দলের প্রার্থী হিসাবে টিকিট দিলেন, এ নিয়েও রাজ্যবাসীর মধ্যে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে জনমনে অনেক আগে থেকেই গুঞ্জন চলছিল। যে ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে বলে বড় ধরনের অভিযোগ উঠেছে, তিনি এখন রাজ্য সরকারের শরিক দলের বিধায়ক হয়ে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে ত্রিপুরাকে অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।দাবি উঠেছে, তার দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে অবিলম্বে তদন্ত করার। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলিও পুনর্তদন্ত করার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *